০৪:১৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫, ৫ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষঃ
এনসিপি থেকে বহিষ্কারের পর মাহিনের বিশ্লেষণমূলক মন্তব্য নরওয়ে গবেষণা জাহাজ বঙ্গোপসাগরে মৎস্য ও ইকোসিস্টেম জরিপ শুরু করেছে বয়স হলে ভুল বোঝার ব্যাপারটা বুঝতে পারবে, তখন লজ্জিত হবে নিজেকে নিয়ন্ত্রকদের সম্পদ তদন্ত চাই দুদকের ইইউ ৪ মিলিয়ন ইউরো আর্থিক সহযোগিতা দেবে বাংলাদেশের নির্বাচন উন্নত করতে ইভেন্ট বুকিংয়ে এক বছরের জন্য ৫০% ছাড় দিচ্ছে আইসিসিএল ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার ঝিনাইদহের আওয়ামী লীগ সভাপতি পরীক্ষায় ফেল, টানা ২৬ বছর গৃহবন্দী নারীকে উদ্ধার খাদ্য মন্ত্রনালয়ের রেকর্ড পরিমাণ ধান ও চাল সংগ্রহ গাইবান্ধায় ১৪৯০ মিটার দীর্ঘ ‘মওলানা ভাসানী সেতু’ উদ্বোধন করবেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা

লেনদেন ফের ৯০০ কোটি টাকা

মাত্র ২৮ শতাংশ ফ্রি-ফ্লোট শেয়ারের লেনদেনে ভর করে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেন ফের ৯০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। গতকাল রোববারের ৯২১ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন ছিল গত প্রায় এক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর চেয়ে বেশি অঙ্কের লেনদেন হয় গত ১২ জুন। ওই দিন লেনদেন হয় ৯৮১ কোটি টাকার শেয়ার। যদিও এর মাত্র তিন কার্যদিবস পর ১৮ জুন লেনদেন ৪১৮ কোটি টাকায় নামে।

এর তিন সপ্তাহ পর সার্বিক লেনদেন বেড়ে দ্বিগুণের বেশি হলেও স্বস্তি নেই বড় ব্রোকারেজ হাউসগুলোর। প্রতিষ্ঠানগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তারা বলছেন, যেসব কোম্পানির ‘চাল-চুলো’ নেই, সেগুলোর দর বাড়ছে। অল্প কিছু মানুষ গুটিকয়েক শেয়ার নিয়ে ‘জুয়া’ খেলছেন। অথচ সিংহভাগ মানুষের বিনিয়োগ আটকে আছে।

গতকালের লেনদেন শেষের তথ্য অনুযায়ী, তালিকাভুক্ত ৩৯৩ শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১৯০টি বা ৪৮ শতাংশ ফ্লোর প্রাইসে আটকে ছিল। অবশ্য বাজার মূলধন বিবেচনায় ফ্লোর প্রাইসে আটকে আছে প্রায় ৭৭ শতাংশ এবং ফ্রি-ফ্লোট শেয়ারের প্রায় ৭২ শতাংশ।

গতকাল দিনের লেনদেন শেষের তথ্য অনুযায়ী, ফ্রি-ফ্লোট শেয়ার অর্থাৎ তালিকাভুক্ত সব কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের বাইরে অন্যদের হাতে থাকা শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ১ লাখ ৭৪ হাজার ৪৮৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১ লাখ ২৫ হাজার ১০০ কোটি টাকার শেয়ার ফ্লোর প্রাইসে পড়ে ছিল, ক্রেতা ছিল না। গতকাল এসব কোম্পানির ১৩৫ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। এর ১০৫ কোটি ৫১ লাখ টাকার লেনদেনই ছিল ব্লক মার্কেটে।

পর্যালোচনায় আরও দেখা গেছে, টাকার অঙ্কে লেনদেন বাড়লেও গুটিকয়েক শেয়ার ঘিরে সিংহভাগ লেনদেন হচ্ছে। গতকাল ৩৭৮ কোম্পানির শেয়ার কেনাবেচা হলেও শীর্ষ ২০ কোম্পানিরই ৪৬৪ কোটি টাকার বা ৫০ শতাংশের বেশি লেনদেন হয়েছে।

