মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা কাজিপুর গ্রামে এক গৃহবধূর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয়রা দেখতে পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশকে খবর দেন। বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল নয়টার দিকে ওই গৃহবধূর ঘরে তার মরদেহ খুঁজে পায়। পুলিশ মরদেহটি সরিয়ে নিয়ে ময়নাতদন্তের জন্য মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়।
নিহত গৃহবধূর নাম টলি খাতুন, তিনি বয়স ৩১ বছর। তিনি কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের সবেদ আলীর মেয়ে এবং প্রায় তিন দশক আগে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাজিপুর সর্দ্দার পাড়ায় তাজুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
পরিবারের অভিযোগ, গত রাতে তার স্বামী তাজুল ইসলামের দ্বারা শারীরিক অত্যাচার সহ্য করতে হয় টলি খাতুনকে। তারা বলেন, তার উপর নিপীড়ন চালিয়ে হত্যা করা হয়েছে। মৃতদেহটি ঘরের আড়ায় ঝুলে ছিল এবং পরিবারের অভিযোগ অনুযায়ী, তাকে হত্যা করে ঝুলন্ত অবস্থায় ফেলে দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেশীরা মনে করছেন, ঘরে ক্ষতচিহ্ন ও নির্যাতনের দাগ রয়েছে, যা এই হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ দেয়।
নিহতের ফুফু, মুর্শিদা খাতুন, বলেন, টলি খাতুর শরীরে ক্ষতচিহ্ন দেখা গেছে এবং গলায় নখের ক্ষত রয়েছে। তারা সন্দেহ করছেন, তাকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, তাজুল ইসলামকে ফাঁসিতে দণ্ডিত করার দাবি জানাচ্ছেন।
অপরদিকে, তাজুলের চাচা এনামুল হক জানান, তার ভাইয়ের মেয়ে টলি খাতুকে খুব ভালোবাসতেন তাজুল। সম্প্রতি, তাজুল তার মায়ের নামে থাকা জমি তার স্ত্রীর নামে রেজিস্ট্রি করলেও, গতকাল সে তার শাশুড়িকে ভাত খেতে না দেওয়ায় স্বামী-স্ত্রীর মাঝে অশান্তি হয়। এ সময় তাজুল তার স্ত্রীকে বকাবকি করেন এবং বলেন, তিনি যেন আত্মহত্যা করেন, যাতে তাকে জেলে ভাত খাওয়ানো হয়।
গাংনী থানার ভবানীপুর পুলিশ ক্যাম্পের এসআই আব্দুল করিম বলেন, নিহতের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, নিহতের শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে। রিপোর্ট আসার পর প্রকৃত মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন।