০৪:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৫ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষঃ
দুর্গাপূজায় ভারতে রপ্তানি হবে ১২০০ টন ইলিশ দুদকের হাসপাতালের বিল গ্রহণে আসামি, বরখাস্থ হয়েছেন পরিচালক খান মো. মীজানুল ইসলাম পুরানো দিনের বাইস্কোপ এখন শুধুই স্মৃতি যুক্তরাষ্ট্রের আয়রন ডোম প্রকল্পের নেতৃত্বে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শরিফুল খান ডাকসু নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনের মডেল হিসেবে বিবেচিত হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাতীয় স্বার্থে বস্তুনিষ্ঠ ও জবাবদিহীমূলক গণমাধ্যম অপরিহার্য: পরিবেশ উপদেষ্টা পল্লী বিদ্যুৎ কর্মীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কাজে ফিরতে নির্দেশ নারী ও শিশুদের জন্য সাইবার স্পেস নিরাপদ করতে উদ্যোগ জরুরি: উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশীদ নির্বাচনের সময় গণমাধ্যমের বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ নিশ্চিতের আহ্বান আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস আজ

ভারতের জনপ্রিয় পারসিয়ানা সাময়িকী ৬০ বছর পরে বন্ধ হতে যাচ্ছে

ভারতীয় মুম্বাই শহরের ফোর্ট এলাকায় অবস্থিত একটি ঐতিহ্যবাহী ভবন এখন নতুন গথিক স্থাপত্যশৈলীতে পরিণত হয়েছে। এই ভবনের একটি ছোট অফিস থেকে শুরু করে, প্রায় ৬০ বছরেরও বেশি সময় ধরে পারসি সম্প্রদায়ের এক জনপ্রিয় সাময়িকী প্রকাশিত হয়ে আসছিল—‘পারসিয়ানা’। তবে এবার এটি আর প্রকাশিত হবে না, কারণ সাময়িকীর শেষ সংখ্যা প্রকাশের ঘোষণা গত আগস্টে দেওয়া হয়েছে।

১৯৬৪ সালে চিকিৎসক পেস্টনজি ওয়ার্ডেন এই ইংরেজি ভাষার সাময়িকীর সূচনা করেন। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল পারসি সম্প্রদায়ের মানুষজনের জীবনযাত্রা, সংস্কৃতি ও ঘটনাবলি রেকর্ড করা। পারসি বা জরথুস্ত্র ধর্মাবলম্বী মানুষরা সপ্তম-অষ্টম শতকে ইরান বা পারস্য থেকে ভারতে এসেছিল বলে ইতিহাসে পরিচিত।

১৯৭৩ সালে মাত্র এক রুপিতে এই সাময়িকীটি কিনে নেন সাংবাদিক জেহাঙ্গীর প্যাটেল। তার পর থেকে তিনি এই জরুরি দায়িত্ব পেয়ে যান। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তিনি মাসে দুইটি সংখ্যাটি প্রকাশ করতে শুরু করেন। সাহসী প্রতিবেদন, ব্যঙ্গ ও চিত্রকলার মাধ্যমে এটি দ্রুত সবার কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠে। ১৯৮৭ সালে সাময়িকীটি এমন এক সময় যা সব ধর্মের মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করে, বিশেষ করে এর আন্তঃধর্মীয় বিয়ের বিজ্ঞাপন দ্বারা ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়।

ছয় দশকেরও বেশি সময় প্রবাহে পারসিয়ানা শুধু একটি সাময়িকী নয়, বরং এটি পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে বসবাসরত জরথুস্ত্র ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে সংযোগের সেতুবন্ধন হয়ে উঠেছিল। পাকিস্তানভিত্তিক এক পাঠক বলেন, ‘এটি শুধু প্রকাশনা নয়, একপ্রকার সঙ্গী ও বন্ধুর মতো ছিল।’ অন্যদিকে, এক মার্কিন পাঠক মন্তব্য করেছিলেন, ‘এই সাময়িকী বিতর্কিত বিষয়গুলো সামনে আনে যা সমাজে আলোচনার ঝড় তোলে।’

অগাস্ট মাসে সাময়িকীর একটি সম্পাদকীয়তে বলা হয়, গ্রাহকসংখ্যা কমে যাওয়া, তহবিলের সংকট ও ভবিষ্যতপ্রজন্মের জন্য উত্তরসূরি পাওয়ার অক্ষমতার কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

