০২:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ২৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষঃ
শুক্রবারের মধ্যে জুলাই সংবিধানের চূড়ান্ত রোডম্যাপ প্রকাশের আশা স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট নভেম্বরের মধ্যে চায় জামায়াত হাসিনার বিরুদ্ধে আজ সাক্ষ্য দেবেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এনবিআরের সিদ্ধান্ত: এমপি কোটার ৩০ বিলাসবহুল গাড়ি নিলামে বিক্রির পরিবর্তে হস্তান্তর তীব্র যানজটে আটকা পড়ে সড়ক উপদেষ্টা মোটরসাইকেলে গন্তব্যে পৌঁছেছেন ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনের পাশে আবর্জনার স্তূপ ঢেকে দেওয়া হলো বিশিষ্ট উপদেষ্টার আগমনের জন্য পাঁচ দিন ধরে সাগরে ভাসমান ২৬ জেলেকে উদ্ধার করলো নৌ বাহিনী মেনন-পলক-দস্তগীরসহ চারজনের বিরুদ্ধে নতুন মামলায় গ্রেফতার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তুরস্কের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ: দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও জোরদার করার প্রত্যয়

বিদ্বেষ থেকে এনবিআর বিভাজন হলে ভয়ংকর পরিস্থিতি তৈরি হবে

রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা নামে দুটি আলাদা সংস্থা গঠনের জন্য সরকারি অধ্যাদেশে পরামর্শক কমিটির সুপারিশগুলো যথাযথভাবে প্রতিফলিত হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক সদস্য ফরিদ উদ্দিন। তিনি বলেন, যদি আওয়ামী আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে বিদ্বেষের ভিত্তিতে এনবিআরকে ভাগ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, এটি দেশের জন্য মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। শনিবার ঢাকার গুলশানে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) ও পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশ (পিইবি) আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। ফরিদ উদ্দিন আরও বলেন, সংস্কার প্রতিবেদনে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা নামে দুটি আলাদা সংস্থা গঠন করা প্রস্তাব ছিল, কিন্তু তা বাস্তবায়নে যথাযথ সমন্বয় দেখা যাচ্ছে না। তিনি উল্লেখ করেন, আমাদের দেওয়া সুপারিশগুলো অধ্যাদেশে প্রতিফলিত হয়নি। যদি ভুলভাবে বা বিদ্বেষের প্রেরণায় এই বিভাজন করা হয়, তাহলে বর্তমান পরিস্থিতির চেয়েও ভয়ংকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। এই সময় তিনি একটি নথি তুলে ধরে জানান, অধ্যাদেশে যা বলা হয়েছে এবং যা হওয়া উচিত—সে বিষয়ে আলাদা নোট প্রস্তুত করা হয়েছে, যা সবার পড়া ও বিশ্লেষণ দরকার। গত ১২ মে রাতে সরকার ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করে এনবিআরকে বিলুপ্ত করে। পরদিন থেকে এনবিআর কর্মীরা আন্দোলনে নামে, তারা শীর্ষ পদে প্রশাসন ক্যাডার নয়, বরং বিসিএস (কর) ও বিসিএস (শুল্ক ও আবগারি) ক্যাডারের অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের নিয়োগের দাবি তোলে। এর ফলে সরকারের পক্ষ থেকে অধ্যাদেশ সংশোধনের ঘোষণা আসে। পরে খসড়ায় ১১টি পরিবর্তন আনা হয় এবং অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের নেতৃত্ব দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। পরামর্শক কমিটির অন্য সদস্য ও সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ বলেন, সঠিকভাবে সুপারিশ বাস্তবায়ন অনেকটাই রাজনৈতিক অঙ্গীকারের ওপর নির্ভর করে। শুধু রিপোর্ট দেওয়া বা অধ্যাদেশ জারি করলেই হবে না, তার কার্যকরী বাস্তবায়ন না হলে সমস্যা থেকে যায়। তিনি ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের মতামত দিন। যদি পরে সরকার না শোনে, তখন আপনাদের বলতে হবে, কখনও সে সময়ে সংস্কার সুপারিশগুলো উপেক্ষিত হয়েছিল।’ এমসিসিআইর সাবেক সভাপতি নিহাদ কবির বলেন, ‘সংস্কার কমিটি খুব ভালো কাজ করেছে। তবে আমরা জানি না, এই প্রতিবেদনটির কী হবে বা তার কার্যকারিতা কতটা। বাস্তবায়নে যথেষ্ট মনোযোগ না দেওয়া যাওয়ায় এবং হঠাৎ করেই এনবিআর বিলুপ্তির সিদ্ধান্তের কারণে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে।’ পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাশরুর রিয়াজও একই উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘কমিটি স্টেকহোল্ডারদের মতামত নিয়ে সুপারিশ করেছে, কিন্তু সরকারের আগ্রহ কম। যদি আলাদা দুটি সংস্থা কার্যকর না হয়, তবে তা দ্বিগুণ ঝামেলার সৃষ্টি করবে বলে ধারণা। বক্তারা মনে করেন, সংস্কার প্রক্রিয়ায় তাড়াহুড়া বা ভুল পদক্ষেপ মানে রাজস্ব প্রশাসনে জটিলতা বাড়বে এবং ব্যবসায়ী সমাজের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তাই তারা সরকারকে সুপারিশগুলো খুঁটিয়ে পড়ার এবং সতর্কতার সঙ্গে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান।

ট্যাগ :
সর্বাধিক পঠিত

বিদ্বেষ থেকে এনবিআর বিভাজন হলে ভয়ংকর পরিস্থিতি তৈরি হবে

প্রকাশিতঃ ১০:৪৯:৪৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা নামে দুটি আলাদা সংস্থা গঠনের জন্য সরকারি অধ্যাদেশে পরামর্শক কমিটির সুপারিশগুলো যথাযথভাবে প্রতিফলিত হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক সদস্য ফরিদ উদ্দিন। তিনি বলেন, যদি আওয়ামী আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে বিদ্বেষের ভিত্তিতে এনবিআরকে ভাগ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, এটি দেশের জন্য মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। শনিবার ঢাকার গুলশানে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) ও পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশ (পিইবি) আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। ফরিদ উদ্দিন আরও বলেন, সংস্কার প্রতিবেদনে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা নামে দুটি আলাদা সংস্থা গঠন করা প্রস্তাব ছিল, কিন্তু তা বাস্তবায়নে যথাযথ সমন্বয় দেখা যাচ্ছে না। তিনি উল্লেখ করেন, আমাদের দেওয়া সুপারিশগুলো অধ্যাদেশে প্রতিফলিত হয়নি। যদি ভুলভাবে বা বিদ্বেষের প্রেরণায় এই বিভাজন করা হয়, তাহলে বর্তমান পরিস্থিতির চেয়েও ভয়ংকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। এই সময় তিনি একটি নথি তুলে ধরে জানান, অধ্যাদেশে যা বলা হয়েছে এবং যা হওয়া উচিত—সে বিষয়ে আলাদা নোট প্রস্তুত করা হয়েছে, যা সবার পড়া ও বিশ্লেষণ দরকার। গত ১২ মে রাতে সরকার ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করে এনবিআরকে বিলুপ্ত করে। পরদিন থেকে এনবিআর কর্মীরা আন্দোলনে নামে, তারা শীর্ষ পদে প্রশাসন ক্যাডার নয়, বরং বিসিএস (কর) ও বিসিএস (শুল্ক ও আবগারি) ক্যাডারের অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের নিয়োগের দাবি তোলে। এর ফলে সরকারের পক্ষ থেকে অধ্যাদেশ সংশোধনের ঘোষণা আসে। পরে খসড়ায় ১১টি পরিবর্তন আনা হয় এবং অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের নেতৃত্ব দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। পরামর্শক কমিটির অন্য সদস্য ও সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ বলেন, সঠিকভাবে সুপারিশ বাস্তবায়ন অনেকটাই রাজনৈতিক অঙ্গীকারের ওপর নির্ভর করে। শুধু রিপোর্ট দেওয়া বা অধ্যাদেশ জারি করলেই হবে না, তার কার্যকরী বাস্তবায়ন না হলে সমস্যা থেকে যায়। তিনি ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের মতামত দিন। যদি পরে সরকার না শোনে, তখন আপনাদের বলতে হবে, কখনও সে সময়ে সংস্কার সুপারিশগুলো উপেক্ষিত হয়েছিল।’ এমসিসিআইর সাবেক সভাপতি নিহাদ কবির বলেন, ‘সংস্কার কমিটি খুব ভালো কাজ করেছে। তবে আমরা জানি না, এই প্রতিবেদনটির কী হবে বা তার কার্যকারিতা কতটা। বাস্তবায়নে যথেষ্ট মনোযোগ না দেওয়া যাওয়ায় এবং হঠাৎ করেই এনবিআর বিলুপ্তির সিদ্ধান্তের কারণে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে।’ পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাশরুর রিয়াজও একই উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘কমিটি স্টেকহোল্ডারদের মতামত নিয়ে সুপারিশ করেছে, কিন্তু সরকারের আগ্রহ কম। যদি আলাদা দুটি সংস্থা কার্যকর না হয়, তবে তা দ্বিগুণ ঝামেলার সৃষ্টি করবে বলে ধারণা। বক্তারা মনে করেন, সংস্কার প্রক্রিয়ায় তাড়াহুড়া বা ভুল পদক্ষেপ মানে রাজস্ব প্রশাসনে জটিলতা বাড়বে এবং ব্যবসায়ী সমাজের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তাই তারা সরকারকে সুপারিশগুলো খুঁটিয়ে পড়ার এবং সতর্কতার সঙ্গে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান।