০১:৫৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষঃ
আন্তর্জাতিকভাবে দাবি জানানোয় বন্দিদের মুক্তি ঘোষণা বেগম খালেদা জিয়ার জন্য দেশবাসীর দোয়ার আবেদন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্কটকালে মায়ের স্নেহ পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা আমারও: তারেক রহমান মৌসুমি সবজি বাজারে ভরপুর, দাম কমে গেছে উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ সভায় খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্য কামনায় দোয়া ও মোনাজাত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের জন্য ভর্তুকির দাবি আরব আমিরাতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ২৪ ব্যক্তির মুক্তি আসছে বেগম খালেদা জিয়ার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা মনের আকাঙ্ক্ষা ও রাজনৈতিক বাস্তবতার মধ্যে দ্বন্দ্ব: তারেক রহমানের মন্তব্য বাজারে মৌসুমি সবজির সরবরাহ বৃদ্ধি ও দাম কমে যাচ্ছে

সেন্টমার্টিন ভ্রমণের জন্য নতুন নির্দেশনা জারি

সেন্টমার্টিন দ্বীপের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকার নতুন ভ্রমণ নির্দেশনা জারি করেছে। গতকাল বুধবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রালয়ের পরিবেশ-২ শাখা این ১২টি নির্দেশনা সংবলিত প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করে। এ ঘোষণা সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, যা নাগরিকদের জন্য পরিবেশসুরক্ষা ও পর্যটনশীলতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের ১৩ ধারা অনুযায়ী, ২০২৩ সালে প্রণীত ‘সেন্টমার্টিনের পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং পরিবেশবান্ধব পর্যটন নির্দেশিকা’ অনুসারে এই নতুন নিয়ম কার্যকর করা হয়েছে।

নতুন নির্দেশনায় বলা হয়, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) অনুমোদন ছাড়া সেন্টমার্টিনে কোনো নৌযান চলাচল করতে পারবে না। পাশাপাশি, পর্যটকদের জন্য এখন একটি অনলাইন টিকিট ব্যবস্থা চালু হয়েছে, যেখানে প্রত্যেক টিকিটের সঙ্গে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড যুক্ত থাকবে। কিউআর কোড ছাড়া টিকিটের স্বীকৃতি হবে না, ফলে নকল টিকিট বিতরণ রুখে দেওয়া সম্ভব হবে।

ভ্রমণের সময় সূচি ও পর্যটকদের উপস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে রাত্রীযাপন অনুমতি থাকলেও, নভেম্বর মাসে পর্যটকরা শুধুমাত্র দিনের আলোতেই দ্বীপে অবকাশ কাটাতে পারবেন। ফেব্রুয়ারি মাসে পর্যটকদের প্রবেশ সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে। এছাড়া, প্রতিদিনের পর্যটক সংখ্যা নির্ধারিত ২ হাজারের বেশি হতে দেয়া হবে না।

প্রাকৃতিক পরিবেশের সুঠামতা ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে, রাতের সময় সৈকতে আলোকসজ্জা, শব্দদূষণ, বারবিকিউ পার্টি ইত্যাদি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কেয়া বনে প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ বা বিক্রি, সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, প্রবাল, রাজকাঁকড়া, শামুক-ঝিনুক ও অন্যান্য জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি করা কঠোরভাবে আপত্তিজনক। সেইসাথে সৈকতে মোটরসাইকেল, সীবাইকসহ যেকোনো মোটরচালিত যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণরূপে বন্ধ থাকবে।

নিষিদ্ধ করা হয়েছে পলিথিন বহন ও একবার ব্যবহৃত প্লাস্টিকের জন্য। পর্যটকদের জন্য বিশেষভাবে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, তাদের নিজস্ব পানির ফ্লাস্ক সঙ্গে রাখার জন্য।

