बন্যা ও স্থায়ী জলাবদ্ধতা নিরসনে এ মাসেই তিনটি নদী ও দশটি সংযোগ খালের পুনঃখননের কাজ শুরু হবে। এ প্রকল্পের জন্য মোট বরাদ্দের পরিমাণ ধরা হয়েছে ১৩৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। সেনাবাহিনী প্রতিরক্ষা মাধ্যমে ৩টি নদীর মোট ৮২ কিলোমিটার এলাকায় এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে ১০টি সংযোগ খালের ৩১ কিলোমিটার এলাকায় পুনঃখনন কার্যক্রম চালু হবে।
কেশবপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, চলতি মাসে হরি নদীর ভবদহের ২১ ভেন্টের সুইস গেট থেকে উজানে ৭ কিলোমিটার এবং ভাটিতে খর্ণিয়া ব্রিজ পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার, খর্নিয়া ব্রিজ থেকে তেলিগাতি ঘ্যাংরাইল পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার, হরি নদীর শাখা আপার ভদ্রার কাশিমপুর থেকে মঙ্গলকোট ব্রিজ পর্যন্ত ১৮.৫ কিলোমিটার এবং বড়েঙ্গার তিন নদীর মোহনায় জিরো পয়েন্ট থেকে শুরু করে কেশবপুর, মনিরামপুর এবং রাজগঞ্জ রোডের পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ হরিহর নদীর পুনঃখনন কাজ হবে। একই সময়ে নদীর সংযোগ খালগুলোর মধ্যে নুরানিয়া (৬.৫ কিলোমিটার), বাদুড়িয়া (৩ কিলোমিটার), বুড়ি ভদ্রার শাখা খাল (৫ কিলোমিটার), গরালিয়া (১.৩৫ কিলোমিটার), কন্দর্পপুর (১ কিলোমিটার), কাশিমপুর (১ কিলোমিটার), ভায়না (১.৫০ কিলোমিটার), বিল খুকশিয়া (৭.৫০ কিলোমিটার), বুড়ুলি (৩ কিলোমিটার) এবং পাথরা খাল (১.৫০ কিলোমিটার) পুনঃখনন করা হবে। ইতোমধ্যেই পানি উন্নয়ন বোর্ড নদীর সীমানা নির্ধারণ করেছে এবং সেনাবাহিনী নদীগুলো পর্যবেক্ষণ করছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, কেশবপুর ও মনিরামপুরের বর্ষাকালে অতিরিক্ত পানির প্রবাহ হরি নদীর শাখা দেলুটি হয়ে শিবশা নদী দিয়ে সাগরে পতিত হয়। এসব নদীর সংযোগ খালে থাকা বহু পোল্ডার ও ৯১টি লুইস গেট একসঙ্গে কাজ করে, যার কারণে অতিরিক্ত পানি নদীতে প্রবেশ বা বের হতে পারে না। বিল খুকশিয়া এলাকার আট ভেন্ট সুইস গেটের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে ২৭টি বিভিন্ন ব্রিজ ও বিল, নূরনিয়া এলাকার চার ভেন্ট সুইস গেটের সঙ্গে ১২টি বিল, এবং ভবদহের ২১ ও ৯ ভেন্ট লুইস গেটের সঙ্গে ৫২টি বিভিন্ন বিল ও রেগুলেটর। এইসব অবকাঠামো পোল্ডারে আবদ্ধ থাকায় নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত হয় এবং জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।
এছাড়া কেশবপুরের বিভিন্ন বিলের মধ্যে রয়েছে ৫৯টি সরকারি খাল, যা মৎস্য চাষের জন্য দখল করে রাখা হয়েছে। মাছের ঘের প্রতিষ্ঠায় এসব খাল দখলমুক্ত করতে নানা দাবি উঠলেও, খুব বেশি কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
কেশবপুরের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সুমন সিকদার বলেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে জলাবদ্ধতা ও বন্যা নিরসনের জন্য মোট ৩টি নদী ও ১০টি খাল পুনঃখননের জন্য সরকারের বরাদ্দ হয়েছে প্রায় ১৩৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৩টি নদীর কাজ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে সম্পন্ন হবে। ইতিমধ্যে সেনাবাহিনী নদী এলাকা পরিদর্শন সম্পন্ন করেছে। এই উদ্যোগ সফল হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে ও জলাবদ্ধতা অনেকটাই কমে যাবে।