০৭:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ২৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষঃ
শুক্রবারের মধ্যে জুলাই সংবিধানের চূড়ান্ত রোডম্যাপ প্রকাশের আশা স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট নভেম্বরের মধ্যে চায় জামায়াত হাসিনার বিরুদ্ধে আজ সাক্ষ্য দেবেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এনবিআরের সিদ্ধান্ত: এমপি কোটার ৩০ বিলাসবহুল গাড়ি নিলামে বিক্রির পরিবর্তে হস্তান্তর তীব্র যানজটে আটকা পড়ে সড়ক উপদেষ্টা মোটরসাইকেলে গন্তব্যে পৌঁছেছেন ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনের পাশে আবর্জনার স্তূপ ঢেকে দেওয়া হলো বিশিষ্ট উপদেষ্টার আগমনের জন্য পাঁচ দিন ধরে সাগরে ভাসমান ২৬ জেলেকে উদ্ধার করলো নৌ বাহিনী মেনন-পলক-দস্তগীরসহ চারজনের বিরুদ্ধে নতুন মামলায় গ্রেফতার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তুরস্কের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ: দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও জোরদার করার প্রত্যয়

জাতীয় সংবিধান দিবস আজ

আজ ৪ নভেম্বর, বাংলাদেশ সংবিধান দিবস। ১৯৭২ সালের এই দিনে গণপরিষদে বাংলাদেশের সংবিধান গৃহীত হয় এবং ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭২ (বিজয় দিবস) থেকে কার্যকর হয়। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন।

নতুন খবর হলো স্বাধীনতার ৫০ বছর পর রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেয়েছে সংবিধান দিবস। এবছর থেকে ৪ নভেম্বর ‘জাতীয় সংবিধান দিবস’ হিসেবে ‘ক’ ক্রমিকে পালিত হবে। এদিকে, দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

সংবিধান প্রণয়নের উদ্দেশ্যে ১৯৭২ সালের ১১ এপ্রিল ড. কামাল হোসেনকে সভাপতি করে ৩৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। একই বছরের ১৭ এপ্রিল থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত এই কমিটি বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠক করে। জনগণের মতামত সংগ্রহের জন্য মতামত আহ্বান করা হয়। সংগ্রহীত মতামত থেকে ৯৮টি সুপারিশ গ্রহণ করা হয়। ১৯৭২ সালের ১২ অক্টোবর গণপরিষদের দ্বিতীয় অধিবেশনে খসড়া সংবিধান বিল আকারে উত্থাপন করা হয়।

বাংলাদেশের সংবিধানে ১৫৩টি অনুচ্ছেদ রয়েছে। প্রতিটি অনুচ্ছেদের বক্তব্য স্বয়ংসম্পূর্ণ। কিন্তু সংবিধানে এমন কিছু কিছু অনুচ্ছেদ রয়েছে যেগুলো অন্যান্য অনুচ্ছেদের সঙ্গে মিলিয়ে পড়তে হয়। তবেই সংশ্লিষ্ট অনুচ্ছেদের অর্থটি অধিকতর পরিষ্কার হয়ে ধরা পড়ে। যেমন-সংবিধানের প্রস্তাবনার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে সম্পূর্ণ সংবিধানের।

সংবিধান প্রণয়নের আদর্শিক উদ্দেশ্যগুলোর সংক্ষিপ্ত বর্ণনা থাকে প্রস্তাবনায়। এজন্য বলা হয়, প্রস্তাবনা হলো সংবিধানের সারবস্তু। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের এক মামলায় প্রসঙ্গক্রমে প্রশ্ন উঠেছিল প্রস্তাবনা সংবিধানের অবিচ্ছেদ্য অংশ কি না? সুপ্রিম কোর্টের রায়ে প্রস্তাবনাকে সংবিধানের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। প্রস্তাবনায় মূলত সংবিধান প্রণয়নের উদ্দেশ্য বর্ণনা করা হয় এবং অনুচ্ছেদগুলো সেসব উদ্দেশ্য অর্জনের প্রায়োগিক নির্দেশনার বিস্তারিত বিবরণ থাকে।

১৯৭২ সালে মূল সংবিধান ইংরেজি ভাষায় রচিত হয় এবং একে বাংলায় অনুবাদ করা হয়। তাই এটি বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় বিদ্যমান। তবে সংবিধানে বলা হয়েছে, ইংরেজি ও বাংলার মধ্যে অর্থগত বিরোধ দৃশ্যমান হলে বাংলা রূপ অনুসরণীয় হবে বলে।

বাংলাদেশের সংবিধান কেবল বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইনই নয়; সংবিধানে বাংলাদেশ নামের রাষ্ট্রের মূল চরিত্র বর্ণিত রয়েছে। এতে বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমারেখা উল্লেখ করা আছে। দেশটি হবে প্রজাতান্ত্রিক, গণতন্ত্র হবে এদেশের প্রশাসনিক ভিত্তি, জনগণ হবে সব ক্ষমতার উৎস এবং বিচার বিভাগ হবে স্বাধীন। জনগণ সব ক্ষমতার উৎস হলেও দেশ আইনের মাধ্যমে পরিচালিত হবে। সংবিধানে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতাকে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে নেওয়া হয়েছে।

