০১:৩৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষঃ
আন্তর্জাতিকভাবে দাবি জানানোয় বন্দিদের মুক্তি ঘোষণা বেগম খালেদা জিয়ার জন্য দেশবাসীর দোয়ার আবেদন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্কটকালে মায়ের স্নেহ পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা আমারও: তারেক রহমান মৌসুমি সবজি বাজারে ভরপুর, দাম কমে গেছে উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ সভায় খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্য কামনায় দোয়া ও মোনাজাত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের জন্য ভর্তুকির দাবি আরব আমিরাতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ২৪ ব্যক্তির মুক্তি আসছে বেগম খালেদা জিয়ার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা মনের আকাঙ্ক্ষা ও রাজনৈতিক বাস্তবতার মধ্যে দ্বন্দ্ব: তারেক রহমানের মন্তব্য বাজারে মৌসুমি সবজির সরবরাহ বৃদ্ধি ও দাম কমে যাচ্ছে

হাসিনার সঙ্গে জরুরি জুম মিটিং, দ্বন্দ্বে ২৮৬ নেতাকর্মী

গত বছরের ৫ আগস্ট, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। এরপর থেকে তিনি ভারতে অবস্থান করছেন, তবে অনলাইনের মাধ্যমে দেশের নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে জড়িয়ে পড়েছেন। ইতোমধ্যে প্রকাশ্যে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন সভা ও মিটিংয়ে অংশ নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে উসকানি দেয়ার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।

সম্প্রতি, ২০২৪ সালের শেষভাগে ‘জয় বাংলা ব্রিগেড’ নামে একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত এক জুম বৈঠকে এই রাষ্ট্রদ্রোহীতার অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা গড়ে ওঠে। গোয়েন্দা সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, ওই ভার্চুয়াল সভায় দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অংশ নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উৎখাতের আহ্বান, গৃহযুদ্ধ উসকানি এবং শেখ হাসিনাকে পুনরায় ক্ষমতায় বসানোর পরিকল্পনা ঘোষণা করেন।

তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, এই সভায় অংশ নেওয়া ব্যক্তি ও সংগঠনের সদস্যরা দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে চায় এমন কথায় উসকানি দিয়েছেন এবং সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের মাধ্যমে এই তথ্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পৌঁছানোর পর, ২০২৫ সালের ৪ মার্চ মন্ত্রণালয় রায়প্রাপ্ত হয়ে সিআইডিকে এই মামলার তদন্ত ও অভিযোগ দায়েরের অনুমতি দেয়। পরে, ২৭ মার্চ রমনা থানায় এই মামলার দাখিল হয়, যার ধারাগুলো- বাংলাদেশ দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ১২১, ১২১(ক), ১২৪(ক)।

সাড়ে পাঁচ মাসের মধ্যে তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র দাখিল করে সিআইডি, যেখানে উল্লেখ করা হয়, এই সব আন্দোলনকারীরা বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে যোগসাজশে অন্তর্বর্তী সরকারকে উৎখাতের পরিকল্পনা করছে, গৃহযুদ্ধের জন্য উস্কানি দিচ্ছে এবং শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। এখন এই মামলার বিচার proceedings শুরু হতে যাচ্ছে, যেখানে হাসিনা ও আরও ২৮৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ শনাক্ত করা হয়েছে। আদালত নির্দেশ দিয়েছে, আসামিরা অনুপস্থিত থাকলে বিচার চলবে, তবে তাদের ফরেনসিক ও গোয়েন্দা প্রতিবেদন অনুযায়ী অনেকেই পলাতক।

