০৭:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ২৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষঃ
শুক্রবারের মধ্যে জুলাই সংবিধানের চূড়ান্ত রোডম্যাপ প্রকাশের আশা স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট নভেম্বরের মধ্যে চায় জামায়াত হাসিনার বিরুদ্ধে আজ সাক্ষ্য দেবেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এনবিআরের সিদ্ধান্ত: এমপি কোটার ৩০ বিলাসবহুল গাড়ি নিলামে বিক্রির পরিবর্তে হস্তান্তর তীব্র যানজটে আটকা পড়ে সড়ক উপদেষ্টা মোটরসাইকেলে গন্তব্যে পৌঁছেছেন ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনের পাশে আবর্জনার স্তূপ ঢেকে দেওয়া হলো বিশিষ্ট উপদেষ্টার আগমনের জন্য পাঁচ দিন ধরে সাগরে ভাসমান ২৬ জেলেকে উদ্ধার করলো নৌ বাহিনী মেনন-পলক-দস্তগীরসহ চারজনের বিরুদ্ধে নতুন মামলায় গ্রেফতার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তুরস্কের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ: দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও জোরদার করার প্রত্যয়

কেন বাংলাদেশের ‘বিপদের বন্ধু’ মোস্তাফিজ?

মোস্তাফিজুর রহমান খুব কম কথাই বলে থাকেন। তার শান্ত ও নম্র স্বভাবের জন্য সাংবাদিকরাও তাকে অত্যন্ত পছন্দ করেন। নিউজের সামনে না গেলে, যখন তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন, তখন বেশিরভাগ প্রশ্নের উত্তরই তিনি সংক্ষিপ্ত করে দেন, কখনো এক বাক্যে বা এক বা দুই শব্দে। তবে এই চুপচাপ বার্তাই তার গোপন শক্তির ইঙ্গিত দেয়। তারপরও দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা জানেন, তার সঙ্গে কখনোই খারাপ মেজাজ বা হতাশা দেখা যায় না। বরং তার মধ্যে রয়েছে এক অদ্ভুত আত্মবিশ্বাস ও সততা। ক্রিকেটের বাইরে মাঠের বাইরে দেখা যায় তাকে হাসতে হাসতে একান্তই উচ্ছ্বল। একদা আবুধাবি থেকে দুবাই আসার পথে, বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, সবার লাগেজ সাজানোর পরে মোস্তাফিজ হঠাৎ করে হোটেলের গেটের কাছে নয়, পেস বোলিং কোচ টেইটের সঙ্গে দেখা করে যান। সেখানে এসে তিনি একবার টেইটের গোটা শরীরে হাত রাখেন, আবার হেসে সরিয়ে দেন। এই ছোটখাটো দুষ্টুমিতে দুজনকেই দেখা যায় নির্লিপ্ত ও খুশি মুখাবয়বে। স্পেনে অস্ট্রেলীয় কোচের সেই কথন বলছে, ‘আমার কাজ হচ্ছে মোস্তাফিজকে খুশি ও আত্মবিশ্বাসী রাখা। বাকিটা সে নিজেই করে ফেলবে।’ সত্যিই, মোস্তাফিজের পারফরম্যান্সে সেই বিশ্বাস অন DowntimeuclearMatcherInitializeCorrection Idfighter অসাম্প্রদায়িক। ধারাবাহিকভাবে তিনি দলের জন্য বড় সুবিধা, বিশেষ করে দরকারের সময়। গত শনিবার দুবাইয়ে এশিয়া কাপের সুপার ফোরের এক গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে, যখন দল ঝুলে পড়েছিল, তখনই মোস্তাফিজ নিজেকে প্রমাণ করেছেন। রাজকীয় স্পিডে পেস করে, প্রথমে ৩ রান দিয়ে ওভার শেষ করেন তিনি, এরপর দ্বিতীয় ওভারে এসে কুশল মেন্ডিসের উইকেট তুলে নেন। দলের প্রয়োজনের সময় তিনি আরেকবার উইকেটের দেখা দেন। সুপার ফোরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে, দায়িত্ব নিয়ে প্রথমে চারটি বলের মধ্যে একটিতে চার হাঁকান শানাকা, এরপর চতুর্থ বল চমৎকার ক্যাচে পরিণত করে আসালাঙ্কাকে আউট করেন মোস্তাফিজ। পরবর্তী ওভারে আবার তিনি আসেন, যেখানে তার নামের প্রতি সততা ও দক্ষতা প্রকট। হোয়িটলি ডেলিভারিতে, শেষের দিকে রান বাড়া ও উইকেট’র ঝুঁকি থাকলেও, স্মার্ট খেলেন মোস্তাফিজ। প্রথম বলে একটু ধৈর্য্য দেখান, পঞ্চম বলেই শানাকার ক্যাচ ধরেন, আর ওভারে মোট ৫ রান দেন। এরপর আবারও মোস্তাফিজ মাঠে ওঠেন এবং সাবলীলভাবে শ্রীলঙ্কার দলকে চাপে রাখেন। ওভারে ৫ রান খরচ করে, তিনটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে নেন, যার মধ্যে আসালাঙ্কা ও হাসারাঙ্গাকে আউট করেন। শেষমেষ, এই পারফরম্যান্সে তিনি দলকে জেতাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এই গৌরবময় দৃশ্যগুলো শুধু গত শনিবারের ঘটনা নয়, দেশে-বিদেশে তার অবদানের এক বড়ই স্পষ্ট ছবি। তিনি বাংলাদেশের জন্য এক নিখুঁত ‘ত্রাতা’ হিসেবে বারবার প্রমাণ করেছেন, বিশেষ করে ডেথ ওভারে, যেখানে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে তার গড় রানপ্রতি ওভার ৭.৯২। টিমের জেতার জন্য তিনি সংগ্রাম করে থাকেন। মোট ১০৩ উইকেট তার ক্যারিয়ারে, ওভারপ্রতি গড়ে ৬.২০ রান দিয়ে। এই বছর আরও বেশি দেখানো হয়েছে তার সামর্থ্য। তবে, একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, বাংলাদেশ শুধু মোস্তাফিজের জন্যই জিতেছে তা নয়। আসলে, এই বছর তার ছাড়া ৮টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে বাংলাদেশের হার নিশ্চিত। অন্যদিকে, মোস্তাফিজের খেলা ফলাফলে বড় অবদান রেখেছে, এরকম ম্যাচের সংখ্যাও কম নয়। এককভাবে তার সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়েছে এবারের এশিয়া কাপের সুপার ফোরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে। সেখানেও তিনি দলের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ম্যাচের শেষে সাইফ হাসান বলেছিলেন, ‘তিনি যখন বল করেন, তখন দল সংকটময় পরিস্থিতিতে থাকে। তিনি যখন বল করেন, তখন দলের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বিপদের সময়ই আসেন বোলিংয়ে।’ সত্যিই, মোস্তাফিজ বাংলাদেশের বিপদের বন্ধু ও আশ্রয়। তার উপস্থিতি থাকলে, বাংলাদেশ জিততে পারে—অর্থাৎ, তিনি দলের ‘বিপদের বন্ধু’ ও ‘ত্রাতা’।

