আগামী ১৫ অক্টোবর বাংলাদেশ সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠিত হবে জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর সম্পন্ন করার আনুষ্ঠানিকতা। এদিন দুপুর ৩টায় এই স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হবে, যেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এতে অংশগ্রহণ করবেন ৩০টি রাজনৈতিক দল ও জোটের প্রতিনিধিরা। এ সিদ্ধান্তটি গতকাল বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে নেওয়া হয়, যা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বৈঠকে বিশ্বস্ত বিশেষজ্ঞ, রাজনৈতিক দল ও জোটের নেতৃবৃন্দের মতামত বিশ্লেষণ করে উল্লেখ করা হয়, খুব শিগগিরই রাজনৈতিক দলগুলোর অভিমত ও পরামর্শের ভিত্তিতে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য চূড়ান্ত সুপারিশ ও পরিকল্পনা প্রস্তুত করবেন কমিশন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান ও ড. মো. আইয়ুব মিয়া। এছাড়া, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারও বৈঠকে অংশ নেন।
রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের লক্ষ্যে গঠিত ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে দুই ধাপে সংলাপ করে তার ভিত্তিতে জুলাই জাতীয় সনদ প্রস্তুত করে। যদিও সনদ বাস্তবায়নের নানা দিক নিয়ে এখনো মতান্তর থাকলেও, বিশেষজ্ঞ ও রাজনৈতিক দলের অভিমত বিশ্লেষণের মাধ্যমে চূড়ান্ত পরিকল্পনা প্রকাশের পথে হেঁটে চলছে এই প্রক্রিয়া।
প্রথমে, বৃহস্পতিবার কমিশন একটি প্যাকেজ সুপারিশ করবে যা সরকারকে দেয়া হবে। তবে প্রায় সময় আলোচনা হয়, এ অনুষ্ঠানের মূল লক্ষ্য এখনো জুলাই সনদে স্বাক্ষর সম্পন্ন করাই। এরই মধ্যে নির্ধারিত তারিখে (১৫ অক্টোবর) সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় এই সাক্ষর অনুষ্ঠান হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বেশ কিছু দল যেমন বিএনপি, জামায়াত, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) নিয়ে যায়, তারা ইতিমধ্যে প্রতিনিধিদের নাম পাঠিয়েছে বলে জানা গেছে।
বৈঠকের শেষ পর্যায়ে, সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিশেষজ্ঞ ও রাজনৈতিক দলের মতামত গ্রহণের মাধ্যমে আমরা দ্রুত একটি নির্ভুল প্রতিবেদন এবং পরিকল্পনা প্রকাশ করব। এছাড়া, আগামী দু-তিন দিনের মধ্যে সরকারকে পরামর্শ দিতে প্রস্তুত হবেন।’ তিনি আরও জানান, জুলাই সনদটি প্রণয়নের জন্য একটি বিস্তারিত প্রতিবেদনও তৈরি হবে, যা সম্ভবত ১৮-১৯ অক্টোবরের মধ্যে প্রকাশিত হবে।
বিশেষজ্ঞরা সম্প্রতি এক মত দেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য গণভোটের প্রয়োজন রয়েছে। তারা পরামর্শ দিয়েছেন, একটি আদেশ জারি করে এই ভোট আয়োজন সম্ভব হবে। ভোটে দুটি অংশ থাকবে—একটি অংশে বৃহত্তম ঐকমত্যের বিষয়গুলো এবং অন্য বিভাগে বিভিন্ন মতামত বা নোট বলে রেকর্ড রাখা বিষয়ের বিবরণ। যদি এই ভোট সুপারিশ অনুযায়ী সম্পন্ন হয়, তাহলে সংবিধানে সংশোধনী আনা সম্ভব হবে, যা আওয়ামী লীগ, আওয়ামী লীগ, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ ও সংবিধান সংস্কার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে।