০১:৫৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষঃ
আন্তর্জাতিকভাবে দাবি জানানোয় বন্দিদের মুক্তি ঘোষণা বেগম খালেদা জিয়ার জন্য দেশবাসীর দোয়ার আবেদন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্কটকালে মায়ের স্নেহ পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা আমারও: তারেক রহমান মৌসুমি সবজি বাজারে ভরপুর, দাম কমে গেছে উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ সভায় খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্য কামনায় দোয়া ও মোনাজাত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের জন্য ভর্তুকির দাবি আরব আমিরাতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ২৪ ব্যক্তির মুক্তি আসছে বেগম খালেদা জিয়ার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা মনের আকাঙ্ক্ষা ও রাজনৈতিক বাস্তবতার মধ্যে দ্বন্দ্ব: তারেক রহমানের মন্তব্য বাজারে মৌসুমি সবজির সরবরাহ বৃদ্ধি ও দাম কমে যাচ্ছে

মহেশখালী-মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর রপ্তানি সম্ভাবনা বাড়াবে

নির্মাণাধীন মহেশখালী-মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরের উন্নত অবকাঠামো ও উন্নত লজিস্টিক সুবিধা দেশের মাছ রপ্তানি খাতের জন্য এক বড় সম্ভাবনার দরজা খুলে দিচ্ছে। এটি মৎস্য ও সামুদ্রিক খাদ্য রপ্তানিতে উচ্চ প্রবৃদ্ধির অঙ্গীকার করছে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে, শিল্পসংশ্লিষ্টরা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মহেশখালী-মাতারবাড়ি উন্নয়ন সংস্থার উদ্যোগে এই প্রকল্পটির আওতায় সমুদ্রবন্দরটি নির্মাণে জাপানের সহযোগিতা নীতিগতভাবে কার্যকরী হচ্ছে। এই বন্দরের মাধ্যমে বড় বড় জাহাজ সরাসরি চট্টগ্রাম বন্দরে না আসতেও পারবে এবং এর ফলে সমুদ্রপথে লোডআউটের গতি বাড়বে। এতে করে বিশেষ করে মাছের শুদু পরিবহন ও রপ্তানি আরও দ্রুত ও কার্যকরী হবে।

বিশেষভাবে কোল্ড চেইন রক্ষা করে পরিবহন ব্যবস্থার উন্নতি এই খাতে বিশাল প্রভাব ফেলবে। মহেশখালীর মাছ ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম বলছেন, নতুন এই বন্দরের সুবিধায় হিমায়িত মাছ ও দ্রুত পচনশীল সামুদ্রিক পণ্য পরিবহনের সময় উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে। ফলে পণ্য সতেজ থাকায় বিশ্ব বাজারে আমাদের পণ্যের মান উন্নত হবে এবং রপ্তানি সহজতর হবে।

মাতারবাড়ির জেলেরা বলেন, গভীর সমুদ্রবন্দর চালু হলে তাদের ধরা মাছ ধরার পর দ্রুত রপ্তানি সম্ভব হবে। এর ফলে তারা যথাযথ মূল্য পাবেন, যা তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সহায়তা করবে। সামুদ্রিক মাছ ধরা ও প্রক্রিয়াজাতকরণ এখনো বিশ্ববাজারে গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসা হলেও বাংলাদেশ এই খাতে পূর্ণ সম্ভাবনা অনুসন্ধান করে আসছে।

মহেশখালী-মাতারবাড়ি উন্নয়ন সংস্থার (মিডা) প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সঙ্গে এই সম্ভাবনাগুলোর ব্যবহারে আগ্রহ বেড়েছে। বিশ্বে মোট মাছের প্রায় ৭ শতাংশ আসছে বঙ্গোপসাগর থেকে। সমুদ্রের এই ‘ব্লু ইকোনমি’-র ওপর নির্ভর করে বিশ্বের ৪৫ কোটি মানুষ।

বাংলাদেশ ‘ইন্ডিয়ান ওশান টুনা কমিশন’ (আইওটিসি)-এর সংসদ সদস্য। এর ফলে, ভারত মহাসাগরে নির্দিষ্ট কিছু এলাকা ছাড়া বাংলাদেশ নির্দিষ্ট দুই প্রজাতির টুনার কোটায় মাছ শিকার করতে পারে। তবে অন্য দুই প্রজাতির জন্য নির্দিষ্ট কোটায় মাছ ধরা এখনও হয় না, ফলে কোটা পূরণে আটকা পড়ে বেশিরভাগ সময়।

এই সমস্যা সমাধানে ও গভীর সমুদ্রে মাছ ধারাকে উৎসাহিত করতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ২৮টি লংলাইনার ফিশার জাহাজ তৈরির বা আমদানির অনুমোদন দিয়েছে।

এছাড়াও, মাতারবাড়ি বন্দর চাঁকড়িয়া মাছের শিল্পের উদ্যোক্তারা ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের মতো দেশে পণ্য দ্রুত পাঠাতে সক্ষম হবে। এই বন্দরের উন্নততম রপ্তানি প্রক্রিয়া সময় এবং খরচ কমাবে, যার ফলে ফিলে, স্মোকড মাছ, রেডি-টু-ইট সামুদ্রিক খাদ্য ইত্যাদি মান সংযোজন করা পণ্যের রপ্তানি আরও প্রসারিত হবে।

