০১:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ২৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষঃ
শুক্রবারের মধ্যে জুলাই সংবিধানের চূড়ান্ত রোডম্যাপ প্রকাশের আশা স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট নভেম্বরের মধ্যে চায় জামায়াত হাসিনার বিরুদ্ধে আজ সাক্ষ্য দেবেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এনবিআরের সিদ্ধান্ত: এমপি কোটার ৩০ বিলাসবহুল গাড়ি নিলামে বিক্রির পরিবর্তে হস্তান্তর তীব্র যানজটে আটকা পড়ে সড়ক উপদেষ্টা মোটরসাইকেলে গন্তব্যে পৌঁছেছেন ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনের পাশে আবর্জনার স্তূপ ঢেকে দেওয়া হলো বিশিষ্ট উপদেষ্টার আগমনের জন্য পাঁচ দিন ধরে সাগরে ভাসমান ২৬ জেলেকে উদ্ধার করলো নৌ বাহিনী মেনন-পলক-দস্তগীরসহ চারজনের বিরুদ্ধে নতুন মামলায় গ্রেফতার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তুরস্কের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ: দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও জোরদার করার প্রত্যয়

মৌলভীবাজারের পর্যটন শিল্প এখনও ঝুঁকিতে, সম্ভাবনা বিনোদনের অভাবে ক্ষুধ‍িত

পর্যটনের অপার সম্ভাবনাময় প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য শোভিত মৌলভীবাজার এখনো পর্যটন শিল্পের বিকাশে অনেক পিছিয়ে। এই জেলাটি একদিকে পাহাড়, অন্যদিকে চা বাগান, ঝরনা ও বিস্তীর্ণ হাওর দ্বারা ঘেরা। এছাড়া এশিয়ার অন্যতম রেইনফোरेস্ট লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান এখানকার প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য হিসেবে পরিচিত। একসময় সরকার এই জেলার নাম দিয়েছিল পর্যটন জেলা, ২০০৮ সালে যখন এই ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে শতাব্দী পার হলেও এখনো পর্যটনের দিক থেকে মৌলভীবাজারের যথাযথ উন্নয়ন হয়নি। রীতিমতো ‘চায়ের দেশ’ ও ‘জলকন্যা’ হিসাবে পরিচিত এই এলাকার পর্যটনশিল্প ধীরে ধীরে বিকশিত হচ্ছে।

পর্যটন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখানকার পর্যটন কেন্দ্রগুলোকে নতুন করে সাজানো, সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করা, আধুনিক অবকাঠামো নির্মাণ, বিমানচালনা ব্যবস্থার পরিকল্পনা, পর্যটকদের নিরাপত্তা ও উন্নত সেবা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। পাশাপাশি খরচ কমিয়ে সব মানুষের জন্য সহজে যাতায়াতের ব্যবস্থা করতে হবে। বিদেশি পর্যটকদের জন্য এখানে বিপুল ছাড়সহ আকর্ষণীয় শিল্পের প্রচার চালাতে হবে। এর মাধ্যমে স্থানীয় পর্যটন শিল্পের উন্নতি হবে, কর্মসংস্থান বাড়বে, পাশাপাশি অর্থনীতি চাঙ্গা হবে।

