০২:১৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষঃ
আন্তর্জাতিকভাবে দাবি জানানোয় বন্দিদের মুক্তি ঘোষণা বেগম খালেদা জিয়ার জন্য দেশবাসীর দোয়ার আবেদন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্কটকালে মায়ের স্নেহ পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা আমারও: তারেক রহমান মৌসুমি সবজি বাজারে ভরপুর, দাম কমে গেছে উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ সভায় খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্য কামনায় দোয়া ও মোনাজাত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের জন্য ভর্তুকির দাবি আরব আমিরাতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ২৪ ব্যক্তির মুক্তি আসছে বেগম খালেদা জিয়ার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা মনের আকাঙ্ক্ষা ও রাজনৈতিক বাস্তবতার মধ্যে দ্বন্দ্ব: তারেক রহমানের মন্তব্য বাজারে মৌসুমি সবজির সরবরাহ বৃদ্ধি ও দাম কমে যাচ্ছে

বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজারে ফিরতে শুরু করেছে

দেশের শেয়ারবাজারে দীর্ঘ সময় ধরে বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীর সংখ্যা কমছিল। তবে সেপ্টেম্বর মাসে সেই প্রবণতায় কিছুটা পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। সম্প্রতি প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাবের সংখ্যা ৪০টি বাড়ে। পাশাপাশি, স্থানীয় বিনিয়োগকারীরাও শেয়ার বাজারে আরও সক্রিয় হয়েছেন।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও সিডিবিএলের তথ্য বলছে, ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বিদেশি ও প্রবাসীদের নামে সক্রিয় বিও হিসাব ছিল ৪৩ হাজার ৭৬১টি। তবে সেপ্টেম্বরের শেষ পর্যন্ত তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৩ হাজার ৮০১টিতে। যদিও এই সংখ্যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এখনও কম, যেখানে অক্টোবরে ছিল ৫৫ হাজার ৫১২টি। অর্থাৎ, এক বছরে এই হিসাব কমেছে ১১ হাজার ৭১১টি।

অন্যদিকে, দেশি বিনিয়োগকারীরাও মাসের ব্যবধানে শেয়ার বাজারে আরও সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। আগস্টে দেশের বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব ছিল ১৫ লাখ ৮৪ হাজার ১০৪টি, যা সেপ্টেম্বরে বেড়ে ১৫ লাখ ৯০ হাজার ৬৯৫টিতে দাঁড়ায়। এক মাসে এ সংখ্যা বাড়ে ৬ হাজার ৫৯১টি। তবে চলতি বছরের শুরুতে বিও হিসাবের মোট সংখ্যা ছিল ১৭ লাখ ৭৩ হাজার ৫৫১টি, যা বর্তমানে কমে দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ৫২ হাজার ২২৭টিতে। এর অর্থ, নয় মাসে এই হিসাবের সংখ্যা কমেছে প্রায় ১ লাখ ২১ হাজার ৩২৪টি।

বিনিয়োগকারীর ধরন অনুযায়ী দেখা যায়, সেপ্টেম্বর মাসে পুরুষ বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বেড়েছে ৫ হাজার ৫৭৮টি, আর নারীর সংখ্যা বেড়েছে ১ হাজার ৪৯টি। এছাড়াও, কোম্পানির হিসাব বেড়েছে ১৯৯টি, একক নামে বেড়েছে ৬ হাজার ২৩০টি এবং যৌথ নামে বেড়েছে ১ হাজার ৪০৮টি।

তবে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বাড়লেও, বাজারের সূচক ও মূলধন অনুযায়ী তা ইতিবাচক প্রভাব ফেলেনি। আগস্টের শেষের দিকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ছিল ৫ হাজার ৫৯৪ পয়েন্ট, যা সেপ্টেম্বরে কমে ৫ হাজার ৪১৫ পয়েন্টে দাঁড়ায়। অর্থাৎ, এক মাসের মধ্যে সূচক ১৭৯ পয়েন্ট কমেছে।

এছাড়াও, বাজারের মূলধন হ্রাস পেয়েছে। আগস্টের শেষের দিকে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল প্রায় ৭ লাখ ২৮ হাজার ৪৮ কোটি টাকা, যা সেপ্টেম্বরের মধ্যে কমে ৭ লাখ ২৫ হাজার ৬৩ কোটি টাকায় দাঁড়ায়। অর্থাৎ, মূলধন কমেছে প্রায় ২ হাজার ৮৫ কোটি টাকা।

লেনদেনের দিক থেকেও বাজার দুর্বল হয়ে পড়েছে। একসময় যেখানে দৈনিক হাজার কোটি টাকার উপরে লেনদেন হত, এখন তা হ্রাস পেয়ে ৬০০ কোটির কাছাকাছি। সেপ্টেম্বরের শেষ ১৫ কার্যদিবসে কোন দিনই লেনদেন হাজার কোটি টাকার বেশি হয়নি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীর অংশগ্রহণ বাড়ে যদিও তা বাজারের জন্য ইতিবাচক সূচক। তবে মৌলিক সমস্যাগুলোর সমাধান এখনো হয়নি, যার ফলে সূচক ও মূলধনের পতন বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুরোপুরি ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হয়েছে।

ট্যাগ :
সর্বাধিক পঠিত

বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজারে ফিরতে শুরু করেছে

প্রকাশিতঃ ১০:৪৮:৪৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৪ অক্টোবর ২০২৫

দেশের শেয়ারবাজারে দীর্ঘ সময় ধরে বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীর সংখ্যা কমছিল। তবে সেপ্টেম্বর মাসে সেই প্রবণতায় কিছুটা পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। সম্প্রতি প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাবের সংখ্যা ৪০টি বাড়ে। পাশাপাশি, স্থানীয় বিনিয়োগকারীরাও শেয়ার বাজারে আরও সক্রিয় হয়েছেন।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও সিডিবিএলের তথ্য বলছে, ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বিদেশি ও প্রবাসীদের নামে সক্রিয় বিও হিসাব ছিল ৪৩ হাজার ৭৬১টি। তবে সেপ্টেম্বরের শেষ পর্যন্ত তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৩ হাজার ৮০১টিতে। যদিও এই সংখ্যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এখনও কম, যেখানে অক্টোবরে ছিল ৫৫ হাজার ৫১২টি। অর্থাৎ, এক বছরে এই হিসাব কমেছে ১১ হাজার ৭১১টি।

অন্যদিকে, দেশি বিনিয়োগকারীরাও মাসের ব্যবধানে শেয়ার বাজারে আরও সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। আগস্টে দেশের বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব ছিল ১৫ লাখ ৮৪ হাজার ১০৪টি, যা সেপ্টেম্বরে বেড়ে ১৫ লাখ ৯০ হাজার ৬৯৫টিতে দাঁড়ায়। এক মাসে এ সংখ্যা বাড়ে ৬ হাজার ৫৯১টি। তবে চলতি বছরের শুরুতে বিও হিসাবের মোট সংখ্যা ছিল ১৭ লাখ ৭৩ হাজার ৫৫১টি, যা বর্তমানে কমে দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ৫২ হাজার ২২৭টিতে। এর অর্থ, নয় মাসে এই হিসাবের সংখ্যা কমেছে প্রায় ১ লাখ ২১ হাজার ৩২৪টি।

বিনিয়োগকারীর ধরন অনুযায়ী দেখা যায়, সেপ্টেম্বর মাসে পুরুষ বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বেড়েছে ৫ হাজার ৫৭৮টি, আর নারীর সংখ্যা বেড়েছে ১ হাজার ৪৯টি। এছাড়াও, কোম্পানির হিসাব বেড়েছে ১৯৯টি, একক নামে বেড়েছে ৬ হাজার ২৩০টি এবং যৌথ নামে বেড়েছে ১ হাজার ৪০৮টি।

তবে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বাড়লেও, বাজারের সূচক ও মূলধন অনুযায়ী তা ইতিবাচক প্রভাব ফেলেনি। আগস্টের শেষের দিকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ছিল ৫ হাজার ৫৯৪ পয়েন্ট, যা সেপ্টেম্বরে কমে ৫ হাজার ৪১৫ পয়েন্টে দাঁড়ায়। অর্থাৎ, এক মাসের মধ্যে সূচক ১৭৯ পয়েন্ট কমেছে।

এছাড়াও, বাজারের মূলধন হ্রাস পেয়েছে। আগস্টের শেষের দিকে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল প্রায় ৭ লাখ ২৮ হাজার ৪৮ কোটি টাকা, যা সেপ্টেম্বরের মধ্যে কমে ৭ লাখ ২৫ হাজার ৬৩ কোটি টাকায় দাঁড়ায়। অর্থাৎ, মূলধন কমেছে প্রায় ২ হাজার ৮৫ কোটি টাকা।

লেনদেনের দিক থেকেও বাজার দুর্বল হয়ে পড়েছে। একসময় যেখানে দৈনিক হাজার কোটি টাকার উপরে লেনদেন হত, এখন তা হ্রাস পেয়ে ৬০০ কোটির কাছাকাছি। সেপ্টেম্বরের শেষ ১৫ কার্যদিবসে কোন দিনই লেনদেন হাজার কোটি টাকার বেশি হয়নি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীর অংশগ্রহণ বাড়ে যদিও তা বাজারের জন্য ইতিবাচক সূচক। তবে মৌলিক সমস্যাগুলোর সমাধান এখনো হয়নি, যার ফলে সূচক ও মূলধনের পতন বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুরোপুরি ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হয়েছে।