১০:৩৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ২৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষঃ
তীব্র যানজটে আটকা পড়ে সড়ক উপদেষ্টা মোটরসাইকেলে গন্তব্যে পৌঁছেছেন ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনের পাশে আবর্জনার স্তূপ ঢেকে দেওয়া হলো বিশিষ্ট উপদেষ্টার আগমনের জন্য পাঁচ দিন ধরে সাগরে ভাসমান ২৬ জেলেকে উদ্ধার করলো নৌ বাহিনী মেনন-পলক-দস্তগীরসহ চারজনের বিরুদ্ধে নতুন মামলায় গ্রেফতার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তুরস্কের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ: দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও জোরদার করার প্রত্যয় আওয়ামী লীগের বিচারকাজের জন্য আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু জয়পুরহাটের কানাইপুকুর গ্রামে বিরল শামুকখোল পাখির অভয়ারণ্য শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়ার প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন সিইসির মনে অবস্থান: এবারের নির্বাচন জীবনশেষের সুযোগ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিদায় সাক্ষাৎ জাতিসংঘের অভিবাসী সমন্বয়কের

প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানের আহ্বান ও তহবিল বৃদ্ধির الدعা

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস রোহিঙ্গা সংকটের দীর্ঘমেয়াদী সমাধান ও তহবিল বৃদ্ধির জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন। নিউইয়র্কের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে বিশেষ ভাষণে তিনি বলেন, ‘অর্থের সংকটের কারণে আজকার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জীবনযাত্রার মান খুবই সংকুচিত হয়ে পড়েছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি ইতিমধ্যে এই পরিস্থিতি সম্পর্কে সতর্ক মেসেজ দিয়েছে। যদি দ্রুত নতুন তহবিল না আসে, তাহলে মাসিক রেশন মাত্র ৬ ডলার পর্যন্ত নামতে পারে, যা রোহিঙ্গাদের জন্য ভয়াবহ অবস্থা তৈরি করবে—অনাহার ও অপুষ্টি চরমে পৌঁছাতে পারে।’ তিনি আরও গুরুত্ব দিয়ে বলেন, ‘বিদ্যমান তহবিলের বাইরে নতুন এবং বেশি তহবিল সংগ্রহ করতে হবে, আবার মিয়ানমার সরকার ও রোহিঙ্গাদের অবদানকারী অন্য অংশীদারদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে দ্রুত রাজনৈতিক সমাধান করতে হবে।’ এসময় তিনি মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন, বলেন, ‘মায়ানমারে চলমান সংঘাতের কবলে পড়ে পুরো অঞ্চল অসংখ্য উদ্বেগে ভুগছে। এই পরিস্থিতি শুধু অঞ্চলটাকে অস্থিতিশীল করে তুলছে না, বরং বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের ফেরত যাওয়ার প্রক্রিয়াও কঠিন করে ফেলছে।’ তিনি উল্লেখ করেন, ‘আট বছর পার হলেও রোহিঙ্গা পরিস্থিতির কোনও সুস্পষ্ট সমাধানে দৃষ্টিগোচর হচ্ছে না। বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিচ্ছে। রাখাইনে জাতিগত বিদ্বেষের কারণে তাদের অধিকারের প্রতি অবজ্ঞা চলতে থাকছে।’ প্রধান উপদেষ্টা সজোরে বলছেন, ‘রোহিঙ্গাদের প্রান্তিকীকরণের এই অবস্থা আর চলতে দেওয়া যায় না। একধরণের বৈষম্যমূলক নীতি ও কর্মকাণ্ড দ্রুত বন্ধ করে সমাধান ও প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।’ তিনি বললেন, ‘রাখাইনের সমস্যা শুধুমাত্র আঞ্চলিকভাবে সমাধানের জন্যই নয়, এর জন্য পুরো অঞ্চলের সকল জাতিগোষ্ঠীর অংশগ্রহণে এক স্বচ্ছ, বাস্তবসম্মত রাজনৈতিক বন্দোবস্ত দরকার যাতে রোহিঙ্গারা সমঅধিকার ও নাগরিকত্ব সহ সমাজের একটা অংশ হতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকটের মূল ভুক্তভোগী তারা, আর বাংলাদেশ দ্বিতীয় স্তরে উপদ্রুত। তবে এই সংকট নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমার দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় নয়, বরং এটি একটি আন্তর্জাতিক মানবিক দায়িত্ব।’ তিনি যোগ করেন, ‘অন্য প্রতিবেশী দেশগুলোরও দায়িত্ব রয়েছে। রাখাইনে স্থিতিশীলতা আনতে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর যৌথ প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত।’ তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘আসছে ৩০ সেপ্টেম্বরের উচ্চপর্যায়ের রোহিঙ্গা সম্মেলন বিশ্বজুড়ে দৃঢ় সংকল্প জোরদার করবে ও রোহিঙ্গাদের জন্য বাস্তবসম্মত সহায়তা নিশ্চিত করবে। এই ক্ষেত্রে তহবিল সংগ্রহের ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হবে। ভবিষ্যতে একটি নির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা ও রোডম্যাপ তৈরি করে সময় নির্দিষ্ট করে এই সংকটের স্থায়ী সমাধান সম্ভব।’