গণপরিষদে সংবিধানের ওপর বক্তব্য রাখতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘এই সংবিধান শহীদের রক্তে লিখিত, এ সংবিধান সমগ্র জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার মূর্ত প্রতীক হয়ে বেঁচে থাকবে।’

বাংলাদেশের সংবিধান এখন পর্যন্ত সর্বমোট ১৭ বার সংশোধিত হয়েছে।

ট্যাগ :
সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় সংবিধান দিবস আজ

প্রকাশিতঃ ১১:৩০:৪২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৪ নভেম্বর ২০২২

আজ ৪ নভেম্বর, বাংলাদেশ সংবিধান দিবস। ১৯৭২ সালের এই দিনে গণপরিষদে বাংলাদেশের সংবিধান গৃহীত হয় এবং ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭২ (বিজয় দিবস) থেকে কার্যকর হয়। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন।

নতুন খবর হলো স্বাধীনতার ৫০ বছর পর রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেয়েছে সংবিধান দিবস। এবছর থেকে ৪ নভেম্বর ‘জাতীয় সংবিধান দিবস’ হিসেবে ‘ক’ ক্রমিকে পালিত হবে। এদিকে, দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

সংবিধান প্রণয়নের উদ্দেশ্যে ১৯৭২ সালের ১১ এপ্রিল ড. কামাল হোসেনকে সভাপতি করে ৩৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। একই বছরের ১৭ এপ্রিল থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত এই কমিটি বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠক করে। জনগণের মতামত সংগ্রহের জন্য মতামত আহ্বান করা হয়। সংগ্রহীত মতামত থেকে ৯৮টি সুপারিশ গ্রহণ করা হয়। ১৯৭২ সালের ১২ অক্টোবর গণপরিষদের দ্বিতীয় অধিবেশনে খসড়া সংবিধান বিল আকারে উত্থাপন করা হয়।

বাংলাদেশের সংবিধানে ১৫৩টি অনুচ্ছেদ রয়েছে। প্রতিটি অনুচ্ছেদের বক্তব্য স্বয়ংসম্পূর্ণ। কিন্তু সংবিধানে এমন কিছু কিছু অনুচ্ছেদ রয়েছে যেগুলো অন্যান্য অনুচ্ছেদের সঙ্গে মিলিয়ে পড়তে হয়। তবেই সংশ্লিষ্ট অনুচ্ছেদের অর্থটি অধিকতর পরিষ্কার হয়ে ধরা পড়ে। যেমন-সংবিধানের প্রস্তাবনার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে সম্পূর্ণ সংবিধানের।

সংবিধান প্রণয়নের আদর্শিক উদ্দেশ্যগুলোর সংক্ষিপ্ত বর্ণনা থাকে প্রস্তাবনায়। এজন্য বলা হয়, প্রস্তাবনা হলো সংবিধানের সারবস্তু। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের এক মামলায় প্রসঙ্গক্রমে প্রশ্ন উঠেছিল প্রস্তাবনা সংবিধানের অবিচ্ছেদ্য অংশ কি না? সুপ্রিম কোর্টের রায়ে প্রস্তাবনাকে সংবিধানের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। প্রস্তাবনায় মূলত সংবিধান প্রণয়নের উদ্দেশ্য বর্ণনা করা হয় এবং অনুচ্ছেদগুলো সেসব উদ্দেশ্য অর্জনের প্রায়োগিক নির্দেশনার বিস্তারিত বিবরণ থাকে।

১৯৭২ সালে মূল সংবিধান ইংরেজি ভাষায় রচিত হয় এবং একে বাংলায় অনুবাদ করা হয়। তাই এটি বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় বিদ্যমান। তবে সংবিধানে বলা হয়েছে, ইংরেজি ও বাংলার মধ্যে অর্থগত বিরোধ দৃশ্যমান হলে বাংলা রূপ অনুসরণীয় হবে বলে।

বাংলাদেশের সংবিধান কেবল বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইনই নয়; সংবিধানে বাংলাদেশ নামের রাষ্ট্রের মূল চরিত্র বর্ণিত রয়েছে। এতে বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমারেখা উল্লেখ করা আছে। দেশটি হবে প্রজাতান্ত্রিক, গণতন্ত্র হবে এদেশের প্রশাসনিক ভিত্তি, জনগণ হবে সব ক্ষমতার উৎস এবং বিচার বিভাগ হবে স্বাধীন। জনগণ সব ক্ষমতার উৎস হলেও দেশ আইনের মাধ্যমে পরিচালিত হবে। সংবিধানে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতাকে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে নেওয়া হয়েছে।

গণপরিষদে সংবিধানের ওপর বক্তব্য রাখতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘এই সংবিধান শহীদের রক্তে লিখিত, এ সংবিধান সমগ্র জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার মূর্ত প্রতীক হয়ে বেঁচে থাকবে।’

বাংলাদেশের সংবিধান এখন পর্যন্ত সর্বমোট ১৭ বার সংশোধিত হয়েছে।