এখন থেকে ৫০ বছর আগের কথা, যখন প্রথমবারের মতো ক্রিকেট বিশ্বকাপের আসর বসেছিল ইংল্যান্ডে। লর্ডস ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ঐ একেবারেই ঐতিহাসিক ফাইনালে প্রথম বিশ্বকাপের টিউন ওয়েস্ট ইন্ডিজের দর্শকপ্রিয় দলটি ঘরে তোলে। সেই দলটির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য, বিখ্যাত অলরাউন্ডার বার্নার্ড জুলিয়েন এখন আর আমাদের মাঝে নেই। রোববার উত্তর ত্রিনিদাদের শহর ভালসাইনে ৭৫ বছর বয়সে তার জীবনাবসান ঘটে।
১৯৭৫ সালের সেই বিশ্বকাপে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ফাইনালে তিনি কোনো উইকেট না পেলেও, ম্যাচের শেষ মুহূর্তে ২৬ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছেন, যা জয় নিশ্চিত করে। তবে তার মূল প্রভাব ছিল সেমিফাইনালে, যেখানে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুর্দান্ত বল করেছেন। বাঁহাতি পেসার হিসেবে ৪ উইকেট তুলে নিয়ে নিউজিল্যান্ডকে ১৫৮ রানে অলআউট করে দেন। এরপর গর্ডন গ্রিনিজ ও আলভিন কালিচরণের জোড়া ফিফটিতে ৫ উইকেটের জয় ডرامাটিকভাবে অর্জন করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
অতিরিক্তভাবে, গ্রুপ পর্বের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও ৪ উইকেট নেন তিনি। তার এই পারফরম্যান্সের জন্য ম্যাচসেরাও হন, যিনি তার দুর্দান্ত বোলিংয়ের জন্য প্রশংসিত হন। টুর্নামেন্টে মোট ৫ ম্যাচে অংশগ্রহণ করে ৪৮ রান ও ১০ উইকেট সংগ্রহ করেছিলেন তিনি, যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। তার সেই যোগ্যতা ও বিস্তৃত দক্ষতার জন্য অধিনায়ক ক্লাইভ লয়েড তার ওপর বিশেষ আস্থা রাখতেন। ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর গার্ডিয়ান পত্রিকায় লয়েড বলেছেন, ‘সে সব সময় শতভাগ দিয়ে কাজ করত। কখনো দায়িত্ব এড়ায়নি। তার ব্যাট-বলের পারফরম্যান্সের উপর আমি সব সময় ভরসা করতাম। সে সেরা পারফর্মের জন্য প্রস্তুত থাকত। কী দুর্দান্ত ক্রিকেটার ছিলেন সে!’
তবে, তার ক্যারিয়ার খুব দীর্ঘ হয়নি। ১৯৭৩ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের কিছু সময়ের মধ্যে ১৯৭৭ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করেন। ক্যারিয়ারে তিনি ২৪ টেস্ট ও ১২ ওয়ানডেতে অংশ নিয়েছেন। তার দুটি টেস্ট সেঞ্চুরিই ছিল, যার মধ্যে সবচেয়ে বড় ছিল ১২১ রানের ইনিংসটি, যা তিনি ক্রিকেটের তীর্থভূমি লর্ডসে খেলেছেন। ওয়ানডে ঘরে ৫০ উইকেটের বিপরীতে তিনি নিয়েছেন ১৮ উইকেট।
বার্নার্ড জুলিয়েন ছিলেন একজন অসাধারণ ক্রিকেটার এবং তার অবদান অবিস্মরণীয়। তার এই প্রস্থান sports দুনিয়াকে একজন দক্ষ ও কীর্তিমান খেলোয়াড়কে হারালো।