০২:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ২৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষঃ
শুক্রবারের মধ্যে জুলাই সংবিধানের চূড়ান্ত রোডম্যাপ প্রকাশের আশা স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট নভেম্বরের মধ্যে চায় জামায়াত হাসিনার বিরুদ্ধে আজ সাক্ষ্য দেবেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এনবিআরের সিদ্ধান্ত: এমপি কোটার ৩০ বিলাসবহুল গাড়ি নিলামে বিক্রির পরিবর্তে হস্তান্তর তীব্র যানজটে আটকা পড়ে সড়ক উপদেষ্টা মোটরসাইকেলে গন্তব্যে পৌঁছেছেন ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনের পাশে আবর্জনার স্তূপ ঢেকে দেওয়া হলো বিশিষ্ট উপদেষ্টার আগমনের জন্য পাঁচ দিন ধরে সাগরে ভাসমান ২৬ জেলেকে উদ্ধার করলো নৌ বাহিনী মেনন-পলক-দস্তগীরসহ চারজনের বিরুদ্ধে নতুন মামলায় গ্রেফতার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তুরস্কের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ: দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও জোরদার করার প্রত্যয়

এবার টেকনাফ সীমান্তে আসছে মিয়ানমারের গুলির শব্দ

সীমান্ত ঘেঁষা মিয়ানমার অভ্যন্তরে আবারও গোলাগুলি হচ্ছে। আর এই গোলাগুলির শব্দ ভেসে আসছে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত এলাকায়। এতে টেকনাফের হোয়াইক্যংয়ের খারাংগাগুনা ও উলুবনিয়া গ্রামের ৪০০ পরিবারের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকেই তারা গুলির শব্দ পাচ্ছেন।

হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মাওলানা নুর আহমদ আনোয়ারী দাবি করেন, ‘তুমব্রুর পর এবার টেকনাফ সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। ফলে সীমান্তের দুই গ্রামে মানুষ আতঙ্কের মধ্য রয়েছেন। আমরা তাদের খোঁজ রাখছি।’

তিনি বলেন, ‘গত দুদিন ধরে গোলাগুলির শব্দ আসছে। ফলে খারাংগাগুনা ও উলুবনিয়া গ্রামের ঝুঁকিতে থাকা প্রায় ৪০০ মানুষের তালিকা তৈরি করেছি। তাদের খোঁজ রাখছি। পরিস্থিতি বুঝে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

হোয়াইক্যং সীমান্তের বাসিন্দারা বলেন, ‘আজকে সকাল থেকে টেকনাফের হোয়াইক্যং সীমান্তে মিয়ানমার অভ্যন্তরে নাফনদের তীরে খুব গোলাগুলি হচ্ছে। এতে এখানকার লোকজন ভয়ভীতির মধ্যে রয়েছেন। তুমব্রু সীমান্তে মর্টারশেল ও গোলাগুলির ঘটনায় এই সীমান্তের বাসিন্দা হিসেবে কিছুটা ভয় ছিল। কিন্তু এখন এই সীমান্তের গোলাগুলির কারণে ভয় আরও বেড়েছে।’

সীমান্তের বসবাসকারী মো. তাহের বলেন, ‘গোলাগুলির বিকট শব্দে এপারের লোকজন আতঙ্কের মধ্য রয়েছে। হোয়াইক্যংয়ের ১ ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় দুই হাজার মানুষ ভয়ের মধ্য রয়েছে। ইতিমধ্যে জনপ্রতিনিধিরা আমাদের তালিকা তৈরি করেন। আমরা অনেক ভয়ে আছি।’

টেকনাফ উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা এরফানুল হক চৌধুরী বলেন, ‘এই সীমান্তে গোলাগুলির খবর জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে জেনেছি। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এ ছাড়া সীমান্তের ৩০০ মিটারের ভেতরে বসবাসকারীদের তালিকা করা হয়েছে। সেটি পরিস্থিতি অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তাদের খোঁজখবর রাখছি।’

টেকনাফ ২-বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার বলেন, ‘সীমান্তে ২৪ ঘণ্টা সজাগ রয়েছে বিজিবি। যেকোনও পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছি। অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠোকাতে কঠোর অবস্থানে বিজিবি।’

এদিকে, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তে সোমবার (দুপুর ১ টা পর্যন্ত) কোনও ধরনের গোলাগুলি শব্দ পায়নি বলে জানিয়েছেন ঘুমধুম ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মো. আলম। তিনি বলেন, ‘গতকাল থেকে গোলাগুলির শব্দ একটু কমেছে। যদিও সীমান্তের মানুষের মাঝে এখনও আতঙ্ক রয়েছে।’

জানা গেছে, ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টারশেল বিস্ফোরণে সীমান্ত এলাকায় বসবাসরত মো. ইকবাল (১৭) নামে এক রোহিঙ্গা নিহত হন। আহত হয়েছেন পাঁচ জন। একইদিন দুপুরে সীমান্ত এলাকা থেকে গরু আনতে গিয়ে মাইন বিস্ফোরণে উইনু থোয়াইং তঞ্চঙ্গ্যা নামে একজনের পায়ের নিম্নাংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