এর মধ্যে ৮৪ কোটি ৭৮ লাখ টাকার লেনদেন নিয়ে শীর্ষে ছিল ইসলামী ব্যাংক। পাবলিক মার্কেটে এ কোম্পানির দুই লাখ টাকারও শেয়ার কেনাবেচা হয়নি। ব্যাংকটির মালিকানায় থাকা একটি ব্যবসায়ী গ্রুপ নিজের এক অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য অ্যাকাউন্টে শেয়ার লেনদেন করেছে জানিয়ে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলছে, এটি সার্বিক লেনদেন অঙ্ককে বড় করলেও বাস্তবে এর কোনো মূল্য নেই।

প্রায় ৫৪ কোটি টাকার লেনদেন নিয়ে এর পরের অবস্থানে ছিল ল্যুব-রেফ। গত বুধবারও শেয়ারটি ফ্লোর প্রাইসে ছিল, ক্রেতা ছিল না। হঠাৎ লেনদেন বৃদ্ধির সঙ্গে শেয়ারপ্রতি তিন টাকা দর বেড়েছে। তৃতীয় অবস্থানে থাকা ফু-ওয়াং ফুডের লেনদেন হয়েছে প্রায় ৩৪ কোটি টাকার শেয়ার। মালিকানায় থাকতে কোম্পানিটির বর্তমান মালিকপক্ষকে শেয়ার কিনতে হবে– এমন গুজবে মাত্র পাঁচ দিনে ৫০ শতাংশ বেড়ে শেয়ারটির দর ৩৫ টাকা ছাড়িয়েছে। যদিও কোম্পানিটির চেয়ারম্যান বলেছেন, এটি সম্পূর্ণ গুজব। লেনদেনের পরের অবস্থানে থাকা শেয়ারগুলো ছিল দুর্বল মৌলভিত্তির।

সার্বিক পরিস্থিতি দেখে ফেসবুকে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগের শিক্ষক ড. আল-আমীন। নিজের ফেসবুক পেজে শনিবার তিনি লিখেন, ‘ভালো বলতে যেসব কোম্পানিকে বুঝি, তার ৮০ শতাংশের ক্রেতা নেই। অথচ সেসব শেয়ারের দর অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে, যেগুলোর উৎপাদন বন্ধ, না হয় পুঞ্জীভূত লোকসান বেশি। নামমাত্র লভ্যাংশ ঘোষণা করে ছয় থেকে সাত গুণ মূল্য বাড়িয়েছে। এসব দেখার কি কেউ নাই?’

ট্যাগ :
সর্বাধিক পঠিত

আজ উদ্বোধন হচ্ছে মাওলানা ভাসানী সেতু

লেনদেন ফের ৯০০ কোটি টাকা

প্রকাশিতঃ ১২:৫৪:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ জুলাই ২০২৩

মাত্র ২৮ শতাংশ ফ্রি-ফ্লোট শেয়ারের লেনদেনে ভর করে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেন ফের ৯০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। গতকাল রোববারের ৯২১ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন ছিল গত প্রায় এক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর চেয়ে বেশি অঙ্কের লেনদেন হয় গত ১২ জুন। ওই দিন লেনদেন হয় ৯৮১ কোটি টাকার শেয়ার। যদিও এর মাত্র তিন কার্যদিবস পর ১৮ জুন লেনদেন ৪১৮ কোটি টাকায় নামে।

এর তিন সপ্তাহ পর সার্বিক লেনদেন বেড়ে দ্বিগুণের বেশি হলেও স্বস্তি নেই বড় ব্রোকারেজ হাউসগুলোর। প্রতিষ্ঠানগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তারা বলছেন, যেসব কোম্পানির ‘চাল-চুলো’ নেই, সেগুলোর দর বাড়ছে। অল্প কিছু মানুষ গুটিকয়েক শেয়ার নিয়ে ‘জুয়া’ খেলছেন। অথচ সিংহভাগ মানুষের বিনিয়োগ আটকে আছে।