বিশ্লেষকদের মতে, নৈসর্গিক সৌন্দর্য্য জয় করে ঘেরা সবুজ চা-বাগান, হাওর, নদী, পাহাড় ও সমতলের ভিন্নধর্মী জনপদ ভ্রমণপ্রেমীদের বিশেষভাবে আকৃষ্ট করে। কিন্তু এই সম্ভাবনাগুলো রূপায়নে সরকারের উদ্যোগের অভাব, স্থানীয় উদ্যোক্তাদের একযোগে কাজ না করা, পর্যাপ্ত অবকাঠামোর অভাব, বিনোদনসহ ভ্রমণ গাইডের অপ্রতুলতা এই শিল্পের বিকাশে বাধা সৃষ্টি করছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখানে প্রতিটি মৌসুমে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকলেও, প্রত্যাশিত পর্যটক সংখ্যা ও ব্যবসার পরিমাণ তেমন দেখা যাচ্ছে না। জেলায় দুই শতাধিক পর্যটন কেন্দ্র থাকলেও উন্নয়নের নামে এখনো তেমন কিছু চোখে পড়ছে না, বিশেষ করে পর্যটকদের জন্য সুন্দর ও পরিকল্পিত পার্ক, গাইড সার্ভিস, নিরাপত্তা এবং নির্ভরযোগ্য আবাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলায় ব্যর্থতা দেখা দিয়েছে।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য ও পর্যটন কেন্দ্রের মধ্যে রয়েছে সংরক্ষিত বনাঞ্চল, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত, হামহাম ছড়া জলপ্রপাত, বাইক্কা বিল, হাকালুকি হাওর, মাধবপুর লেক ও ইকোপার্ক। এসব স্থান পূর্ণাঙ্গ পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে উন্নত হলে বড় আকারে দর্শনার্থী আসবে বলছেন বিকাশের প্রত্যাশী উদ্যোক্তারা। তবে নান্দনিকতা ও বিনোদনের অভাবে এসব সম্ভাবনা এখনও অপার রূপে রয়ে গেছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, সরকারি সহায়তা ও উদ্যোগের অভাবে পর্যটকদের জন্য যাতায়ত ও বিনোদনের সকল সুবিধা পুরোপুরি তৈরি হয়নি। শ্রীমঙ্গল, কমলগঞ্জের মতো উপজেলাগুলোর রিসোর্ট ও পর্যটন স্পটের ক্ষেত্রে যানবাহনের অভাব বড় বাধা। যে কারণে পর্যটকরাও কিছুটা মসৃণ ভ্রমণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। যদি সিলেট রেলপথে পর্যটনবাহী ট্রেন চালু হয়, তাহলে এই জেলা আরও পর্যটকসমৃদ্ধ হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ঈদ, পূজা, এবং স্কুলের ছুটির মৌসুমে হাজারো পর্যটকের সমাগম হয় এই জেলায়।

পর্যটন সেবা সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিরা বলছেন, এখানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য যথেষ্ট, but বিনোদন কেন্দ্রের আধুনিকতা ও নতুনত্ব দরকার। পর্যটকদের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা তৈরি করতে পারলে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব আসবে বলে আশ্বাস দেন তারা।

জেলার পর্যটন বিকাশে গুরুত্ব देते ہوئے কর্মকর্তা ও প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নানা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। জেলা প্রশাসক ইসরাইল হোসেনের মতে, সৌন্দর্য্য ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে কাজে লাগিয়ে পর্যটন উন্নত করতে নতুন পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য সরকারকে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। সব মিলিয়ে, মৌলভীবাজারের পর্যটন রুপান্তর ও বিকাশের জন্য এখনি প্রয়োজন পর্যাপ্ত পরিকল্পনা, আধুনিক অবকাঠামো এবং সবার জন্য সুবিধা নিশ্চিত করা।

ট্যাগ :
সর্বাধিক পঠিত

মৌলভীবাজারের পর্যটন শিল্প এখনও ঝুঁকিতে, সম্ভাবনা বিনোদনের অভাবে ক্ষুধ‍িত

প্রকাশিতঃ ১০:১০:৫৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

পর্যটনের অপার সম্ভাবনাময় প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য শোভিত মৌলভীবাজার এখনো পর্যটন শিল্পের বিকাশে অনেক পিছিয়ে। এই জেলাটি একদিকে পাহাড়, অন্যদিকে চা বাগান, ঝরনা ও বিস্তীর্ণ হাওর দ্বারা ঘেরা। এছাড়া এশিয়ার অন্যতম রেইনফোरेস্ট লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান এখানকার প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য হিসেবে পরিচিত। একসময় সরকার এই জেলার নাম দিয়েছিল পর্যটন জেলা, ২০০৮ সালে যখন এই ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে শতাব্দী পার হলেও এখনো পর্যটনের দিক থেকে মৌলভীবাজারের যথাযথ উন্নয়ন হয়নি। রীতিমতো ‘চায়ের দেশ’ ও ‘জলকন্যা’ হিসাবে পরিচিত এই এলাকার পর্যটনশিল্প ধীরে ধীরে বিকশিত হচ্ছে।

পর্যটন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখানকার পর্যটন কেন্দ্রগুলোকে নতুন করে সাজানো, সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করা, আধুনিক অবকাঠামো নির্মাণ, বিমানচালনা ব্যবস্থার পরিকল্পনা, পর্যটকদের নিরাপত্তা ও উন্নত সেবা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। পাশাপাশি খরচ কমিয়ে সব মানুষের জন্য সহজে যাতায়াতের ব্যবস্থা করতে হবে। বিদেশি পর্যটকদের জন্য এখানে বিপুল ছাড়সহ আকর্ষণীয় শিল্পের প্রচার চালাতে হবে। এর মাধ্যমে স্থানীয় পর্যটন শিল্পের উন্নতি হবে, কর্মসংস্থান বাড়বে, পাশাপাশি অর্থনীতি চাঙ্গা হবে।

বিশ্লেষকদের মতে, নৈসর্গিক সৌন্দর্য্য জয় করে ঘেরা সবুজ চা-বাগান, হাওর, নদী, পাহাড় ও সমতলের ভিন্নধর্মী জনপদ ভ্রমণপ্রেমীদের বিশেষভাবে আকৃষ্ট করে। কিন্তু এই সম্ভাবনাগুলো রূপায়নে সরকারের উদ্যোগের অভাব, স্থানীয় উদ্যোক্তাদের একযোগে কাজ না করা, পর্যাপ্ত অবকাঠামোর অভাব, বিনোদনসহ ভ্রমণ গাইডের অপ্রতুলতা এই শিল্পের বিকাশে বাধা সৃষ্টি করছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখানে প্রতিটি মৌসুমে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকলেও, প্রত্যাশিত পর্যটক সংখ্যা ও ব্যবসার পরিমাণ তেমন দেখা যাচ্ছে না। জেলায় দুই শতাধিক পর্যটন কেন্দ্র থাকলেও উন্নয়নের নামে এখনো তেমন কিছু চোখে পড়ছে না, বিশেষ করে পর্যটকদের জন্য সুন্দর ও পরিকল্পিত পার্ক, গাইড সার্ভিস, নিরাপত্তা এবং নির্ভরযোগ্য আবাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলায় ব্যর্থতা দেখা দিয়েছে।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য ও পর্যটন কেন্দ্রের মধ্যে রয়েছে সংরক্ষিত বনাঞ্চল, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত, হামহাম ছড়া জলপ্রপাত, বাইক্কা বিল, হাকালুকি হাওর, মাধবপুর লেক ও ইকোপার্ক। এসব স্থান পূর্ণাঙ্গ পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে উন্নত হলে বড় আকারে দর্শনার্থী আসবে বলছেন বিকাশের প্রত্যাশী উদ্যোক্তারা। তবে নান্দনিকতা ও বিনোদনের অভাবে এসব সম্ভাবনা এখনও অপার রূপে রয়ে গেছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, সরকারি সহায়তা ও উদ্যোগের অভাবে পর্যটকদের জন্য যাতায়ত ও বিনোদনের সকল সুবিধা পুরোপুরি তৈরি হয়নি। শ্রীমঙ্গল, কমলগঞ্জের মতো উপজেলাগুলোর রিসোর্ট ও পর্যটন স্পটের ক্ষেত্রে যানবাহনের অভাব বড় বাধা। যে কারণে পর্যটকরাও কিছুটা মসৃণ ভ্রমণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। যদি সিলেট রেলপথে পর্যটনবাহী ট্রেন চালু হয়, তাহলে এই জেলা আরও পর্যটকসমৃদ্ধ হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ঈদ, পূজা, এবং স্কুলের ছুটির মৌসুমে হাজারো পর্যটকের সমাগম হয় এই জেলায়।

পর্যটন সেবা সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিরা বলছেন, এখানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য যথেষ্ট, but বিনোদন কেন্দ্রের আধুনিকতা ও নতুনত্ব দরকার। পর্যটকদের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা তৈরি করতে পারলে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব আসবে বলে আশ্বাস দেন তারা।

জেলার পর্যটন বিকাশে গুরুত্ব देते ہوئے কর্মকর্তা ও প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নানা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। জেলা প্রশাসক ইসরাইল হোসেনের মতে, সৌন্দর্য্য ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে কাজে লাগিয়ে পর্যটন উন্নত করতে নতুন পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য সরকারকে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। সব মিলিয়ে, মৌলভীবাজারের পর্যটন রুপান্তর ও বিকাশের জন্য এখনি প্রয়োজন পর্যাপ্ত পরিকল্পনা, আধুনিক অবকাঠামো এবং সবার জন্য সুবিধা নিশ্চিত করা।