গত এক দশকের বেশি সময়ে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা, যানজট এবং দূষণের কারণে দেশের অর্থনীতি, স্বাস্থ্য ও সামাজিক কাঠামো মারাত্মক ঝুঁকির মুখে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী জানান, গত ১১ বছরে দেশে সাধারণ সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৬২,৬১৯টি, যেখানে নিহত হয়েছে ৮৬,৬৯০ জন। এই দুর্ঘটনাগুলোর কারণে আহত হয়েছে প্রায় ১৫৩,২৫৭ জন মানুষ। শুধু ঢাকায় প্রতিদিন যানজটের কারণে নষ্ট হয় ৩২ লাখ কর্মঘণ্টা, যার অর্থনৈতিক মূল্যায়নে বার্ষিক ক্ষতি প্রায় ৯৮ হাজার কোটি টাকা। জ্বালানি অপচয় হয় ছয় লাখ কোটি টাকা, আর এই যানজটের সামাজিক প্রভাব অত্যন্ত গুরুতর, যার কারণে সংসার ভাঙার ঝুঁকি ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গেছে।
সমিতির সভাপতি শরিফ রফিকুজ্জামান বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে টেকসই বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া না হওয়ায় এই পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে উঠছে। দেশের অধিকাংশ চালকের লাইসেন্স নেই বলে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকগুলো সোজা করে সড়ক সংস্কার করা উচিত, যাতে দুর্ঘটনা কমে। তিনি আরও জানান, বাসভাড়ার সাথে যাত্রীদের কাছ থেকে ইন্স্যুরেন্সের জন্য টাকা নেওয়া হয়, কিন্তু দুর্ঘটনায় আহত যাত্রীরা কখনোই এই সুবিধা পান না। এই বিষয়ে সাধারণ যাত্রীদের সচেতনতার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
গণঅধিকার দলের মুখপাত্র ফারুক খান বলেন, তারা চান, যাত্রী কল্যাণ সমিতি আরও শক্তিশালী হয়ে সকল সিদ্ধান্তে অংশগ্রহণ করবে, যাতে সাধারণ মানুষের দাবি দ্রুত বাস্তবায়িত হয়। তিনি বলেন, এই সংগঠন সাধারণ মানুষের অধিকার সুরক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে এবং কোনো দল বা সরকারের বিরুদ্ধে নয়, বরং জনগণের পক্ষে দাঁড়াচ্ছে। এছাড়া আলোচনা সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি এবং সামাজিক আন্দোলনের নেতারা বক্তব্য দেন, যারা সবসময় এই সমস্যা সমাধানে একযোগে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।