গতকালের লেনদেন শেষের তথ্য অনুযায়ী, তালিকাভুক্ত ৩৯৩ শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১৯০টি বা ৪৮ শতাংশ ফ্লোর প্রাইসে আটকে ছিল। অবশ্য বাজার মূলধন বিবেচনায় ফ্লোর প্রাইসে আটকে আছে প্রায় ৭৭ শতাংশ এবং ফ্রি-ফ্লোট শেয়ারের প্রায় ৭২ শতাংশ।

গতকাল দিনের লেনদেন শেষের তথ্য অনুযায়ী, ফ্রি-ফ্লোট শেয়ার অর্থাৎ তালিকাভুক্ত সব কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের বাইরে অন্যদের হাতে থাকা শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ১ লাখ ৭৪ হাজার ৪৮৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১ লাখ ২৫ হাজার ১০০ কোটি টাকার শেয়ার ফ্লোর প্রাইসে পড়ে ছিল, ক্রেতা ছিল না। গতকাল এসব কোম্পানির ১৩৫ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। এর ১০৫ কোটি ৫১ লাখ টাকার লেনদেনই ছিল ব্লক মার্কেটে।

পর্যালোচনায় আরও দেখা গেছে, টাকার অঙ্কে লেনদেন বাড়লেও গুটিকয়েক শেয়ার ঘিরে সিংহভাগ লেনদেন হচ্ছে। গতকাল ৩৭৮ কোম্পানির শেয়ার কেনাবেচা হলেও শীর্ষ ২০ কোম্পানিরই ৪৬৪ কোটি টাকার বা ৫০ শতাংশের বেশি লেনদেন হয়েছে।

এর মধ্যে ৮৪ কোটি ৭৮ লাখ টাকার লেনদেন নিয়ে শীর্ষে ছিল ইসলামী ব্যাংক। পাবলিক মার্কেটে এ কোম্পানির দুই লাখ টাকারও শেয়ার কেনাবেচা হয়নি। ব্যাংকটির মালিকানায় থাকা একটি ব্যবসায়ী গ্রুপ নিজের এক অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য অ্যাকাউন্টে শেয়ার লেনদেন করেছে জানিয়ে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলছে, এটি সার্বিক লেনদেন অঙ্ককে বড় করলেও বাস্তবে এর কোনো মূল্য নেই।

প্রায় ৫৪ কোটি টাকার লেনদেন নিয়ে এর পরের অবস্থানে ছিল ল্যুব-রেফ। গত বুধবারও শেয়ারটি ফ্লোর প্রাইসে ছিল, ক্রেতা ছিল না। হঠাৎ লেনদেন বৃদ্ধির সঙ্গে শেয়ারপ্রতি তিন টাকা দর বেড়েছে। তৃতীয় অবস্থানে থাকা ফু-ওয়াং ফুডের লেনদেন হয়েছে প্রায় ৩৪ কোটি টাকার শেয়ার। মালিকানায় থাকতে কোম্পানিটির বর্তমান মালিকপক্ষকে শেয়ার কিনতে হবে– এমন গুজবে মাত্র পাঁচ দিনে ৫০ শতাংশ বেড়ে শেয়ারটির দর ৩৫ টাকা ছাড়িয়েছে। যদিও কোম্পানিটির চেয়ারম্যান বলেছেন, এটি সম্পূর্ণ গুজব। লেনদেনের পরের অবস্থানে থাকা শেয়ারগুলো ছিল দুর্বল মৌলভিত্তির।

সার্বিক পরিস্থিতি দেখে ফেসবুকে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগের শিক্ষক ড. আল-আমীন। নিজের ফেসবুক পেজে শনিবার তিনি লিখেন, ‘ভালো বলতে যেসব কোম্পানিকে বুঝি, তার ৮০ শতাংশের ক্রেতা নেই। অথচ সেসব শেয়ারের দর অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে, যেগুলোর উৎপাদন বন্ধ, না হয় পুঞ্জীভূত লোকসান বেশি। নামমাত্র লভ্যাংশ ঘোষণা করে ছয় থেকে সাত গুণ মূল্য বাড়িয়েছে। এসব দেখার কি কেউ নাই?’