সরকারের বিশ্বাস, এই নতুন নির্দেশনা কার্যকর হলে সেন্টমার্টিনের সংবেদী পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য হবে নিরাপদ, এবং দ্বীপটি আরও responsible ও পরিবেশবান্ধব পর্যটনের আদর্শ হিসেবে বিকশিত হবে।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, পর্যটন ও বিমান পরিবহন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এই সভার মধ্য দিয়ে পরিবেশনির্ভর ভ্রমণের কার্যকরণ উদ্যোগ চূড়ান্ত করা হয়।

ট্যাগ :
সর্বাধিক পঠিত

সেন্টমার্টিন ভ্রমণের জন্য নতুন নির্দেশনা জারি

প্রকাশিতঃ ০৯:৫২:২২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

সেন্টমার্টিন দ্বীপের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকার নতুন ভ্রমণ নির্দেশনা জারি করেছে। গতকাল বুধবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রালয়ের পরিবেশ-২ শাখা این ১২টি নির্দেশনা সংবলিত প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করে। এ ঘোষণা সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, যা নাগরিকদের জন্য পরিবেশসুরক্ষা ও পর্যটনশীলতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের ১৩ ধারা অনুযায়ী, ২০২৩ সালে প্রণীত ‘সেন্টমার্টিনের পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং পরিবেশবান্ধব পর্যটন নির্দেশিকা’ অনুসারে এই নতুন নিয়ম কার্যকর করা হয়েছে।

নতুন নির্দেশনায় বলা হয়, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) অনুমোদন ছাড়া সেন্টমার্টিনে কোনো নৌযান চলাচল করতে পারবে না। পাশাপাশি, পর্যটকদের জন্য এখন একটি অনলাইন টিকিট ব্যবস্থা চালু হয়েছে, যেখানে প্রত্যেক টিকিটের সঙ্গে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড যুক্ত থাকবে। কিউআর কোড ছাড়া টিকিটের স্বীকৃতি হবে না, ফলে নকল টিকিট বিতরণ রুখে দেওয়া সম্ভব হবে।

ভ্রমণের সময় সূচি ও পর্যটকদের উপস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে রাত্রীযাপন অনুমতি থাকলেও, নভেম্বর মাসে পর্যটকরা শুধুমাত্র দিনের আলোতেই দ্বীপে অবকাশ কাটাতে পারবেন। ফেব্রুয়ারি মাসে পর্যটকদের প্রবেশ সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে। এছাড়া, প্রতিদিনের পর্যটক সংখ্যা নির্ধারিত ২ হাজারের বেশি হতে দেয়া হবে না।

প্রাকৃতিক পরিবেশের সুঠামতা ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে, রাতের সময় সৈকতে আলোকসজ্জা, শব্দদূষণ, বারবিকিউ পার্টি ইত্যাদি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কেয়া বনে প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ বা বিক্রি, সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, প্রবাল, রাজকাঁকড়া, শামুক-ঝিনুক ও অন্যান্য জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি করা কঠোরভাবে আপত্তিজনক। সেইসাথে সৈকতে মোটরসাইকেল, সীবাইকসহ যেকোনো মোটরচালিত যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণরূপে বন্ধ থাকবে।

নিষিদ্ধ করা হয়েছে পলিথিন বহন ও একবার ব্যবহৃত প্লাস্টিকের জন্য। পর্যটকদের জন্য বিশেষভাবে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, তাদের নিজস্ব পানির ফ্লাস্ক সঙ্গে রাখার জন্য।

সরকারের বিশ্বাস, এই নতুন নির্দেশনা কার্যকর হলে সেন্টমার্টিনের সংবেদী পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য হবে নিরাপদ, এবং দ্বীপটি আরও responsible ও পরিবেশবান্ধব পর্যটনের আদর্শ হিসেবে বিকশিত হবে।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, পর্যটন ও বিমান পরিবহন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এই সভার মধ্য দিয়ে পরিবেশনির্ভর ভ্রমণের কার্যকরণ উদ্যোগ চূড়ান্ত করা হয়।