০৯:৫০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ২৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষঃ
মেনন-পলক-দস্তগীরসহ চারজনের বিরুদ্ধে নতুন মামলায় গ্রেফতার তীব্র যানজটে আটকা পড়ে সড়ক উপদেষ্টা মোটরসাইকেলে গন্তব্যে পৌঁছেছেন ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনের পাশে আবর্জনার স্তূপ ঢেকে দেওয়া হলো বিশিষ্ট উপদেষ্টার আগমনের জন্য পাঁচ দিন ধরে সাগরে ভাসমান ২৬ জেলেকে উদ্ধার করলো নৌ বাহিনী প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তুরস্কের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ: দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও জোরদার করার প্রত্যয় আওয়ামী লীগের বিচারকাজের জন্য আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু জয়পুরহাটের কানাইপুকুর গ্রামে বিরল শামুকখোল পাখির অভয়ারণ্য শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়ার প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন সিইসির মনে অবস্থান: এবারের নির্বাচন জীবনশেষের সুযোগ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিদায় সাক্ষাৎ জাতিসংঘের অভিবাসী সমন্বয়কের

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রুহি আখতার গাজায় মানবিক ত্রাণ কার্যক্রমে যুক্ত

বিশ্বব্যাপী শরণার্থী ও দুঃস্থ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে মানবিক সহায়তার কাজ করে চলেছেন বাংলাদেশের বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ অধিকারকর্মী রুহি লরেন আখতার। তার সংস্থা ‘রিফিউজি বিরিয়ানি অ্যান্ড ব্যানানাস’ (আরবিবি) মূলত বাস্তুচ্যুত এবং যুদ্ধপীড়িত মানুষের জন্য খাদ্য, ত্রাণ সামগ্রী এবং অন্যান্য সহায়তা প্রদান করে আসছে। সম্প্রতি তিনি গাজার উদ্দেশ্যে যাত্রা করা মানবিক ত্রাণবহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’র একজন সহযাত্রী হিসাবে যোগ দিয়েছেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন পোস্টে দেখা গেছে, রুহি আখতার এই ফ্লোটিলায় যোগ দিয়ে তিনি ভিডিও বার্তা প্রদান করেছেন এবং গাজার বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে ভাষন দিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেন, তাঁদের মূল লক্ষ্য হলো নিরাপত্তার পরিস্থিতি উপেক্ষা করে মানবতার বার্তা পৌঁছে দেয়া। এখনো বিশ্বের নজর এই নৌবহরের দিকে নিবদ্ধ। গাজার জন্য ত্রাণবাহী ছয়টি জাহাজের মধ্যে অন্তত ২৪টি এখনো যাত্রা চালিয়ে যাচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ফ্লোটিলার লাইভ ট্র্যাকার থেকে জানা গেছে, এসব জাহাজ স্বল্প জেবাহাজের হস্তক্ষেপ ছাড়াই নিরাপদে এগিয়ে যাচ্ছে।

বিশেষ করে ‘মিকেনো’ নামের একটি জাহাজ গাজার আঞ্চলিক জলসীমায় প্রবেশ করায় বিস্তারিত জানানো হয়েছে। রুহি ও তার সহযাত্রীরা ভয়কে উপেক্ষা করে মানবতার অঙ্গীকার এবং অ্যাকশন চালিয়ে যাচ্ছেন।

রুহির পিতা কাপ্তান মিয়া, যিনি প্রবাসী বাংলাদেশি। রুহি যুক্তরাজ্যের মরপেথে জন্মগ্রহণ করেছেন এবং বর্তমানে এলসউইক ওয়ার্ডে বসবাস করেন। তিনি একজন মানবিক সহায়তা কর্মী ও অধিকারকর্মী। গাজার মানুষের জন্য জরুরি সহায়তা পৌঁছে দিতেই তিনি সংগঠনের সাথে যুক্ত হয়েছেন এবং চলমান ইসরায়েলি অবরোধের প্রতিবাদে সরাসরি অংশ নিয়েছেন।

১৮ সেপ্টেম্বর তিনি তিউনিসিয়ার গামার্থ বন্দরে যাত্রা শুরু করেন। তার নৌকায় মোট ১২ জন যাত্রী রয়েছেন। তারা তিউনেসিয়া, স্পেন, গ্রিস ও ইতালির মতো বিভিন্ন দেশ থেকে আগত মোট ৪০টির বেশি নৌযানের সাথে যুক্ত হয়েছেন। এর আগে, রুহি তার অসাধারণ মানবিক কাজের জন্য ২০২৪ সালে যুক্তরাজ্যের নর্থ ইস্ট বাংলাদেশি অ্যাওয়ার্ডে ‘বাংলাদেশি পার্সন অব দ্য ইয়ার’ খেতাব অর্জন করেন।

