০৯:৫০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৭ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষঃ

বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতের গুরুত্ব 강조

ইউরোপীয় পার্লামেন্টের মানবাধিকার বিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান মৌনির সাতুরি বলেছেন, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাংলাদেশকে অবশ্যই অবাধ ও সন্ত্রাস মুক্ত নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। তিনি বলেন, এই নির্বাচন যদি সকলে সম্মান করে তবেই দেশের স্থিতিশীলতা ও গণতন্ত্রের ভিত্তি মজবুত হবে। ঢাকায় সফরকালে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা-বাসসকে তিনি এ কথা বলেন।

মৌনিার সাতুরি আরও বলেন, ক্ষমতা বিভাজন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, গণমাধ্যম ও জনপরিসর নিশ্চিত করা দেশের দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা ও গণতান্ত্রিক উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য। তিনি উল্লেখ করেন, ফেব্রুয়ারির নির্বাচন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, মানুষের জীবনমান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ফল যাই হোক না কেন, ইউরোপীয় পার্লামেন্ট পরবর্তী নির্বাচিত সংসদ ও সরকারগণের সঙ্গে সহযোগিতা চালিয়ে যাবে।

পরিদর্শনকালে মৌনির সাতুরি নেতৃত্বে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে এসে বিভিন্ন প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক স্তরের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। এই দলের অন্যান্য সদস্য ছিলেন ইসাবেল উইসেলার-লিমা, আরকাদিউস মুলারচিক, উরামাস পায়েত এবং ক্যাটারিনা ভিয়েরা।

বাংলাদেশে এই সফর কেন প্রয়োজন, এমন প্রশ্নে তিনি জানান, দেশটি বর্তমানে গণতান্ত্রিক উত্তরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় পার করছে এবং ইইউ অন্য দেশের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশকে নির্বাচন ও মানবাধিকার পরিস্থিতির খতিয়ান দেখছে। বিশেষ করে পার্টনারশিপ অ্যান্ড কো-অপারেশন অ্যাগ্রিমেন্ট (পিসিএ) নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছে তারা। এই চুক্তি দেশের মানবাধিকার, আইনী শাসন ও মৌলিক স্বাধীনতার বিষয়গুলোকে অন্তর্ভুক্ত করে।

সাতৌরি বলেন, ২০২৪ সালের জুলাইয়ের অভ্যুত্থানের পর থেকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কিছু অগ্রগতি দেখা গেছে। তবে প্রক্রিয়াটি এখনও পুরোপুরি সম্পন্ন হয়নি বলে তিনি উল্লেখ করেন। যদি সরকারের দ্বারা নেওয়া সংস্কারগুলো ব্যাপকভাবে সমর্থিত হয় এবং সংসদ সেগুলো বাস্তবায়ন করে, তাহলে দেশের উত্তরণ আরও দ্রুত হবে।

এছাড়া, প্রতিনিধি দল নাগরিক সমাজ, ট্রেড ইউনিয়ন, নিয়োগকর্তা, রাজনৈতিক দল ও সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। তাদের আগামী আলোচনায় অন্তর্বর্তী সরকারের নেতাদের সঙ্গে সাংবিধানিক সংস্কার বিষয়ক আলোচনা করার আশা প্রকাশ করেন তিনি।

সাথে তিনি পার্টনারশিপ অ্যান্ড কো-অপারেশন অ্যাগ্রিমেন্টের মাধ্যমে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এই চুক্তি অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েও কার্যকর থাকবে এবং ভবিষ্যতেও চালু থাকবে। জনগণের উদ্বেগ, স্বার্থ ও মানবাধিকার সংরক্ষণে এর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সফরকালে তিনি কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরও পরিদর্শন করেন এবং দেশের প্রচেষ্টার প্রশংসা ও আন্তর্জাতিক সাহায্যের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। বিশেষ করে, আট বছর ধরে এক মিলিয়নের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশের উদ্যোগের প্রশংসা করেন এবং বৈশ্বিক দায়িত্ব ভাগাভাগির আহ্বান জানিয়ে বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই কর্মসূচিতে অব্যাহত অর্থায়ন ও রাজনৈতিক সমাধানের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনে সহায়তা করবে।

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানে ৩০ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের সম্মেলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ঢাকায় সফরকালে তিনি বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

ট্যাগ :

বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতের গুরুত্ব 강조

প্রকাশিতঃ ১০:৪৭:৩১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ইউরোপীয় পার্লামেন্টের মানবাধিকার বিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান মৌনির সাতুরি বলেছেন, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাংলাদেশকে অবশ্যই অবাধ ও সন্ত্রাস মুক্ত নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। তিনি বলেন, এই নির্বাচন যদি সকলে সম্মান করে তবেই দেশের স্থিতিশীলতা ও গণতন্ত্রের ভিত্তি মজবুত হবে। ঢাকায় সফরকালে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা-বাসসকে তিনি এ কথা বলেন।

মৌনিার সাতুরি আরও বলেন, ক্ষমতা বিভাজন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, গণমাধ্যম ও জনপরিসর নিশ্চিত করা দেশের দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা ও গণতান্ত্রিক উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য। তিনি উল্লেখ করেন, ফেব্রুয়ারির নির্বাচন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, মানুষের জীবনমান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ফল যাই হোক না কেন, ইউরোপীয় পার্লামেন্ট পরবর্তী নির্বাচিত সংসদ ও সরকারগণের সঙ্গে সহযোগিতা চালিয়ে যাবে।

পরিদর্শনকালে মৌনির সাতুরি নেতৃত্বে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে এসে বিভিন্ন প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক স্তরের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। এই দলের অন্যান্য সদস্য ছিলেন ইসাবেল উইসেলার-লিমা, আরকাদিউস মুলারচিক, উরামাস পায়েত এবং ক্যাটারিনা ভিয়েরা।

বাংলাদেশে এই সফর কেন প্রয়োজন, এমন প্রশ্নে তিনি জানান, দেশটি বর্তমানে গণতান্ত্রিক উত্তরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় পার করছে এবং ইইউ অন্য দেশের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশকে নির্বাচন ও মানবাধিকার পরিস্থিতির খতিয়ান দেখছে। বিশেষ করে পার্টনারশিপ অ্যান্ড কো-অপারেশন অ্যাগ্রিমেন্ট (পিসিএ) নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছে তারা। এই চুক্তি দেশের মানবাধিকার, আইনী শাসন ও মৌলিক স্বাধীনতার বিষয়গুলোকে অন্তর্ভুক্ত করে।

সাতৌরি বলেন, ২০২৪ সালের জুলাইয়ের অভ্যুত্থানের পর থেকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কিছু অগ্রগতি দেখা গেছে। তবে প্রক্রিয়াটি এখনও পুরোপুরি সম্পন্ন হয়নি বলে তিনি উল্লেখ করেন। যদি সরকারের দ্বারা নেওয়া সংস্কারগুলো ব্যাপকভাবে সমর্থিত হয় এবং সংসদ সেগুলো বাস্তবায়ন করে, তাহলে দেশের উত্তরণ আরও দ্রুত হবে।

এছাড়া, প্রতিনিধি দল নাগরিক সমাজ, ট্রেড ইউনিয়ন, নিয়োগকর্তা, রাজনৈতিক দল ও সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। তাদের আগামী আলোচনায় অন্তর্বর্তী সরকারের নেতাদের সঙ্গে সাংবিধানিক সংস্কার বিষয়ক আলোচনা করার আশা প্রকাশ করেন তিনি।

সাথে তিনি পার্টনারশিপ অ্যান্ড কো-অপারেশন অ্যাগ্রিমেন্টের মাধ্যমে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এই চুক্তি অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েও কার্যকর থাকবে এবং ভবিষ্যতেও চালু থাকবে। জনগণের উদ্বেগ, স্বার্থ ও মানবাধিকার সংরক্ষণে এর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সফরকালে তিনি কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরও পরিদর্শন করেন এবং দেশের প্রচেষ্টার প্রশংসা ও আন্তর্জাতিক সাহায্যের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। বিশেষ করে, আট বছর ধরে এক মিলিয়নের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশের উদ্যোগের প্রশংসা করেন এবং বৈশ্বিক দায়িত্ব ভাগাভাগির আহ্বান জানিয়ে বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই কর্মসূচিতে অব্যাহত অর্থায়ন ও রাজনৈতিক সমাধানের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনে সহায়তা করবে।

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানে ৩০ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের সম্মেলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ঢাকায় সফরকালে তিনি বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।