আফগানিস্তান বাগরাম ঘাঁটি ফেরত দেবে না জানিয়েছেন দেশটির সরকার, এই সিদ্ধান্তে বিস্তারিত ক্ষুব্ধ হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলছেন, যদি এই ঘাঁটি ফেরত না পাওয়া যায়, তাহলে নিয়মনীতির বাইরে কিছু কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।
গত শনিবার ট্রাম্প তার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশালে একটি পোস্টে লিখেছেন, যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘ দুই দশক ধরে এই ঘাঁটি তৈরি করেছে এবং এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি উল্লেখ করেছেন, আফগানিস্তান যদি এর উত্তরাধিকার ঘাঁটি ফেরত দেয়, তাহলে খুব খারাপ কিছু হতে পারে।
আফগানিস্তানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া চুক্তিতে এই ঘাঁটি ফেরত দেওয়ার বিষয়টি ছিল আলোচনা যান, কিন্তু আফগানিস্তানের তালেবান প্রশাসন এর ব্যাপারে কোনো সাড়া দেয়নি। এর আগেও ট্রাম্প উল্লেখ করেছিলেন, যুক্তরাজ্য সফরকালে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, তারা এই ঘাঁটি পুনরুদ্ধার করার জন্য প্রচেষ্টার মধ্যে রয়েছেন, কারণ ইঙ্গিত করে বলেছিলেন, আফগানিস্তান কিছু কিছু বিষয়ে তাদের সাথে সহযোগিতা করছে।
বাগরাম ঘাঁটিটি আফগানিস্তানের সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত, যেখানে দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময় আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। ২০০১ সালের নাইন ইleven সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে এই ঘাঁটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে অমিত্র্য যুদ্ধের কেন্দ্র হিসেবে। ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটো বাহিনী এখান থেকে প্রত্যাহার করে নেয়, এরপর তালেবান দ্রুত এই এলাকাগুলো দখল করে।
অভ্যুত্থানে এই ঘাঁটি নিয়ে মানবাধিকার সংস্থাগুলোরও বহুগুণের অভিযোগ রয়েছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতো সংস্থাগুলো বলছে, যুক্তরাষ্ট্র এখানে বন্দিদের ওপর নিষ্ঠুরতা চালিয়েছে এবং সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের নামে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো নিয়মিত এই জায়গায় ঘটেছে।
ট্রাম্পের বক্তব্য অনুযায়ী, তিনি বারবার বাগরাম হারানোর জন্য আফগান সরকার এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কূটনৈতিক ব্যর্থতাকে দায়ী করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, বাইডেনের ভুল নীতি ও সিদ্ধান্তের কারণে যুক্তরাষ্ট্র অনুকূল পরিস্থিতি থেকে সরে গেছে। এছাড়াও, তিনি যুক্তি দিয়েছেন, চীনের প্রসারের কারণে আফগানিস্তানে এর প্রভাব বাড়ছে, যা জন্য মার্কিন স্বার্থের জন্য বিপজ্জনক।
সাম্প্রতিক এক প্রশ্নের জবাবে হোয়াইট হাউসের বাইরে সাংবাদিকদের, ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘আমরা এখনো কিছু বলতে চাই না। তবে আমরা এই ব্যাপারে আলোচনা করছি। আশা করছি খুব শিগগিরই সিদ্ধান্তে পৌঁছাবো। যদি না হয়, তাহলে আমি কী করতে যাচ্ছি, সেটি খুব শিগগির জানানো হবে।’ এটি স্পষ্ট করে দেয়, ট্রাম্প সম্ভবত ভবিষ্যতে এই বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।