জুলাই সংবিধানের বাস্তবায়ন নিয়ে গঠিত চূড়ান্ত রোডম্যাপ সোমবারের মধ্যে সরকারের কাছে দাখিল করতে চায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এ বিষয়ে বুধবার বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে এই পরিকল্পনার কথা জানানো হয়েছে।
এখনকার পরিস্থিতিতে, সবাই একমত হয়েছে যে, আগস্টের মধ্যে বা সরাসরি চলতি সপ্তাহের মধ্যে সংবিধান বাস্তবায়নের জন্য জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। গণভোটের মাধ্যমে এই সংবিধান কার্যকর করার প্রক্রিয়া আরও দ্রুততর করার জন্য সকলের সম্মিলিত উদ্যোগ চাই।
আলী রিয়াজ, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি, বলেন, সবাই সংবিধান বাস্তবায়নের জন্য একমত হলেও, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল কিছু ভিন্নমত বা ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়েছে, যা অবশ্যই গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে হবে। তিনি বলেন, জনমতের সঠিক প্রতিফলন নিশ্চিত করতে হলে এই ভিন্নমতগুলো স্পষ্টভাবে জানানো জরুরি, যাতে জনগণ প্রকৃত চেতনা নিয়ে সম্মতি দেয়।
তিনি আরও বলেন, ‘‘সংবিধানে থাকা বিষয়গুলোকে ধীরে ধীরে ও দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী বিবেচনা করতে হবে। সব দলের একরূপ মতামত পাওয়া সম্ভব নয়, কিন্তু প্রত্যেকের অবস্থান জানা ও মান্যতা দেওয়া জরুরি।’’
আলী রিয়াজ মনে করেন, জনগণের সম্মতি নিশ্চিত করতে এই ভিন্নমতগুলো গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ করতে হবে। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্য হলো, জনগণ যেন জানে এবং বুঝে সম্মতি দেয়, এবং তার জন্য দরকার সঠিক তথ্য ও জনমত মার্জ করার চেষ্টা।’’
কমিশন এই বিষয়গুলো বিষদভাবে বিশ্লেষণ করে, সব দল থেকে মতামত সংগ্রহ করে, চূড়ান্ত প্রস্তাব তৈরি করবে যা সরকারকে সুপারিশ হিসেবে জানানো হবে। তিনি আরো জানান, ইতোমধ্যে রাজনীতিক দলগুলোর মধ্যে মৌলিক ঐকমত্য সৃষ্টি হয়েছে, এবং কাজ চলছে চূড়ান্ত কাঠামো নির্ধারণের জন্য।
তিনি বলেন, ‘‘আমরা অনেক অগ্রগতি করেছি। এখন শুধুমাত্র চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের অপেক্ষা, যা খুব শিগগিরই সম্পন্ন হবে।’’
আগামী ১০ অক্টোবরের মধ্যে কমিশনের চূড়ান্ত সুপারিশ জমা দেওয়া হবে এবং ১৫-১৬ অক্টোবরের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর স্বাক্ষর ও আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা লক্ষ্য নির্ধারিত। এতে সকলের মধ্যে একত্রিততা ও বিশ্বাস জোরদার হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
প্রারম্ভিক আলোচনা থেকে শুরু করে নানা সংশয় থাকলেও, এখন সকলের মধ্যে একমত হওয়ার মধ্য দিয়ে পথে এগিয়ে যাচ্ছে এই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। কমিশনের এই উদ্যোগ দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে চলবে, যার মূল লক্ষ্য হলো সকল দলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য ও কার্যকর চূড়ান্ত রোডম্যাপ তৈরি করা এবং সেটি সরকারের কাছে উপস্থাপন করা।