জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও গণঅধিকার পরিষদের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আলোচনা এখন জোরেশোরে চলছে, যা দেশের রাজনৈতিক দুনিয়ায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের সূচনা হতে পারে। গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন জানিয়েছেন, এই আলোচনাগুলি ইতিবাচকভাবে অগ্রসর হচ্ছে, এবং কেউ যদি এই উদ্যোগের অন্তরায় হয়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে, তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এর বিরোধিতা না করে উৎসাহ প্রদান করতে সবাইকে অনুরোধ করেছেন। তিনি রোববার রাতে নিজের ফেসবুক পেজে একটি পোস্টে এ বিষয়টি উল্লেখ করেন।
রাশেদ খাঁনের মতে, তরুণরা একযোগে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার এই প্রক্রিয়াটিকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করছে। তিনি উল্লেখ করেন, যদি এই ঐক্যবদ্ধ পথচলা শুরু হয়, তাহলে দেশের রাজনীতিতে অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। উল্লেখ্য, এনসিপি ও গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা আগে থেকেই বিভিন্ন সময়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন, ডাকসু নির্বাচনের প্রচারণা, মোদির আগমন প্রতিরোধসহ বিভিন্ন আন্দোলনে একসাথে অংশগ্রহণ করে আসছেন। এছাড়া, ২০২৪ সালে গণঅভ্যুত্থানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্ল্যাটফর্মেও তাঁদের মধ্যে গভীর সখ্যতা রয়েছে।
রাশেদ খাঁন আরও উল্লেখ করেন, এই ঐক্য প্রসঙ্গে উভয় পক্ষের নেতারা এখনও ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেছেন। তিনি বিশেষ করে অনুরোধ করেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন কোনও মন্তব্য না করা হয়, যা এই ঐক্য প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
অপরদিকে, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী জানিয়েছেন, রাজনৈতিক দৃশ্যপটে এখন তিনটি বড় ব্লক তৈরি হচ্ছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে ইসলামিক ব্লক, অন্যটি বিএনপির নেতৃত্বে আরেকটি বড় রাজনৈতিক জোট, এবং তৃতীয়টি হচ্ছে নিজস্ব পর্যায় থেকে এনসিপির নেতৃত্বে একটি স্বতন্ত্র ব্লক। তিনি_confirm করেন যে, এনসিপি গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে একীভূত হওয়ার গুঞ্জন সত্য, আর এর মূল কারণ হ’ল তাদের লক্ষ্য ও আদর্শের প্রতি অঙ্গাঙ্গী আবদ্ধতা।
তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী, তারা নতুন জোটের জন্য আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করছে। এনসিপি ভবিষ্যতে শাপলা প্রতীক নিয়ে ১৫০টির মতো আসনে নির্বাচন করার আশা ব্যক্ত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, এই ব্লক তিনটি—ইসলামিক, বিএনপি পরিচালিত, এবং জামায়াতের—এর বাইরে থাকবে, কারণ তারা ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক স্বচ্ছতার ভিত্তিতে স্বতন্ত্র।
তিনি আরও বলেন, তরুণদের নিয়ে একত্রে কাজ করে তা গণমাধ্যমে তুলে ধরা হবে, এবং এই একীকরণের পথে চলমান আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী স্বীকার করেন, গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া তরুণরা ও আগ্রহী অন্য আরও অনেকের সঙ্গে আলোচনা চালু রয়েছে, আর এই একযোগে কাজ করার জন্য তারা সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, বৃহৎ তরুণ এলায়েন্স গড়ে উঠবে এবং এনসিপির হাতে ১৫০টির বেশি আসন থাকবে। তিনি এটাও উল্লেখ করেন, আগামী দিনে এমন হয় যে, দেশের সংসদে আওয়ামী লীগ বা জাতীয় পার্টি থাকবে না। অবশেষে, প্রতীক ও দলীয় নামের ক্ষেত্রে, এনসিপির বর্তমান নাম ও প্রতীক বজায় থাকবে, এবং আরও অনেক দল তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বড় একটি রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তুলতে যাচ্ছে।