১২:০৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষঃ
আন্তর্জাতিকভাবে দাবি জানানোয় বন্দিদের মুক্তি ঘোষণা বেগম খালেদা জিয়ার জন্য দেশবাসীর দোয়ার আবেদন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্কটকালে মায়ের স্নেহ পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা আমারও: তারেক রহমান মৌসুমি সবজি বাজারে ভরপুর, দাম কমে গেছে উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ সভায় খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্য কামনায় দোয়া ও মোনাজাত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের জন্য ভর্তুকির দাবি আরব আমিরাতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ২৪ ব্যক্তির মুক্তি আসছে বেগম খালেদা জিয়ার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা মনের আকাঙ্ক্ষা ও রাজনৈতিক বাস্তবতার মধ্যে দ্বন্দ্ব: তারেক রহমানের মন্তব্য বাজারে মৌসুমি সবজির সরবরাহ বৃদ্ধি ও দাম কমে যাচ্ছে

মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর নামে ৩১৪ কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ

মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর নামে বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে মোট ৩১৪ কোটি ৩৪ লাখ ৭২ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট পাঁচটি রিক্রুটিং এজেন্সির ২৬ মালিক ও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পৃথক পাঁচটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে জানা গেছে, এসব মামলায় বিভিন্ন ধরনের অনিয়মের উল্লেখ রয়েছে। প্রথম মামলার আসামিরা হলেন জিএমজি লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোছা. মনিহার, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. গোলাম মাওলা, পরিচালক মোজাম্মেল হোসেন, মোজ্জাম্মেল হোসেন, তাসফিয়া মাউন ও ইসলাইল হোসাইন। অভিযোগে বলা হয়েছে, তারা পরস্পর যোগসাজশ ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিএমইটি ও বায়রার নিয়মানুযায়ী নির্ধারিত মূল্য থেকে অতিরিক্ত টাকা গ্রহণ করে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর নামে ব্যাংকিং, পাসপোর্ট, স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও অন্যান্য খরচের নামে মোট ৪৭ কোটি ৪০ লাখ ২৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

অপরাধের প্রক্রিয়ায়, চুক্তি বহির্ভূত কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সরকারের নির্ধারিত মূল্য থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হয়, যার মাধ্যমে তারা দুনিয়াজোড়া সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ২ হাজার ৮৩০ জন শ্রমিককে মালয়েশিয়ায় পাঠানোর নামে এ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।

দ্বিতীয় মামলায় আরও ৩ হাজার ২৩৯ জন শ্রমিক থেকে পাসপোর্ট, স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও অতিরিক্ত ফি বাবদ মোট ৫৪ কোটি ২৫ লাখ ৩২ হাজার ৫০০ টাকা এখতিয়ারে নেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। এই মামলায় জিএমজির অন্য কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। একই সঙ্গে, অভিযোগের মধ্যে রয়েছে সরকারের নির্ধারিত মূল্যের থেকে অতিরিক্ত টাকা গ্রহণ এবং এর মাধ্যমে মানিলন্ডারিংয়ের ঘটনাও।

তৃতীয় মামলায় কিউকে কুইক এক্সপ্রেস লিমিটেডের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম রবিন, এর এমডি মোহাম্মদ মুনছুরসহ অন্যান্য অভিযোগকারীরা অভিযুক্ত। তাদের বিরুদ্ধে বলা হয়েছে, তারা প্রায় ৫ হাজার ২৭৫ জন শ্রমিকের মালয়েশিয়া গমন নিশ্চিত করতে গিয়ে, সরকারের নির্ধারিত মূল্যের থেকে অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণ করেছেন। এই ধরণের চুক্তি বহির্ভূত কার্যক্রমের মাধ্যমে তারা ৭১ কোটি ৬০ লাখ ৬২ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

চতুর্থ মামলায় এম ই এফ গ্লোবাল বাংলাদেশ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. আলতাফ হোসেন, এমডি মকবুল হোসেন, ও পরিচালক হাইদার আলীসহ অন্যান্যরা অভিযুক্ত। এইসব কর্মকর্তারা সরকারের নির্ধারিত মূল্যের থেকে অতিরিক্ত টাকা নিয়ে, পাসপোর্ট ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা বাবদ অর্থ গিলে খেয়েছেন। অপরাধের জন্য তারা ২০২১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়ের মধ্যে দায়ী বলে মামলায় উল্লেখ রয়েছে।

পঞ্চম মামলায় ধামাসি করপোরেশন লিমিটেডের চেয়ারম্যান ওসমান গনি, এমডি নোমান চৌধুরী ও অন্যান্য কর্মকর্তারা অভিযুক্ত। তারা চুক্তি বহির্ভূত কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে প্রায় ৩ হাজার ৮৫৭ জন শ্রমিকের মালয়েশিয়া গমন নিশ্চিত করতে গিয়ে, সরকারের নির্ধারিত মূল্যের থেকে অতিরিক্ত প্রত্যেকের কাছ থেকে অর্থ নেওয়া ছাড়াও মোট ৬৪ কোটি ৬০ লাখ ৪৭ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

দুদকের জানা মতে, এই ধরনের অনিয়মের ঘটনায় মোট ১২টি মামলায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুরোপুরি তদন্ত শেষে বাস্তব সত্যতা বের করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

ট্যাগ :
সর্বাধিক পঠিত

মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর নামে ৩১৪ কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ

প্রকাশিতঃ ১১:৪৭:২৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫

মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর নামে বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে মোট ৩১৪ কোটি ৩৪ লাখ ৭২ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট পাঁচটি রিক্রুটিং এজেন্সির ২৬ মালিক ও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পৃথক পাঁচটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে জানা গেছে, এসব মামলায় বিভিন্ন ধরনের অনিয়মের উল্লেখ রয়েছে। প্রথম মামলার আসামিরা হলেন জিএমজি লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোছা. মনিহার, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. গোলাম মাওলা, পরিচালক মোজাম্মেল হোসেন, মোজ্জাম্মেল হোসেন, তাসফিয়া মাউন ও ইসলাইল হোসাইন। অভিযোগে বলা হয়েছে, তারা পরস্পর যোগসাজশ ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিএমইটি ও বায়রার নিয়মানুযায়ী নির্ধারিত মূল্য থেকে অতিরিক্ত টাকা গ্রহণ করে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর নামে ব্যাংকিং, পাসপোর্ট, স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও অন্যান্য খরচের নামে মোট ৪৭ কোটি ৪০ লাখ ২৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

অপরাধের প্রক্রিয়ায়, চুক্তি বহির্ভূত কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সরকারের নির্ধারিত মূল্য থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হয়, যার মাধ্যমে তারা দুনিয়াজোড়া সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ২ হাজার ৮৩০ জন শ্রমিককে মালয়েশিয়ায় পাঠানোর নামে এ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।

দ্বিতীয় মামলায় আরও ৩ হাজার ২৩৯ জন শ্রমিক থেকে পাসপোর্ট, স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও অতিরিক্ত ফি বাবদ মোট ৫৪ কোটি ২৫ লাখ ৩২ হাজার ৫০০ টাকা এখতিয়ারে নেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। এই মামলায় জিএমজির অন্য কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। একই সঙ্গে, অভিযোগের মধ্যে রয়েছে সরকারের নির্ধারিত মূল্যের থেকে অতিরিক্ত টাকা গ্রহণ এবং এর মাধ্যমে মানিলন্ডারিংয়ের ঘটনাও।

তৃতীয় মামলায় কিউকে কুইক এক্সপ্রেস লিমিটেডের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম রবিন, এর এমডি মোহাম্মদ মুনছুরসহ অন্যান্য অভিযোগকারীরা অভিযুক্ত। তাদের বিরুদ্ধে বলা হয়েছে, তারা প্রায় ৫ হাজার ২৭৫ জন শ্রমিকের মালয়েশিয়া গমন নিশ্চিত করতে গিয়ে, সরকারের নির্ধারিত মূল্যের থেকে অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণ করেছেন। এই ধরণের চুক্তি বহির্ভূত কার্যক্রমের মাধ্যমে তারা ৭১ কোটি ৬০ লাখ ৬২ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

চতুর্থ মামলায় এম ই এফ গ্লোবাল বাংলাদেশ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. আলতাফ হোসেন, এমডি মকবুল হোসেন, ও পরিচালক হাইদার আলীসহ অন্যান্যরা অভিযুক্ত। এইসব কর্মকর্তারা সরকারের নির্ধারিত মূল্যের থেকে অতিরিক্ত টাকা নিয়ে, পাসপোর্ট ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা বাবদ অর্থ গিলে খেয়েছেন। অপরাধের জন্য তারা ২০২১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়ের মধ্যে দায়ী বলে মামলায় উল্লেখ রয়েছে।

পঞ্চম মামলায় ধামাসি করপোরেশন লিমিটেডের চেয়ারম্যান ওসমান গনি, এমডি নোমান চৌধুরী ও অন্যান্য কর্মকর্তারা অভিযুক্ত। তারা চুক্তি বহির্ভূত কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে প্রায় ৩ হাজার ৮৫৭ জন শ্রমিকের মালয়েশিয়া গমন নিশ্চিত করতে গিয়ে, সরকারের নির্ধারিত মূল্যের থেকে অতিরিক্ত প্রত্যেকের কাছ থেকে অর্থ নেওয়া ছাড়াও মোট ৬৪ কোটি ৬০ লাখ ৪৭ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

দুদকের জানা মতে, এই ধরনের অনিয়মের ঘটনায় মোট ১২টি মামলায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুরোপুরি তদন্ত শেষে বাস্তব সত্যতা বের করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।