৮০ বছর বয়সী জেহাঙ্গীর বলেন, ‘প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার আগে, এটির একটিও উৎসব বা কেকের অনুষ্ঠান থাকত না। এই সময়টা সত্যিই দুঃখের।’ তিনি মূলত নিজ ও সাবেক সহকর্মীদের নিয়ে ১৫ সদস্যের দলের সঙ্গে এই সাময়িকীটি চালিয়ে যেতেন। তার এই বন্ধের সিদ্ধান্তে তারা সবাই খুবই কষ্ট পাচ্ছেন। জেহাঙ্গীর বলেন, ‘শেষ দিনগুলোতে কোনও উৎসব বা উল্লাস থাকবে না, শুধু ভিড় আর বিষাদের ছায়া। এটি সত্যিই এক দুঃখের দিন।’

ট্যাগ :

তোশিমিৎসু মোতেগি জাপানের প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে দৌড়ে ঘোষে উঠলেন

ভারতের জনপ্রিয় পারসিয়ানা সাময়িকী ৬০ বছর পরে বন্ধ হতে যাচ্ছে

প্রকাশিতঃ ১০:৫৪:৪৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ভারতীয় মুম্বাই শহরের ফোর্ট এলাকায় অবস্থিত একটি ঐতিহ্যবাহী ভবন এখন নতুন গথিক স্থাপত্যশৈলীতে পরিণত হয়েছে। এই ভবনের একটি ছোট অফিস থেকে শুরু করে, প্রায় ৬০ বছরেরও বেশি সময় ধরে পারসি সম্প্রদায়ের এক জনপ্রিয় সাময়িকী প্রকাশিত হয়ে আসছিল—‘পারসিয়ানা’। তবে এবার এটি আর প্রকাশিত হবে না, কারণ সাময়িকীর শেষ সংখ্যা প্রকাশের ঘোষণা গত আগস্টে দেওয়া হয়েছে।

১৯৬৪ সালে চিকিৎসক পেস্টনজি ওয়ার্ডেন এই ইংরেজি ভাষার সাময়িকীর সূচনা করেন। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল পারসি সম্প্রদায়ের মানুষজনের জীবনযাত্রা, সংস্কৃতি ও ঘটনাবলি রেকর্ড করা। পারসি বা জরথুস্ত্র ধর্মাবলম্বী মানুষরা সপ্তম-অষ্টম শতকে ইরান বা পারস্য থেকে ভারতে এসেছিল বলে ইতিহাসে পরিচিত।

১৯৭৩ সালে মাত্র এক রুপিতে এই সাময়িকীটি কিনে নেন সাংবাদিক জেহাঙ্গীর প্যাটেল। তার পর থেকে তিনি এই জরুরি দায়িত্ব পেয়ে যান। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তিনি মাসে দুইটি সংখ্যাটি প্রকাশ করতে শুরু করেন। সাহসী প্রতিবেদন, ব্যঙ্গ ও চিত্রকলার মাধ্যমে এটি দ্রুত সবার কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠে। ১৯৮৭ সালে সাময়িকীটি এমন এক সময় যা সব ধর্মের মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করে, বিশেষ করে এর আন্তঃধর্মীয় বিয়ের বিজ্ঞাপন দ্বারা ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়।

ছয় দশকেরও বেশি সময় প্রবাহে পারসিয়ানা শুধু একটি সাময়িকী নয়, বরং এটি পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে বসবাসরত জরথুস্ত্র ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে সংযোগের সেতুবন্ধন হয়ে উঠেছিল। পাকিস্তানভিত্তিক এক পাঠক বলেন, ‘এটি শুধু প্রকাশনা নয়, একপ্রকার সঙ্গী ও বন্ধুর মতো ছিল।’ অন্যদিকে, এক মার্কিন পাঠক মন্তব্য করেছিলেন, ‘এই সাময়িকী বিতর্কিত বিষয়গুলো সামনে আনে যা সমাজে আলোচনার ঝড় তোলে।’

অগাস্ট মাসে সাময়িকীর একটি সম্পাদকীয়তে বলা হয়, গ্রাহকসংখ্যা কমে যাওয়া, তহবিলের সংকট ও ভবিষ্যতপ্রজন্মের জন্য উত্তরসূরি পাওয়ার অক্ষমতার কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

৮০ বছর বয়সী জেহাঙ্গীর বলেন, ‘প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার আগে, এটির একটিও উৎসব বা কেকের অনুষ্ঠান থাকত না। এই সময়টা সত্যিই দুঃখের।’ তিনি মূলত নিজ ও সাবেক সহকর্মীদের নিয়ে ১৫ সদস্যের দলের সঙ্গে এই সাময়িকীটি চালিয়ে যেতেন। তার এই বন্ধের সিদ্ধান্তে তারা সবাই খুবই কষ্ট পাচ্ছেন। জেহাঙ্গীর বলেন, ‘শেষ দিনগুলোতে কোনও উৎসব বা উল্লাস থাকবে না, শুধু ভিড় আর বিষাদের ছায়া। এটি সত্যিই এক দুঃখের দিন।’