বর্তমানে বাংলাদেশে সফররত পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল খান আজ রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) কার্যালয়ে চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। এই বৈঠকে দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের বর্তমান পরিস্থিতি এবং ভবিষ্যতোন্নয়নের উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
সাক্ষাৎকালে ঢাকা চেম্বার সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, দুই দেশের মানুষের সংস্কৃতি ও জীবনাচরণের মধ্যে অনেক মিল রয়েছে। বিশেষ করে পাকিস্তানের টেক্সটাইল ও জুয়েলারি পণ্য বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয়। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় এফটিএ স্বাক্ষরের প্রস্তাব দেওয়া হয়, যা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। পাকিস্তানের সঙ্গে যদি এই চুক্তি হয়, তাহলে দু’দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে ব্যাপক উন্নতি হবে।
তাসকীন আহমেদ আরও উল্লেখ করেন, সরাসরি বিমান ও কার্গো যোগাযোগ চালু হলে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।
অপরদিকে পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল খান বলেন, বাংলাদেশ ও পাকিস্তান উভয়ই তাদের রপ্তানিতে তৈরি পোশাক ও টেক্সটাইল খাতের উপর বেশ নির্ভরশীল। দু’দেশের উত্পাদিত পণ্যগুলোর বহুমুখীকরণের উপর গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। তিনি উল্লেখ করেন, ইউরোপ, কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাকের নতুন ডিজাইন ও পুনঃব্যবহার জনপ্রিয় হচ্ছে, যা বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করতে পারে।
প্রধান আলোচনায় তিনি আরও বলেন, পূর্ব আফ্রিকা ও মধ্য এশিয়া অঞ্চলে উভয় দেশের পণ্য রপ্তানি বাড়াতে মিলিতভাবে কাজ করা সম্ভব। পাশাপাশি পাকিস্তান সিমেন্ট, চিনি, পাদুকা ও চামড়াসহ অন্যান্য শিল্পে ভাল করছে, তাই বাংলাদেশ এসব পণ্য আমদানি করতে পারে। বাংলাদেশে উৎপাদিত ও অভিজ্ঞ ঔষধ খাতে পাকিস্তানের জন্য সম্ভাবনার জায়গা রয়েছে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, যদি কৃষি ও উৎপাদন প্রক্রিয়ায় নতুন প্রযুক্তি ও মূল্য সংযোজন বৃদ্ধি করা যায়, তাহলে এই খাতে দ্বিপাক্ষিক রপ্তানি আরও বাড়বে এবং অর্থনীতির বহুমাত্রিক উন্নয়ন সাধিত হবে।
আলোচনায় আরও জানানো হয় যে, পাকিস্তানের পণ্যের বাজার সম্প্রসারণে শিগগিরই বাংলাদেশে ‘সিঙ্গেল কান্ট্রি এক্সিবিশন’ আয়োজিত হবে, যা দু’দেশের বেসরকারি খাতে সম্পর্ক আরো জোরদার করবে।
উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার, ডিসিসিআইয়ের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি রাজিব এইচ চৌধুরী, সহ-সভাপতি মো. সালিম সোলায়মান, পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা এবং পাকিস্তান হাইকমিশনের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা।