মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজা নিয়ে আলোচনা এবং সমাধানে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট গত সোমবার জানান, ট্রাম্প সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, মিসর, জর্ডান, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া এবং পাকিস্তানের মতো গুরুত্বপূর্ণ মুসলিম দেশের নেতাদের সঙ্গে এই বৈঠক করবেন।
বিশ্লেষকদের মতে, এই আলোচনা মূলত গাজায় শান্তির জন্য একাধিক প্রস্তাবনা ও পরিকল্পনা উপস্থাপনের উদ্দেশ্যে। ট্রাম্প বৈঠকে গাজায় স্থিতিশীলতা আনার জন্য একটি বিস্তারিত পরিকল্পনা দেবেন, যেখানে জিম্মিদের মুক্তি, যুদ্ধবিরতি, ইসরায়েলের প্রত্যাহার এবং হামাসের বাইরে গাজার শাসনব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রস্তাব থাকছে।
অতিরিক্তভাবে, ওয়াশিংটন চাইছে যে আরব ও মুসলিম দেশগুলো গাজায় শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠায়, যাতে করে ইসরায়েল তাদের সামরিক বাহিনী প্রত্যাহার করতে পারে এবং গাজার পুনর্গঠনের জন্য অর্থায়ন ও সহায়তা চালু করা যায়।
এছাড়াও, ট্রাম্প জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেবেন। এক দিন আগে, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ফ্রান্স ও পর্তুগাল ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়ে একটি ঐতিহাসিক কূটনৈতিক পরিবর্তনের পথে হাঁটায়। তবে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র এই স্বীকৃতিকে চরমপন্থীদের পুরস্কার বলে অভিহিত করেছে।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযানে এখন পর্যন্ত ৬৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। লাখো মানুষের বাস্তুচ্যুতি, ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। জাতিসংঘ, মানবাধিকার সংস্থাগুলো মনে করছে, এই ঘটনাগুলো গণহত্যার স্বরূপ ধারণ করেছে।
অন্যদিকে, ইসরায়েল দাবি করছে, এই হামলা তাদের আত্মরক্ষা বা প্রতিরক্ষার জন্য। শ্রমের অভিযোগ, হামাসের আক্রমণে এখন পর্যন্ত প্রায় ১১২০০ মানুষ নিহত ও বহু মানুষ জিম্মি। সাম্প্রতিক সময়ে ইরান, লেবানন, ইয়েমেন, সিরিয়া ও কাতারে ইসরায়েলের হামলা চালানো হয়েছে।
বাহ্যত: ট্রাম্প মনে করেন, ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়া মূলত হামাসকে পুরস্কৃত করার মতো, যা সংঘাত আরও বাড়াতে পারে। তিনি বলেন, পশ্চিমা দেশগুলোর এই স্বীকৃতি একটি ভুল পদক্ষেপ, যা সংঘাত সমাধানে সহায়ক নয়। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিট এরকম বলেন, এই স্বীকৃতি আক্ষরিক অর্থে হামাসকে পুরস্কার দেয়ার মতো। ট্রাম্পের মতে, এই সিদ্ধান্ত গাজায় জিম্মিদের মুক্তি বা সংঘাত শেষের জন্য কিছু করছে না।
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে, ফিলিস্তিনকে অবশেষে স্বীকৃতি দিয়েছে ফ্রান্স, যা তাদের অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন, কানাডা ও পর্তুগালসহ বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশের স্বীকৃতি তালিকায় যোগ করেছে। এই সিদ্ধান্তটি ইসরায়েলের উপর কূটনৈতিক চাপ তৈরি করছে, বিশেষ করে যখন গাজায় যুদ্ধের তীব্রতা দিন দিন বেড়েছে এবং নিহতের সংখ্যা ৬৫ হাজারের বেশি। পুরো অঞ্চল ধ্বংসস্তূপে রূপ নিয়েছে।