ট্যাগ :
সর্বাধিক পঠিত

দৌলতপুরে মা ইলিশ রক্ষায় অভিযান, অবৈধ জাল জব্দ ও জেলেকে জরিমানা

প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানের আহ্বান ও তহবিল বৃদ্ধির الدعা

প্রকাশিতঃ ১০:১৫:১৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস রোহিঙ্গা সংকটের দীর্ঘমেয়াদী সমাধান ও তহবিল বৃদ্ধির জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন। নিউইয়র্কের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে বিশেষ ভাষণে তিনি বলেন, ‘অর্থের সংকটের কারণে আজকার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জীবনযাত্রার মান খুবই সংকুচিত হয়ে পড়েছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি ইতিমধ্যে এই পরিস্থিতি সম্পর্কে সতর্ক মেসেজ দিয়েছে। যদি দ্রুত নতুন তহবিল না আসে, তাহলে মাসিক রেশন মাত্র ৬ ডলার পর্যন্ত নামতে পারে, যা রোহিঙ্গাদের জন্য ভয়াবহ অবস্থা তৈরি করবে—অনাহার ও অপুষ্টি চরমে পৌঁছাতে পারে।’ তিনি আরও গুরুত্ব দিয়ে বলেন, ‘বিদ্যমান তহবিলের বাইরে নতুন এবং বেশি তহবিল সংগ্রহ করতে হবে, আবার মিয়ানমার সরকার ও রোহিঙ্গাদের অবদানকারী অন্য অংশীদারদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে দ্রুত রাজনৈতিক সমাধান করতে হবে।’ এসময় তিনি মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন, বলেন, ‘মায়ানমারে চলমান সংঘাতের কবলে পড়ে পুরো অঞ্চল অসংখ্য উদ্বেগে ভুগছে। এই পরিস্থিতি শুধু অঞ্চলটাকে অস্থিতিশীল করে তুলছে না, বরং বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের ফেরত যাওয়ার প্রক্রিয়াও কঠিন করে ফেলছে।’ তিনি উল্লেখ করেন, ‘আট বছর পার হলেও রোহিঙ্গা পরিস্থিতির কোনও সুস্পষ্ট সমাধানে দৃষ্টিগোচর হচ্ছে না। বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিচ্ছে। রাখাইনে জাতিগত বিদ্বেষের কারণে তাদের অধিকারের প্রতি অবজ্ঞা চলতে থাকছে।’ প্রধান উপদেষ্টা সজোরে বলছেন, ‘রোহিঙ্গাদের প্রান্তিকীকরণের এই অবস্থা আর চলতে দেওয়া যায় না। একধরণের বৈষম্যমূলক নীতি ও কর্মকাণ্ড দ্রুত বন্ধ করে সমাধান ও প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।’ তিনি বললেন, ‘রাখাইনের সমস্যা শুধুমাত্র আঞ্চলিকভাবে সমাধানের জন্যই নয়, এর জন্য পুরো অঞ্চলের সকল জাতিগোষ্ঠীর অংশগ্রহণে এক স্বচ্ছ, বাস্তবসম্মত রাজনৈতিক বন্দোবস্ত দরকার যাতে রোহিঙ্গারা সমঅধিকার ও নাগরিকত্ব সহ সমাজের একটা অংশ হতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকটের মূল ভুক্তভোগী তারা, আর বাংলাদেশ দ্বিতীয় স্তরে উপদ্রুত। তবে এই সংকট নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমার দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় নয়, বরং এটি একটি আন্তর্জাতিক মানবিক দায়িত্ব।’ তিনি যোগ করেন, ‘অন্য প্রতিবেশী দেশগুলোরও দায়িত্ব রয়েছে। রাখাইনে স্থিতিশীলতা আনতে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর যৌথ প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ সর্বদা প্রস্তুত।’ তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘আসছে ৩০ সেপ্টেম্বরের উচ্চপর্যায়ের রোহিঙ্গা সম্মেলন বিশ্বজুড়ে দৃঢ় সংকল্প জোরদার করবে ও রোহিঙ্গাদের জন্য বাস্তবসম্মত সহায়তা নিশ্চিত করবে। এই ক্ষেত্রে তহবিল সংগ্রহের ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হবে। ভবিষ্যতে একটি নির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা ও রোডম্যাপ তৈরি করে সময় নির্দিষ্ট করে এই সংকটের স্থায়ী সমাধান সম্ভব।’