০৬:২২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ২৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষঃ
তীব্র যানজটে আটকা পড়ে সড়ক উপদেষ্টা মোটরসাইকেলে গন্তব্যে পৌঁছেছেন ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনের পাশে আবর্জনার স্তূপ ঢেকে দেওয়া হলো বিশিষ্ট উপদেষ্টার আগমনের জন্য পাঁচ দিন ধরে সাগরে ভাসমান ২৬ জেলেকে উদ্ধার করলো নৌ বাহিনী মেনন-পলক-দস্তগীরসহ চারজনের বিরুদ্ধে নতুন মামলায় গ্রেফতার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তুরস্কের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ: দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও জোরদার করার প্রত্যয় আওয়ামী লীগের বিচারকাজের জন্য আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু জয়পুরহাটের কানাইপুকুর গ্রামে বিরল শামুকখোল পাখির অভয়ারণ্য শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়ার প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন সিইসির মনে অবস্থান: এবারের নির্বাচন জীবনশেষের সুযোগ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিদায় সাক্ষাৎ জাতিসংঘের অভিবাসী সমন্বয়কের

দুদক চেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান ও সাবেক ১৯ কর্মকর্তার বিস্তারিত তথ্য

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বর্তমান ও সাবেক মোট ১৯ জন কর্মকর্তার বিস্তারিত তথ্য চেয়েছেন। এই তালিকায় রয়েছেন তিন সাবেক গভর্নর, কয়েকজন সাবেক ডেপুটি গভর্নর, নির্বাহী পরিচালক, তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের কর্মকর্তাসহ দুই ভারতীয় নাগরিক। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরকে পাঠানো এক চিঠিতে এই তথ্য সংগ্রহের নির্দেশ দেয়া হয়। চিঠিতে বলা হয়, কর্মকর্তাদের পাসপোর্ট বা জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, দায়িত্বের পরিধি, কর্মস্থল, এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য তথ্য জমা দিতে হবে। দুদকের সূত্র জানায়, ২০১৬ সালে ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলা, নীতি নির্ধারনে শিথিলতা এবং ক্ষমতার অপব্যবহার প্রমাণের জন্য এই অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে। তালিকায় থাকা কয়েকজন সাবেক গভর্নর হলেন ড. আতিউর রহমান, ফজলে কবির এবং আব্দুর রউফ তালুকদার। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে রিজার্ভ চুরির সময় ড. আতিউর রহমান দায়িত্বে ছিলেন, এরপর তিনি ১৫ মার্চ পদত্যাগ করেন। এছাড়াও, সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী, আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান, এস এম মনিরুজ্জামান, কাজী ছাইদুর রহমান, আবু ফরাহ মো. নাছের, আহমেদ জামাল, এবং বিএফআইইউ’র সাবেক প্রধান মো. মাসুদ বিশ্বাসের তথ্যও চাওয়া হয়েছে। আরও রয়েছেন সাবেক নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা। বর্তমানে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের মধ্যে আছেন রাজশাহীর নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক, আইসিটি বিভাগের দেবদুলাল রায়, কমন সার্ভিস বিভাগের মো. তফাজ্জল হোসেন, বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক এবং অফিসার্স কাউন্সিলের সভাপতি মাসুম বিল্লাহ, মো. মসিউজ্জামান খান ও রাহাত উদ্দিন। উল্লেখ্য, মসিউজ্জামান খান একাধিকবার নাম আসলেও নিশ্চিত করা হয়েছে যে, তারা একই ব্যক্তি। মো. মেজবাউল হক ১৪ সেপ্টেম্বর এক মাসের নোটিশ দিয়ে পদত্যাগ করেন। দুদকের তদন্তকারীরা বলছেন, রিজার্ভ আয়রক্ষণ ও লেনদেন ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত বিভাগগুলোতে দায়িত্বে থাকা অনেক কর্মকর্তাই এ ঘটনায় জড়িত ছিলেন। ২০১৬ সালে রিজার্ভ চুরির ঘটনা ঘটে ৪ ফেব্রুয়ারি, যখন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব থেকে প্রায় ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় পাঠানো দুই কোটি ডলার অবিলম্বে ফেরত আসে। ফিলিপাইনে মোট আট কোটি ১০ লাখ ডলার স্থানান্তর হয়, যার মধ্যে প্রায় দেড় কোটি ডলার পরবর্তীতে ফেরত আসে। এখনও বাকি ছয় কোটি ৬০ লাখ ডলার উদ্ধারে ১২টি মামলা চলমান রয়েছে। এই ঘটনার সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের মূল বিভাগগুলি ছিল, ফরেক্স রিজার্ভ ও ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট, আইটি, পেমেন্ট সিস্টেম ও অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং। এছাড়া, দুদকের চিঠিতে ভারতীয় নাগরিক নীলা ভান্নান ও রাকেশ আস্তানার নামও উল্লেখ করা হয়। নীলা ভান্নান রিজার্ভ চুরির আগেই বাংলাদেশের ব্যাংকের সঙ্গে তিনটি ব্যাংকের লেনদেন নিষ্পত্তির জন্য ‘সুইফট’ সংযোগের কাজ করেন। এর পাশাপাশি, রিজার্ভ চুরির পর সাইবার সিকিউরিটি দুর্বলতা নির্ণয় ও ‘ফায়ারওয়াল’ ভেদ করে টাকা স্থানান্তর কিভাবে হয়েছিল, তা তদন্তে রাকেশ আস্তানাকে বিশেষজ্ঞ হিসেবে নিয়োগ দেন তৎকালীন গভর্নর ড. আতিউর রহমান। দুদকের কর্মকর্তা বলছেন, তদন্তের স্বার্থে এই সব তথ্য যাচাই করার পরে পরবর্তী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ট্যাগ :
সর্বাধিক পঠিত

দৌলতপুরে মা ইলিশ রক্ষায় অভিযান, অবৈধ জাল জব্দ ও জেলেকে জরিমানা

দুদক চেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান ও সাবেক ১৯ কর্মকর্তার বিস্তারিত তথ্য

প্রকাশিতঃ ১০:৪৬:২২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৫

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বর্তমান ও সাবেক মোট ১৯ জন কর্মকর্তার বিস্তারিত তথ্য চেয়েছেন। এই তালিকায় রয়েছেন তিন সাবেক গভর্নর, কয়েকজন সাবেক ডেপুটি গভর্নর, নির্বাহী পরিচালক, তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের কর্মকর্তাসহ দুই ভারতীয় নাগরিক। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরকে পাঠানো এক চিঠিতে এই তথ্য সংগ্রহের নির্দেশ দেয়া হয়। চিঠিতে বলা হয়, কর্মকর্তাদের পাসপোর্ট বা জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, দায়িত্বের পরিধি, কর্মস্থল, এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য তথ্য জমা দিতে হবে। দুদকের সূত্র জানায়, ২০১৬ সালে ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলা, নীতি নির্ধারনে শিথিলতা এবং ক্ষমতার অপব্যবহার প্রমাণের জন্য এই অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে। তালিকায় থাকা কয়েকজন সাবেক গভর্নর হলেন ড. আতিউর রহমান, ফজলে কবির এবং আব্দুর রউফ তালুকদার। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে রিজার্ভ চুরির সময় ড. আতিউর রহমান দায়িত্বে ছিলেন, এরপর তিনি ১৫ মার্চ পদত্যাগ করেন। এছাড়াও, সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী, আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান, এস এম মনিরুজ্জামান, কাজী ছাইদুর রহমান, আবু ফরাহ মো. নাছের, আহমেদ জামাল, এবং বিএফআইইউ’র সাবেক প্রধান মো. মাসুদ বিশ্বাসের তথ্যও চাওয়া হয়েছে। আরও রয়েছেন সাবেক নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা। বর্তমানে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের মধ্যে আছেন রাজশাহীর নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক, আইসিটি বিভাগের দেবদুলাল রায়, কমন সার্ভিস বিভাগের মো. তফাজ্জল হোসেন, বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক এবং অফিসার্স কাউন্সিলের সভাপতি মাসুম বিল্লাহ, মো. মসিউজ্জামান খান ও রাহাত উদ্দিন। উল্লেখ্য, মসিউজ্জামান খান একাধিকবার নাম আসলেও নিশ্চিত করা হয়েছে যে, তারা একই ব্যক্তি। মো. মেজবাউল হক ১৪ সেপ্টেম্বর এক মাসের নোটিশ দিয়ে পদত্যাগ করেন। দুদকের তদন্তকারীরা বলছেন, রিজার্ভ আয়রক্ষণ ও লেনদেন ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত বিভাগগুলোতে দায়িত্বে থাকা অনেক কর্মকর্তাই এ ঘটনায় জড়িত ছিলেন। ২০১৬ সালে রিজার্ভ চুরির ঘটনা ঘটে ৪ ফেব্রুয়ারি, যখন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব থেকে প্রায় ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় পাঠানো দুই কোটি ডলার অবিলম্বে ফেরত আসে। ফিলিপাইনে মোট আট কোটি ১০ লাখ ডলার স্থানান্তর হয়, যার মধ্যে প্রায় দেড় কোটি ডলার পরবর্তীতে ফেরত আসে। এখনও বাকি ছয় কোটি ৬০ লাখ ডলার উদ্ধারে ১২টি মামলা চলমান রয়েছে। এই ঘটনার সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের মূল বিভাগগুলি ছিল, ফরেক্স রিজার্ভ ও ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট, আইটি, পেমেন্ট সিস্টেম ও অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং। এছাড়া, দুদকের চিঠিতে ভারতীয় নাগরিক নীলা ভান্নান ও রাকেশ আস্তানার নামও উল্লেখ করা হয়। নীলা ভান্নান রিজার্ভ চুরির আগেই বাংলাদেশের ব্যাংকের সঙ্গে তিনটি ব্যাংকের লেনদেন নিষ্পত্তির জন্য ‘সুইফট’ সংযোগের কাজ করেন। এর পাশাপাশি, রিজার্ভ চুরির পর সাইবার সিকিউরিটি দুর্বলতা নির্ণয় ও ‘ফায়ারওয়াল’ ভেদ করে টাকা স্থানান্তর কিভাবে হয়েছিল, তা তদন্তে রাকেশ আস্তানাকে বিশেষজ্ঞ হিসেবে নিয়োগ দেন তৎকালীন গভর্নর ড. আতিউর রহমান। দুদকের কর্মকর্তা বলছেন, তদন্তের স্বার্থে এই সব তথ্য যাচাই করার পরে পরবর্তী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।