জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চূড়ান্ত করেছে যে, এমপি কোটা ধারণকারী ৩০টি বিলাসবহুল পাজেরো গাড়ি নিলামের পরিবর্তে সরকারি পরিবহন অধিদফতরে হস্তান্তর করা হবে। এসব গাড়ির মূল্য আনুমানিক প্রতিটি ১২ কোটি টাকা হলেও, প্রথম নিলামে দর ওঠেনি এবং দর মাত্র ১ লাখ থেকে ৩ কোটি টাকায় গিয়ে ঠেকে। এই পরিস্থিতিতে, রাজস্ব ক্ষতি এড়াতে এনবিআর কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজে চিঠি পাঠিয়েছে।
অবশেষে, এই জটিলতা দূর করতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাতে এসব গাড়ি যানবাহন অধিদফতরে হস্তান্তর করা হয়। চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপ-কমিশনার এইচ.এম. কবীর জানিয়েছেন, শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা এই গাড়িগুলো বিধিমালা অনুযায়ী হস্তান্তর করা হবে।
২০২২ সালে জাপানে প্রস্তুত এই জিপনে নির্মিত মডেলের গাড়িগুলোর আনুমানিক মূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা হলেও, ৮০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের কারণে বাংলাদেশের বাজারমূল্য তাৎক্ষণিকভাবে ১২ কোটি টাকার বেশি। তবে, সংসদ সদস্য হিসেবে শুল্কমুক্ত সুবিধা নিয়ে গাড়িগুলো আমদানি করা হয়েছিল। প্রথমে বন্দর থেকে ছাড় দেওয়ার আগেই সরকারের পতনের ফলে এসব গাড়ি নিয়ে নানা জটিলতা সৃষ্টি হয়। শেষ পর্যন্ত, এনবিআরের উদ্যোগে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, গাড়িগুলোর দর কম লেনদেন না হয়, বরং এগুলোর হস্তান্তর করা হবে সরকারি পরিবহন অধিদফতরে।
চট্টগ্রাম কাস্টমস বিডার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. ইয়াকুব চৌধুরী বলছেন, প্রথম নিলামে দর খুব কম থাকায় গাড়ি বিক্রি সম্ভব হত না এবং বাজারেও বিক্রি সহজ ছিল না। ফলে, দ্বিতীয় নিলামের আশায় থাকলেও, পরবর্তীতে নতুন সিদ্ধান্ত আসায় সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে।
এদিকে, কিছু গাড়ি ইতিমধ্যে ব্যবহারের জন্য নিলামের ভিত্তি মূল্য বাংলায় ৯ কোটি ৬০ লাখ টাকার মধ্যে ৫টি কিনেছেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। তবে, গাড়িগুলোর দাম এখনো পাওয়া যায়নি, কারণ এগুলো বন্দরে শেডে এক বছরের বেশি সময় ধরে নিরাপদে রাখা হয়েছে। এর জন্য বার্ষিক ফ্রেইট ও ওয়ারফেজ চার্জ আদায়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এমপি কোটা সংক্রান্ত এই জটিলতার বাইরে আরও ৩০০টিরও বেশি গাড়ি ২০ বছর বা তার বেশি পুরনো হয়ে বন্দরে আটকা পড়ে আছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব গাড়ি দ্রুত নিষ্পত্তি করলে, বন্দরগুলো বেশি রাজস্ব অর্জন করতে পারতেন। সরকারের কাছে এর জন্য দ্রুত পদক্ষেপ দাবি করেছেন অনেক মতবাদের ব্যক্তি।
অন্যদিকে, সরকার পতনের সময়, জুলাই মাসে, কয়েকজন ক্রিকেটার ও ব্যারিস্টারসহ অন্তত ৭ জনের গাড়ি ছাড় করে। এর মধ্যে রয়েছেন, অভিনেত্রী তারানা হালিম, জান্নাত আরা হেনরী, রাজনের মতো তারাও গাড়ি পেয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে, নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এমপি কোটা থেকেও গাড়ি বিক্রির জটিলতা দূর করতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।