উদাহরণস্বরূপ, স্ক্যালপ প্রজাতির শামুক প্রক্রিয়াজাতকরণ ও রপ্তানি থেকে শতাব্দীর অন্তত ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের আয়ের আশা করা হচ্ছে। পাশাপাশি, মিডার শক্তিশালী লজিস্টিক সুবিধা দেশের ব্যবসাপ্রধানদের মধ্যে নতুন বিনিয়োগের উৎসাহ যোগাবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

ট্যাগ :
সর্বাধিক পঠিত

মহেশখালী-মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর রপ্তানি সম্ভাবনা বাড়াবে

প্রকাশিতঃ ১০:৪৯:৪৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নির্মাণাধীন মহেশখালী-মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরের উন্নত অবকাঠামো ও উন্নত লজিস্টিক সুবিধা দেশের মাছ রপ্তানি খাতের জন্য এক বড় সম্ভাবনার দরজা খুলে দিচ্ছে। এটি মৎস্য ও সামুদ্রিক খাদ্য রপ্তানিতে উচ্চ প্রবৃদ্ধির অঙ্গীকার করছে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে, শিল্পসংশ্লিষ্টরা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মহেশখালী-মাতারবাড়ি উন্নয়ন সংস্থার উদ্যোগে এই প্রকল্পটির আওতায় সমুদ্রবন্দরটি নির্মাণে জাপানের সহযোগিতা নীতিগতভাবে কার্যকরী হচ্ছে। এই বন্দরের মাধ্যমে বড় বড় জাহাজ সরাসরি চট্টগ্রাম বন্দরে না আসতেও পারবে এবং এর ফলে সমুদ্রপথে লোডআউটের গতি বাড়বে। এতে করে বিশেষ করে মাছের শুদু পরিবহন ও রপ্তানি আরও দ্রুত ও কার্যকরী হবে।

বিশেষভাবে কোল্ড চেইন রক্ষা করে পরিবহন ব্যবস্থার উন্নতি এই খাতে বিশাল প্রভাব ফেলবে। মহেশখালীর মাছ ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম বলছেন, নতুন এই বন্দরের সুবিধায় হিমায়িত মাছ ও দ্রুত পচনশীল সামুদ্রিক পণ্য পরিবহনের সময় উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে। ফলে পণ্য সতেজ থাকায় বিশ্ব বাজারে আমাদের পণ্যের মান উন্নত হবে এবং রপ্তানি সহজতর হবে।

মাতারবাড়ির জেলেরা বলেন, গভীর সমুদ্রবন্দর চালু হলে তাদের ধরা মাছ ধরার পর দ্রুত রপ্তানি সম্ভব হবে। এর ফলে তারা যথাযথ মূল্য পাবেন, যা তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সহায়তা করবে। সামুদ্রিক মাছ ধরা ও প্রক্রিয়াজাতকরণ এখনো বিশ্ববাজারে গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসা হলেও বাংলাদেশ এই খাতে পূর্ণ সম্ভাবনা অনুসন্ধান করে আসছে।

মহেশখালী-মাতারবাড়ি উন্নয়ন সংস্থার (মিডা) প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সঙ্গে এই সম্ভাবনাগুলোর ব্যবহারে আগ্রহ বেড়েছে। বিশ্বে মোট মাছের প্রায় ৭ শতাংশ আসছে বঙ্গোপসাগর থেকে। সমুদ্রের এই ‘ব্লু ইকোনমি’-র ওপর নির্ভর করে বিশ্বের ৪৫ কোটি মানুষ।

বাংলাদেশ ‘ইন্ডিয়ান ওশান টুনা কমিশন’ (আইওটিসি)-এর সংসদ সদস্য। এর ফলে, ভারত মহাসাগরে নির্দিষ্ট কিছু এলাকা ছাড়া বাংলাদেশ নির্দিষ্ট দুই প্রজাতির টুনার কোটায় মাছ শিকার করতে পারে। তবে অন্য দুই প্রজাতির জন্য নির্দিষ্ট কোটায় মাছ ধরা এখনও হয় না, ফলে কোটা পূরণে আটকা পড়ে বেশিরভাগ সময়।

এই সমস্যা সমাধানে ও গভীর সমুদ্রে মাছ ধারাকে উৎসাহিত করতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ২৮টি লংলাইনার ফিশার জাহাজ তৈরির বা আমদানির অনুমোদন দিয়েছে।

এছাড়াও, মাতারবাড়ি বন্দর চাঁকড়িয়া মাছের শিল্পের উদ্যোক্তারা ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের মতো দেশে পণ্য দ্রুত পাঠাতে সক্ষম হবে। এই বন্দরের উন্নততম রপ্তানি প্রক্রিয়া সময় এবং খরচ কমাবে, যার ফলে ফিলে, স্মোকড মাছ, রেডি-টু-ইট সামুদ্রিক খাদ্য ইত্যাদি মান সংযোজন করা পণ্যের রপ্তানি আরও প্রসারিত হবে।

উদাহরণস্বরূপ, স্ক্যালপ প্রজাতির শামুক প্রক্রিয়াজাতকরণ ও রপ্তানি থেকে শতাব্দীর অন্তত ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের আয়ের আশা করা হচ্ছে। পাশাপাশি, মিডার শক্তিশালী লজিস্টিক সুবিধা দেশের ব্যবসাপ্রধানদের মধ্যে নতুন বিনিয়োগের উৎসাহ যোগাবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।