গত ৯ সেপ্টেম্বর বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম-তুমব্রু সীমান্তের বাংলাদেশ অভ্যন্তরে মিয়ানমার থেকে ছোড়া একটি বুলেট এসে পড়ে। ৩ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৯টায় মিয়ানমারের যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া দুটি গোলা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম এলাকায় পড়ে। তার আগে ২৮ আগস্ট বিকাল ৩টার দিকে মিয়ানমার থেকে নিক্ষেপ করা একটি মর্টারশেল অবিস্ফোরিত অবস্থায় ঘুমধুমের তুমব্রু উত্তর মসজিদের কাছে পড়ে। এসব ঘটনায় তুমব্রু সীমান্তের মানুষের মাঝে আতঙ্ক দেখা দেয়। যা এখনও কাটেনি।

ট্যাগ :
সর্বাধিক পঠিত

এবার টেকনাফ সীমান্তে আসছে মিয়ানমারের গুলির শব্দ

প্রকাশিতঃ ১১:৩২:০৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২

সীমান্ত ঘেঁষা মিয়ানমার অভ্যন্তরে আবারও গোলাগুলি হচ্ছে। আর এই গোলাগুলির শব্দ ভেসে আসছে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত এলাকায়। এতে টেকনাফের হোয়াইক্যংয়ের খারাংগাগুনা ও উলুবনিয়া গ্রামের ৪০০ পরিবারের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকেই তারা গুলির শব্দ পাচ্ছেন।

হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মাওলানা নুর আহমদ আনোয়ারী দাবি করেন, ‘তুমব্রুর পর এবার টেকনাফ সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। ফলে সীমান্তের দুই গ্রামে মানুষ আতঙ্কের মধ্য রয়েছেন। আমরা তাদের খোঁজ রাখছি।’

তিনি বলেন, ‘গত দুদিন ধরে গোলাগুলির শব্দ আসছে। ফলে খারাংগাগুনা ও উলুবনিয়া গ্রামের ঝুঁকিতে থাকা প্রায় ৪০০ মানুষের তালিকা তৈরি করেছি। তাদের খোঁজ রাখছি। পরিস্থিতি বুঝে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

হোয়াইক্যং সীমান্তের বাসিন্দারা বলেন, ‘আজকে সকাল থেকে টেকনাফের হোয়াইক্যং সীমান্তে মিয়ানমার অভ্যন্তরে নাফনদের তীরে খুব গোলাগুলি হচ্ছে। এতে এখানকার লোকজন ভয়ভীতির মধ্যে রয়েছেন। তুমব্রু সীমান্তে মর্টারশেল ও গোলাগুলির ঘটনায় এই সীমান্তের বাসিন্দা হিসেবে কিছুটা ভয় ছিল। কিন্তু এখন এই সীমান্তের গোলাগুলির কারণে ভয় আরও বেড়েছে।’

সীমান্তের বসবাসকারী মো. তাহের বলেন, ‘গোলাগুলির বিকট শব্দে এপারের লোকজন আতঙ্কের মধ্য রয়েছে। হোয়াইক্যংয়ের ১ ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় দুই হাজার মানুষ ভয়ের মধ্য রয়েছে। ইতিমধ্যে জনপ্রতিনিধিরা আমাদের তালিকা তৈরি করেন। আমরা অনেক ভয়ে আছি।’

টেকনাফ উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা এরফানুল হক চৌধুরী বলেন, ‘এই সীমান্তে গোলাগুলির খবর জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে জেনেছি। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এ ছাড়া সীমান্তের ৩০০ মিটারের ভেতরে বসবাসকারীদের তালিকা করা হয়েছে। সেটি পরিস্থিতি অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তাদের খোঁজখবর রাখছি।’

টেকনাফ ২-বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার বলেন, ‘সীমান্তে ২৪ ঘণ্টা সজাগ রয়েছে বিজিবি। যেকোনও পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছি। অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠোকাতে কঠোর অবস্থানে বিজিবি।’

এদিকে, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তে সোমবার (দুপুর ১ টা পর্যন্ত) কোনও ধরনের গোলাগুলি শব্দ পায়নি বলে জানিয়েছেন ঘুমধুম ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মো. আলম। তিনি বলেন, ‘গতকাল থেকে গোলাগুলির শব্দ একটু কমেছে। যদিও সীমান্তের মানুষের মাঝে এখনও আতঙ্ক রয়েছে।’

জানা গেছে, ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টারশেল বিস্ফোরণে সীমান্ত এলাকায় বসবাসরত মো. ইকবাল (১৭) নামে এক রোহিঙ্গা নিহত হন। আহত হয়েছেন পাঁচ জন। একইদিন দুপুরে সীমান্ত এলাকা থেকে গরু আনতে গিয়ে মাইন বিস্ফোরণে উইনু থোয়াইং তঞ্চঙ্গ্যা নামে একজনের পায়ের নিম্নাংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

গত ৯ সেপ্টেম্বর বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম-তুমব্রু সীমান্তের বাংলাদেশ অভ্যন্তরে মিয়ানমার থেকে ছোড়া একটি বুলেট এসে পড়ে। ৩ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৯টায় মিয়ানমারের যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া দুটি গোলা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম এলাকায় পড়ে। তার আগে ২৮ আগস্ট বিকাল ৩টার দিকে মিয়ানমার থেকে নিক্ষেপ করা একটি মর্টারশেল অবিস্ফোরিত অবস্থায় ঘুমধুমের তুমব্রু উত্তর মসজিদের কাছে পড়ে। এসব ঘটনায় তুমব্রু সীমান্তের মানুষের মাঝে আতঙ্ক দেখা দেয়। যা এখনও কাটেনি।