ট্যাগ :
সর্বাধিক পঠিত

কেন বাংলাদেশের ‘বিপদের বন্ধু’ মোস্তাফিজ?

প্রকাশিতঃ ১০:৫২:০৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

মোস্তাফিজুর রহমান খুব কম কথাই বলে থাকেন। তার শান্ত ও নম্র স্বভাবের জন্য সাংবাদিকরাও তাকে অত্যন্ত পছন্দ করেন। নিউজের সামনে না গেলে, যখন তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন, তখন বেশিরভাগ প্রশ্নের উত্তরই তিনি সংক্ষিপ্ত করে দেন, কখনো এক বাক্যে বা এক বা দুই শব্দে। তবে এই চুপচাপ বার্তাই তার গোপন শক্তির ইঙ্গিত দেয়। তারপরও দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা জানেন, তার সঙ্গে কখনোই খারাপ মেজাজ বা হতাশা দেখা যায় না। বরং তার মধ্যে রয়েছে এক অদ্ভুত আত্মবিশ্বাস ও সততা। ক্রিকেটের বাইরে মাঠের বাইরে দেখা যায় তাকে হাসতে হাসতে একান্তই উচ্ছ্বল। একদা আবুধাবি থেকে দুবাই আসার পথে, বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, সবার লাগেজ সাজানোর পরে মোস্তাফিজ হঠাৎ করে হোটেলের গেটের কাছে নয়, পেস বোলিং কোচ টেইটের সঙ্গে দেখা করে যান। সেখানে এসে তিনি একবার টেইটের গোটা শরীরে হাত রাখেন, আবার হেসে সরিয়ে দেন। এই ছোটখাটো দুষ্টুমিতে দুজনকেই দেখা যায় নির্লিপ্ত ও খুশি মুখাবয়বে। স্পেনে অস্ট্রেলীয় কোচের সেই কথন বলছে, ‘আমার কাজ হচ্ছে মোস্তাফিজকে খুশি ও আত্মবিশ্বাসী রাখা। বাকিটা সে নিজেই করে ফেলবে।’ সত্যিই, মোস্তাফিজের পারফরম্যান্সে সেই বিশ্বাস অন DowntimeuclearMatcherInitializeCorrection Idfighter অসাম্প্রদায়িক। ধারাবাহিকভাবে তিনি দলের জন্য বড় সুবিধা, বিশেষ করে দরকারের সময়। গত শনিবার দুবাইয়ে এশিয়া কাপের সুপার ফোরের এক গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে, যখন দল ঝুলে পড়েছিল, তখনই মোস্তাফিজ নিজেকে প্রমাণ করেছেন। রাজকীয় স্পিডে পেস করে, প্রথমে ৩ রান দিয়ে ওভার শেষ করেন তিনি, এরপর দ্বিতীয় ওভারে এসে কুশল মেন্ডিসের উইকেট তুলে নেন। দলের প্রয়োজনের সময় তিনি আরেকবার উইকেটের দেখা দেন। সুপার ফোরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে, দায়িত্ব নিয়ে প্রথমে চারটি বলের মধ্যে একটিতে চার হাঁকান শানাকা, এরপর চতুর্থ বল চমৎকার ক্যাচে পরিণত করে আসালাঙ্কাকে আউট করেন মোস্তাফিজ। পরবর্তী ওভারে আবার তিনি আসেন, যেখানে তার নামের প্রতি সততা ও দক্ষতা প্রকট। হোয়িটলি ডেলিভারিতে, শেষের দিকে রান বাড়া ও উইকেট’র ঝুঁকি থাকলেও, স্মার্ট খেলেন মোস্তাফিজ। প্রথম বলে একটু ধৈর্য্য দেখান, পঞ্চম বলেই শানাকার ক্যাচ ধরেন, আর ওভারে মোট ৫ রান দেন। এরপর আবারও মোস্তাফিজ মাঠে ওঠেন এবং সাবলীলভাবে শ্রীলঙ্কার দলকে চাপে রাখেন। ওভারে ৫ রান খরচ করে, তিনটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে নেন, যার মধ্যে আসালাঙ্কা ও হাসারাঙ্গাকে আউট করেন। শেষমেষ, এই পারফরম্যান্সে তিনি দলকে জেতাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এই গৌরবময় দৃশ্যগুলো শুধু গত শনিবারের ঘটনা নয়, দেশে-বিদেশে তার অবদানের এক বড়ই স্পষ্ট ছবি। তিনি বাংলাদেশের জন্য এক নিখুঁত ‘ত্রাতা’ হিসেবে বারবার প্রমাণ করেছেন, বিশেষ করে ডেথ ওভারে, যেখানে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে তার গড় রানপ্রতি ওভার ৭.৯২। টিমের জেতার জন্য তিনি সংগ্রাম করে থাকেন। মোট ১০৩ উইকেট তার ক্যারিয়ারে, ওভারপ্রতি গড়ে ৬.২০ রান দিয়ে। এই বছর আরও বেশি দেখানো হয়েছে তার সামর্থ্য। তবে, একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, বাংলাদেশ শুধু মোস্তাফিজের জন্যই জিতেছে তা নয়। আসলে, এই বছর তার ছাড়া ৮টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে বাংলাদেশের হার নিশ্চিত। অন্যদিকে, মোস্তাফিজের খেলা ফলাফলে বড় অবদান রেখেছে, এরকম ম্যাচের সংখ্যাও কম নয়। এককভাবে তার সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়েছে এবারের এশিয়া কাপের সুপার ফোরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে। সেখানেও তিনি দলের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ম্যাচের শেষে সাইফ হাসান বলেছিলেন, ‘তিনি যখন বল করেন, তখন দল সংকটময় পরিস্থিতিতে থাকে। তিনি যখন বল করেন, তখন দলের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বিপদের সময়ই আসেন বোলিংয়ে।’ সত্যিই, মোস্তাফিজ বাংলাদেশের বিপদের বন্ধু ও আশ্রয়। তার উপস্থিতি থাকলে, বাংলাদেশ জিততে পারে—অর্থাৎ, তিনি দলের ‘বিপদের বন্ধু’ ও ‘ত্রাতা’।