আদালতের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আসামিরা হাজির না হলে, তাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য সমন ও বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে হাজির হওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হবে। বিকল্পভাবে, অবশিষ্ট আসামিদের বিরুদ্ধে বিচারের কার্যক্রম চলবে অনুপস্থিতিতেই।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই মামলার মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়যুক্ত হচ্ছে। এটি অন্তর্বর্তী সরকারের ‘বিচার ও দায়বদ্ধতা’ উত্থানে একটি বড় ধাপ, যা সরকারের দুর্নীতি ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জবাবদিহি নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে। পাশাপাশি, দেশের পরিস্থিতি কীভাবে রাজনৈতিক অস্থিরতায় পর্যবসিত হতে পারে, তারই একটি আঁচ পাওয়া যাচ্ছে এই মামলার মাধ্যমে।

ট্যাগ :
সর্বাধিক পঠিত

হাসিনার সঙ্গে জরুরি জুম মিটিং, দ্বন্দ্বে ২৮৬ নেতাকর্মী

প্রকাশিতঃ ১০:৪৮:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫

গত বছরের ৫ আগস্ট, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। এরপর থেকে তিনি ভারতে অবস্থান করছেন, তবে অনলাইনের মাধ্যমে দেশের নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে জড়িয়ে পড়েছেন। ইতোমধ্যে প্রকাশ্যে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন সভা ও মিটিংয়ে অংশ নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে উসকানি দেয়ার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।

সম্প্রতি, ২০২৪ সালের শেষভাগে ‘জয় বাংলা ব্রিগেড’ নামে একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত এক জুম বৈঠকে এই রাষ্ট্রদ্রোহীতার অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা গড়ে ওঠে। গোয়েন্দা সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, ওই ভার্চুয়াল সভায় দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অংশ নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উৎখাতের আহ্বান, গৃহযুদ্ধ উসকানি এবং শেখ হাসিনাকে পুনরায় ক্ষমতায় বসানোর পরিকল্পনা ঘোষণা করেন।

তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, এই সভায় অংশ নেওয়া ব্যক্তি ও সংগঠনের সদস্যরা দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে চায় এমন কথায় উসকানি দিয়েছেন এবং সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের মাধ্যমে এই তথ্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পৌঁছানোর পর, ২০২৫ সালের ৪ মার্চ মন্ত্রণালয় রায়প্রাপ্ত হয়ে সিআইডিকে এই মামলার তদন্ত ও অভিযোগ দায়েরের অনুমতি দেয়। পরে, ২৭ মার্চ রমনা থানায় এই মামলার দাখিল হয়, যার ধারাগুলো- বাংলাদেশ দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ১২১, ১২১(ক), ১২৪(ক)।

সাড়ে পাঁচ মাসের মধ্যে তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র দাখিল করে সিআইডি, যেখানে উল্লেখ করা হয়, এই সব আন্দোলনকারীরা বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে যোগসাজশে অন্তর্বর্তী সরকারকে উৎখাতের পরিকল্পনা করছে, গৃহযুদ্ধের জন্য উস্কানি দিচ্ছে এবং শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। এখন এই মামলার বিচার proceedings শুরু হতে যাচ্ছে, যেখানে হাসিনা ও আরও ২৮৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ শনাক্ত করা হয়েছে। আদালত নির্দেশ দিয়েছে, আসামিরা অনুপস্থিত থাকলে বিচার চলবে, তবে তাদের ফরেনসিক ও গোয়েন্দা প্রতিবেদন অনুযায়ী অনেকেই পলাতক।

আদালতের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আসামিরা হাজির না হলে, তাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য সমন ও বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে হাজির হওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হবে। বিকল্পভাবে, অবশিষ্ট আসামিদের বিরুদ্ধে বিচারের কার্যক্রম চলবে অনুপস্থিতিতেই।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই মামলার মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়যুক্ত হচ্ছে। এটি অন্তর্বর্তী সরকারের ‘বিচার ও দায়বদ্ধতা’ উত্থানে একটি বড় ধাপ, যা সরকারের দুর্নীতি ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জবাবদিহি নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে। পাশাপাশি, দেশের পরিস্থিতি কীভাবে রাজনৈতিক অস্থিরতায় পর্যবসিত হতে পারে, তারই একটি আঁচ পাওয়া যাচ্ছে এই মামলার মাধ্যমে।