বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, আওয়ামী লীগ ভারতের মতো লুটপাট ও সন্ত্রাসের ইতিহাস অতিক্রম করেছে। তাদের ইতিহাস হচ্ছে চুরি, অর্থ পাচার ও গণতন্ত্র হত্যার ইতিহাস। গতকাল শনিবার বিকেলে কুমিল্লার টাউন হল মাঠে অনুষ্ঠিত কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, চব্বিশের আন্দোলনে আওয়ামী লীগ ১৪০০ মানুষকে হত্যা করেছে। এই আন্দোলনে ২০,০০০ এর বেশি মানুষ পঙ্গুত্ববরণ করেছেন। এত রক্তক্ষরণ ও ত্যাগের মধ্য দিয়ে আমরা আজ এখানে এসেছি। আমাদের রক্তাক্ত ইতিহাস ভুলে যাওয়া যাবে না।
তিনি আরও বলেন, বিএনপির ইতিহাস হলো সংস্থার ইতিহাস, যা রাজনৈতিক সংস্কারের মাধ্যমে দেশের মানুষের জীবন মান উন্নয়ন করেছে। বিএনপির ইতিহাস হলো বাংলাদেশের উন্নয়ন ও পরিবর্তনের ইতিহাস, যা যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত নিতে উৎসাহিত করেছে।
সালাহউদ্দিন আহমদ আরও নির্দেশ দেন, ধর্মের নামে রাজনৈতিক ব্যবসা বন্ধ করতে হবে। ইসলাম রাজনীতির বাক্স নয়। যারা ইসলামের নামে বিভাজন সৃষ্টি করতে চায়, তাদেরকে রাজনীতির মাধ্যমে মোকাবিলা করতে হবে। হাসিনার দিল্লিতে আশ্রয় নেওয়া ও একােকতরের ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হবে। একাত্তরের চেতনা আর ধর্মের ব্যবসা দুইই গ্রহণযোগ্য নয়। জনগণ সচেতন, তারা এ ধরনের অপপ্রচারে সহায়তা দেবে না।
তিনি বলেন, কেউ কি জান্নাতের টিকিট বিক্রি করতে পারে? যারা এ ধরনের ব্যবসা করতে চাচ্ছে, তারা আসলে ধর্ম ব্যবসায়ী।
সংস্কার প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, তারা জানে না, বর্তমান সময়ের প্রকৃত সংস্কারকারীর পরিচিতি তারেক রহমান। তার ঘোষিত ৩১ দফা প্রকৃত সংস্কার। আমরা এই ৩১ দফাটি চেষ্টাকে সমর্থন করি, তবে অন্য যৌক্তিক দফা আসলে যুক্ত করা হবে। সংস্কার একদিনে শেষ হয় না; এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। কেউ বলছেন, বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন একসাথে হবে। আমি বিশ্বাস করি, একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন দিয়ে দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে।
নেতাকর্মীদের প্রতি তিনি আহ্বান জানান, সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় থাকতে হবে, অপপ্রচার ও গুজবের জবাব দিতে হবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে কিছু গোষ্ঠী বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে, তাদের মোকাবিলা করতে সোশ্যাল মিডিয়ায় স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা বিচার দাবি করছি, যারা গণহত্যা, গুম ও খুন করেছে, তাদের যেন বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়ানো যায়। এর জন্য ট্রাইব্যুনাল বৃদ্ধির প্রয়োজন। সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন—এই তিন বিষয়ই একসঙ্গে এগিয়ে চলবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী, হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিন, কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া, কেন্দ্রীয় শিল্প বিষয়ক সম্পাদক মো. আবুল কালাম, কুমিল্লা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মোস্তাক মিয়া, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকারিয়া তাহের সুমন ও সদস্যসচিব আশিকুর রহমান মাহমুদ ওয়াসিমসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।