০৪:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫, ৫ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষঃ
এনসিপি থেকে বহিষ্কারের পর মাহিনের বিশ্লেষণমূলক মন্তব্য নরওয়ে গবেষণা জাহাজ বঙ্গোপসাগরে মৎস্য ও ইকোসিস্টেম জরিপ শুরু করেছে বয়স হলে ভুল বোঝার ব্যাপারটা বুঝতে পারবে, তখন লজ্জিত হবে নিজেকে নিয়ন্ত্রকদের সম্পদ তদন্ত চাই দুদকের ইইউ ৪ মিলিয়ন ইউরো আর্থিক সহযোগিতা দেবে বাংলাদেশের নির্বাচন উন্নত করতে ইভেন্ট বুকিংয়ে এক বছরের জন্য ৫০% ছাড় দিচ্ছে আইসিসিএল ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার ঝিনাইদহের আওয়ামী লীগ সভাপতি পরীক্ষায় ফেল, টানা ২৬ বছর গৃহবন্দী নারীকে উদ্ধার খাদ্য মন্ত্রনালয়ের রেকর্ড পরিমাণ ধান ও চাল সংগ্রহ গাইবান্ধায় ১৪৯০ মিটার দীর্ঘ ‘মওলানা ভাসানী সেতু’ উদ্বোধন করবেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা

চট্টগ্রাম থেকে শুঁটকি রপ্তানিতে ধারাবাহিক বৃদ্ধির অভিযান

চট্টগ্রাম থেকে শুঁটকির রপ্তানি ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সদ্য সমাপ্ত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এই জেলা থেকে মোট ৩ হাজার ১২৬ টন শুঁটকি রপ্তানি করা হয়েছে, যার অর্থমূল্য প্রায় ৭০ লাখ ৩৫ হাজার মার্কিন ডলার। এটি পূর্ববর্তী অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ৫ লাখ ডলার বেশি, যা এই খাতে দেশের অর্থনীতির জন্য আশার আলো তৈরি করেছে।

বাংলাদেশ মৎস্য পর্যবেক্ষণ ও মান নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, চট্টগ্রাম দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শুঁটকি রপ্তানি করে। মূল গন্তব্য দেশ হলো ভারত, বিশেষ করে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ‘সেভেন সিস্টার’ রাজ্যগুলো। পাশাপাশি হংকং, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য এবং থাইল্যান্ডেও শুঁটকির চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।

অধিদপ্তরের উপপরিচালক ফারহানা লাভলী বলেন, ‘চট্টগ্রামের শুঁটকির বৈশ্বিক চাহিদা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, তবে বর্তমান রপ্তানির পরিমাণ যথেষ্ট নয়। পরিকল্পিত উদ্যোগ নিলে এ খাতে আরও বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব।’

চট্টগ্রামের ১৭টি প্রতিষ্ঠান নিয়মিত শুঁটকি রপ্তানি করছে। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, দেশের বাজারে কাঁচা মাছের দাম বেশি হওয়ার কারণে উৎপাদন খরচ বাড়ছে, যার ফলে রপ্তানি একটূ কম হচ্ছে। তারা সরকারি প্রণোদনার দাবি জানিয়েছেন যেন এ খাতের বিকাশে সহায়তা পাওয়া যায়।

শুঁটকি রপ্তানিকারক শোয়েব ট্রেডের স্বত্বাধিকারী সুজন চৌধুরী বলেন, ‘প্রায় সব রপ্তানি India গিয়েছে। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী এলাকার জন্য মিঠাপানির পুঁটির শুঁটকির চাহিদা বেশি। এছাড়া কিছু পরিমাণে মালয়েশিয়া আর মধ্যপ্রাচ্যে রপ্তানি হয়।’

বিডিসি ফুড লিমিটেডের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ ফারুক যুক্ত করেন, ‘শুঁটকির রপ্তানি প্রতিবারই বেড়েছে। তবে কাঁচা মাছের দাম বেশি হওয়ায় শুঁটকির দামও অস্বস্তিকরভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।’

বাংলাদেশ নন-প্যাকার ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহবুব রানা উল্লেখ করেন, ‘বিদেশে যেখানে যেখানে বাঙালি সম্প্রদায় বাস করে, সেখানেই দেশের শুঁটকির চাহিদা প্রবল। এ জন্য রপ্তানিকারকদের জন্য প্রণোদনার ব্যবস্থা জরুরি।’

অতীতে, চট্টগ্রামের আসাদগঞ্জ বাজার থেকেই দেশের প্রায় ৮০ শতাংশ শুঁটকি রপ্তানি হয়। এখানে যেমন পুরো আস্ত শুঁটকি পাঠানো হয়, তেমনি মাছের লেজ, পাখনা এবং অন্ত্রও আন্তর্জাতিক বাজারে যায়।

আসাদগঞ্জ শুঁটকি ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওসমান হায়দার বলেন, ‘গুণগত মানের কারণে বাংলাদেশের শুঁটকি বিদেশে জনপ্রিয়। তবে দেশে মাছের দাম বেশি হওয়ায় শুঁটকির দাম বেশি হয়ে গেছে। দাম যদি স্থির থাকে, তবে রপ্তানিও আরও বৃদ্ধি পাবে।’

ট্যাগ :
সর্বাধিক পঠিত

আজ উদ্বোধন হচ্ছে মাওলানা ভাসানী সেতু

চট্টগ্রাম থেকে শুঁটকি রপ্তানিতে ধারাবাহিক বৃদ্ধির অভিযান

প্রকাশিতঃ ১০:৪৯:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫

চট্টগ্রাম থেকে শুঁটকির রপ্তানি ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সদ্য সমাপ্ত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এই জেলা থেকে মোট ৩ হাজার ১২৬ টন শুঁটকি রপ্তানি করা হয়েছে, যার অর্থমূল্য প্রায় ৭০ লাখ ৩৫ হাজার মার্কিন ডলার। এটি পূর্ববর্তী অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ৫ লাখ ডলার বেশি, যা এই খাতে দেশের অর্থনীতির জন্য আশার আলো তৈরি করেছে।

বাংলাদেশ মৎস্য পর্যবেক্ষণ ও মান নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, চট্টগ্রাম দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শুঁটকি রপ্তানি করে। মূল গন্তব্য দেশ হলো ভারত, বিশেষ করে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ‘সেভেন সিস্টার’ রাজ্যগুলো। পাশাপাশি হংকং, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য এবং থাইল্যান্ডেও শুঁটকির চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।

অধিদপ্তরের উপপরিচালক ফারহানা লাভলী বলেন, ‘চট্টগ্রামের শুঁটকির বৈশ্বিক চাহিদা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, তবে বর্তমান রপ্তানির পরিমাণ যথেষ্ট নয়। পরিকল্পিত উদ্যোগ নিলে এ খাতে আরও বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব।’

চট্টগ্রামের ১৭টি প্রতিষ্ঠান নিয়মিত শুঁটকি রপ্তানি করছে। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, দেশের বাজারে কাঁচা মাছের দাম বেশি হওয়ার কারণে উৎপাদন খরচ বাড়ছে, যার ফলে রপ্তানি একটূ কম হচ্ছে। তারা সরকারি প্রণোদনার দাবি জানিয়েছেন যেন এ খাতের বিকাশে সহায়তা পাওয়া যায়।

শুঁটকি রপ্তানিকারক শোয়েব ট্রেডের স্বত্বাধিকারী সুজন চৌধুরী বলেন, ‘প্রায় সব রপ্তানি India গিয়েছে। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী এলাকার জন্য মিঠাপানির পুঁটির শুঁটকির চাহিদা বেশি। এছাড়া কিছু পরিমাণে মালয়েশিয়া আর মধ্যপ্রাচ্যে রপ্তানি হয়।’

বিডিসি ফুড লিমিটেডের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ ফারুক যুক্ত করেন, ‘শুঁটকির রপ্তানি প্রতিবারই বেড়েছে। তবে কাঁচা মাছের দাম বেশি হওয়ায় শুঁটকির দামও অস্বস্তিকরভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।’

বাংলাদেশ নন-প্যাকার ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহবুব রানা উল্লেখ করেন, ‘বিদেশে যেখানে যেখানে বাঙালি সম্প্রদায় বাস করে, সেখানেই দেশের শুঁটকির চাহিদা প্রবল। এ জন্য রপ্তানিকারকদের জন্য প্রণোদনার ব্যবস্থা জরুরি।’

অতীতে, চট্টগ্রামের আসাদগঞ্জ বাজার থেকেই দেশের প্রায় ৮০ শতাংশ শুঁটকি রপ্তানি হয়। এখানে যেমন পুরো আস্ত শুঁটকি পাঠানো হয়, তেমনি মাছের লেজ, পাখনা এবং অন্ত্রও আন্তর্জাতিক বাজারে যায়।

আসাদগঞ্জ শুঁটকি ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওসমান হায়দার বলেন, ‘গুণগত মানের কারণে বাংলাদেশের শুঁটকি বিদেশে জনপ্রিয়। তবে দেশে মাছের দাম বেশি হওয়ায় শুঁটকির দাম বেশি হয়ে গেছে। দাম যদি স্থির থাকে, তবে রপ্তানিও আরও বৃদ্ধি পাবে।’