রুহি বলেন, ‘গাজার উদ্দেশ্যে আমি এই কার্যক্রমে অংশ নিয়েছি, কারণ অন্যায়ের মুখে নীরব থাকা কোনভাবেই সমাধান নয়। ফিলিস্তিনিরা দীর্ঘ সময় ধরে খাদ্য, পানি, জমি ও নিরাপত্তাসহ মৌলিক অধিকারগুলো থেকে বঞ্চিত। একজন মানবিক কর্মী হিসেবে আমি দেখেছি, এক টুকরো রুটি বা কিছু বিশুদ্ধ পানি কিভাবে মানুষের জীবনে আলো দর্শাতে পারে। এই নৌবহর হলো বিভিন্ন দেশের সংহতির প্রতীক যা বিশ্বকে দেখায় যে, আমরা গাজার মানুষের পাশে থাকব যতক্ষণ না তারা মুক্ত হয়ে যায়। কারণ আমাদের কেউই সম্পূর্ণ মুক্ত নই, যতক্ষণ না ফিলিস্তিন মুক্ত হয়।’

প্রথমে, রুহি ও তার সংস্থা গ্রিস, গাজা ও অন্যান্য অঞ্চলে বাস্তুচ্যুত ও যুদ্ধপ্রবণ মানুষের জন্য জরুরি খাদ্য ও সহায়তা পাঠিয়ে থাকে। সংগঠনের বেশিরভাগ সদস্যই নিজেও উদ্বাস্তু অথবা সংঘাতপূর্ণ এলাকার বাসিন্দা হিসেবে কাজ করছেন। রুহি ন্যায়বিচারের পক্ষে দৃঢ় কণ্ঠস্বর। নৌবহরে যোগ দেওয়ার আগে তিনি আর তার সহযাত্রীরা ত্রাণের প্যাকেজ প্রস্তুত করেন নিরলস পরিশ্রমে।

অন্যদিকে, ফ্লোটিলার মুখপাত্র সাইফ আবুকেশেক ইনস্টাগ্রামে এক পোস্টে জানিয়েছেন, দালাল ও আটক নৌযানগুলোতে অন্তত ২০১ জন যাত্রী ছিলেন। এর মধ্যে স্পেন থেকে ৩০, ইতালি থেকে ২২, তুরস্ক থেকে ২১ ও মালয়েশিয়া থেকে ১২ জন। গাজা থেকে ১২৯ কিলোমিটার দূরে ভূমধ্যসাগরে অবস্থানের সময় ইসরায়েলি বাহিনী বেশকিছু নৌযান বাধা দেয়। অনুসারে, মোট ১৩টি নৌজাহাজ আটকানো হয়েছে।

গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা হল মানবিক ত্রাণ পৌঁছে দেয়ার একটি আন্তর্জাতিক উদ্যোগ, যেখানে প্রায় ৪৪টি দেশের ৫০০ সদস্য রয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছেন মার্কিন, স্পেন, আয়ারল্যান্ড, ফ্রান্স, বেলজিয়াম নাগরিকসহ ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধি, আইনজীবী, চিকিৎসক, সাংবাদিক এবং মানবাধিকারকর্মীরা।

ট্যাগ :
সর্বাধিক পঠিত

দৌলতপুরে মা ইলিশ রক্ষায় অভিযান, অবৈধ জাল জব্দ ও জেলেকে জরিমানা

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রুহি আখতার গাজায় মানবিক ত্রাণ কার্যক্রমে যুক্ত

প্রকাশিতঃ ১০:৪৬:৫০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩ অক্টোবর ২০২৫

বিশ্বব্যাপী শরণার্থী ও দুঃস্থ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে মানবিক সহায়তার কাজ করে চলেছেন বাংলাদেশের বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ অধিকারকর্মী রুহি লরেন আখতার। তার সংস্থা ‘রিফিউজি বিরিয়ানি অ্যান্ড ব্যানানাস’ (আরবিবি) মূলত বাস্তুচ্যুত এবং যুদ্ধপীড়িত মানুষের জন্য খাদ্য, ত্রাণ সামগ্রী এবং অন্যান্য সহায়তা প্রদান করে আসছে। সম্প্রতি তিনি গাজার উদ্দেশ্যে যাত্রা করা মানবিক ত্রাণবহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’র একজন সহযাত্রী হিসাবে যোগ দিয়েছেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন পোস্টে দেখা গেছে, রুহি আখতার এই ফ্লোটিলায় যোগ দিয়ে তিনি ভিডিও বার্তা প্রদান করেছেন এবং গাজার বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে ভাষন দিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেন, তাঁদের মূল লক্ষ্য হলো নিরাপত্তার পরিস্থিতি উপেক্ষা করে মানবতার বার্তা পৌঁছে দেয়া। এখনো বিশ্বের নজর এই নৌবহরের দিকে নিবদ্ধ। গাজার জন্য ত্রাণবাহী ছয়টি জাহাজের মধ্যে অন্তত ২৪টি এখনো যাত্রা চালিয়ে যাচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ফ্লোটিলার লাইভ ট্র্যাকার থেকে জানা গেছে, এসব জাহাজ স্বল্প জেবাহাজের হস্তক্ষেপ ছাড়াই নিরাপদে এগিয়ে যাচ্ছে।

বিশেষ করে ‘মিকেনো’ নামের একটি জাহাজ গাজার আঞ্চলিক জলসীমায় প্রবেশ করায় বিস্তারিত জানানো হয়েছে। রুহি ও তার সহযাত্রীরা ভয়কে উপেক্ষা করে মানবতার অঙ্গীকার এবং অ্যাকশন চালিয়ে যাচ্ছেন।

রুহির পিতা কাপ্তান মিয়া, যিনি প্রবাসী বাংলাদেশি। রুহি যুক্তরাজ্যের মরপেথে জন্মগ্রহণ করেছেন এবং বর্তমানে এলসউইক ওয়ার্ডে বসবাস করেন। তিনি একজন মানবিক সহায়তা কর্মী ও অধিকারকর্মী। গাজার মানুষের জন্য জরুরি সহায়তা পৌঁছে দিতেই তিনি সংগঠনের সাথে যুক্ত হয়েছেন এবং চলমান ইসরায়েলি অবরোধের প্রতিবাদে সরাসরি অংশ নিয়েছেন।

১৮ সেপ্টেম্বর তিনি তিউনিসিয়ার গামার্থ বন্দরে যাত্রা শুরু করেন। তার নৌকায় মোট ১২ জন যাত্রী রয়েছেন। তারা তিউনেসিয়া, স্পেন, গ্রিস ও ইতালির মতো বিভিন্ন দেশ থেকে আগত মোট ৪০টির বেশি নৌযানের সাথে যুক্ত হয়েছেন। এর আগে, রুহি তার অসাধারণ মানবিক কাজের জন্য ২০২৪ সালে যুক্তরাজ্যের নর্থ ইস্ট বাংলাদেশি অ্যাওয়ার্ডে ‘বাংলাদেশি পার্সন অব দ্য ইয়ার’ খেতাব অর্জন করেন।

রুহি বলেন, ‘গাজার উদ্দেশ্যে আমি এই কার্যক্রমে অংশ নিয়েছি, কারণ অন্যায়ের মুখে নীরব থাকা কোনভাবেই সমাধান নয়। ফিলিস্তিনিরা দীর্ঘ সময় ধরে খাদ্য, পানি, জমি ও নিরাপত্তাসহ মৌলিক অধিকারগুলো থেকে বঞ্চিত। একজন মানবিক কর্মী হিসেবে আমি দেখেছি, এক টুকরো রুটি বা কিছু বিশুদ্ধ পানি কিভাবে মানুষের জীবনে আলো দর্শাতে পারে। এই নৌবহর হলো বিভিন্ন দেশের সংহতির প্রতীক যা বিশ্বকে দেখায় যে, আমরা গাজার মানুষের পাশে থাকব যতক্ষণ না তারা মুক্ত হয়ে যায়। কারণ আমাদের কেউই সম্পূর্ণ মুক্ত নই, যতক্ষণ না ফিলিস্তিন মুক্ত হয়।’

প্রথমে, রুহি ও তার সংস্থা গ্রিস, গাজা ও অন্যান্য অঞ্চলে বাস্তুচ্যুত ও যুদ্ধপ্রবণ মানুষের জন্য জরুরি খাদ্য ও সহায়তা পাঠিয়ে থাকে। সংগঠনের বেশিরভাগ সদস্যই নিজেও উদ্বাস্তু অথবা সংঘাতপূর্ণ এলাকার বাসিন্দা হিসেবে কাজ করছেন। রুহি ন্যায়বিচারের পক্ষে দৃঢ় কণ্ঠস্বর। নৌবহরে যোগ দেওয়ার আগে তিনি আর তার সহযাত্রীরা ত্রাণের প্যাকেজ প্রস্তুত করেন নিরলস পরিশ্রমে।

অন্যদিকে, ফ্লোটিলার মুখপাত্র সাইফ আবুকেশেক ইনস্টাগ্রামে এক পোস্টে জানিয়েছেন, দালাল ও আটক নৌযানগুলোতে অন্তত ২০১ জন যাত্রী ছিলেন। এর মধ্যে স্পেন থেকে ৩০, ইতালি থেকে ২২, তুরস্ক থেকে ২১ ও মালয়েশিয়া থেকে ১২ জন। গাজা থেকে ১২৯ কিলোমিটার দূরে ভূমধ্যসাগরে অবস্থানের সময় ইসরায়েলি বাহিনী বেশকিছু নৌযান বাধা দেয়। অনুসারে, মোট ১৩টি নৌজাহাজ আটকানো হয়েছে।

গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা হল মানবিক ত্রাণ পৌঁছে দেয়ার একটি আন্তর্জাতিক উদ্যোগ, যেখানে প্রায় ৪৪টি দেশের ৫০০ সদস্য রয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছেন মার্কিন, স্পেন, আয়ারল্যান্ড, ফ্রান্স, বেলজিয়াম নাগরিকসহ ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধি, আইনজীবী, চিকিৎসক, সাংবাদিক এবং মানবাধিকারকর্মীরা।