দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৪৩০ জনের বেশি রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ সময় কারো মৃত্যু হয়নি। এখনও পর্যন্ত এই বছরে ডেঙ্গুতে মোট ১১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন প্রায় ৩০ হাজারের বেশি মানুষ। এর মধ্যে চলতি আগস্ট মাসে এখন পর্যন্ত ৮ হাজার ৯৬৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আসছেন, তাঁদের মধ্যে ৩৫ জন মারা গেছেন। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ১ হাজার ৪২৬ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন। তাদের মধ্যে ঢাকাতেই আছেন ৪৭৮ জন, আর বাকীরা ঢাকার বাইরে বিভিন্ন প্রদেশে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত প্রতিমাসে রোগীর সংখ্যা কেমন ছিল, তার একটি বিশ্লেষণও উঠে এসেছে এই প্রতিবেদনে। জানুয়ারিতে ১ হাজার ১৬১ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩৭৪ জন, মার্চে ৩৩৬ জন, এপ্রিলে ৭০১ জন, মে-তে ১ হাজার ৭৭৩ জন, জুনে ৫ হাজার ৯৫১ জন এবং জুলাইয়ে ১০ হাজার ৬৮৪ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। একই সময়ে মৃত্যুর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য—জানুয়ারিতে ১০, ফেব্রুয়ারিতে ৩, এপ্রিলে ৭, মে-তে ৩, জুনে ১৯ এবং জুলাইয়ে ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, আসন্ন সেপ্টেম্বরে উচ্চ আর্দ্রতা ও অবিরাম বর্ষণ চলতে থাকলে ডেঙ্গুর প্রকোপ আরও বাড়তে পারে। রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সম্প্রতি ঢাকার গুলশানে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে এক সম্মেলনে এই পরিস্থিতির একটি বিশদ রিপোর্ট উপস্থাপন করা হয়।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, অব্যাহত বৃষ্টিপাত ও অতীতের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী সেপ্টেম্বর মাসে ডেঙ্গু রোগের সংখ্যা দ্রুত বাড়তে পারে। এ জন্য হাসপাতালের চাপ বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে আশা করা হচ্ছে, অক্টোবরের শেষে বর্ষা আমলে পড়লে পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হবে। তবুও আবারও প্রাদুর্ভাবের আশঙ্কা থাকায় কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
এসময় মশা নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন সমস্যা উঠে এসেছে, যেখানে বলা হয়েছে, জনগণের সচেতনতার অভাব, সঠিক পরিকল্পনা এবং সরকারি উদ্যোগের আকাল এই পরিস্থিতির মূল কারণ। নগরায়ন ও পানির সমস্যা, আবহাওয়ার পরিবর্তন, বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয়হীনতা ও অপ্রচলিত ভ্রান্ত ধারণা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে। বিশেষজ্ঞরা সব মিলিয়ে বলছেন, মশক নিধন ও স্যানিটেশন কার্যক্রম জোরদার করতে হবে যাতে এই প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে আসে।