০৬:৫১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫, ৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষঃ
এনসিপি থেকে বহিষ্কারের পর মাহিনের বিশ্লেষণমূলক মন্তব্য নরওয়ে গবেষণা জাহাজ বঙ্গোপসাগরে মৎস্য ও ইকোসিস্টেম জরিপ শুরু করেছে বয়স হলে ভুল বোঝার ব্যাপারটা বুঝতে পারবে, তখন লজ্জিত হবে নিজেকে নিয়ন্ত্রকদের সম্পদ তদন্ত চাই দুদকের ইইউ ৪ মিলিয়ন ইউরো আর্থিক সহযোগিতা দেবে বাংলাদেশের নির্বাচন উন্নত করতে ইভেন্ট বুকিংয়ে এক বছরের জন্য ৫০% ছাড় দিচ্ছে আইসিসিএল ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার ঝিনাইদহের আওয়ামী লীগ সভাপতি পরীক্ষায় ফেল, টানা ২৬ বছর গৃহবন্দী নারীকে উদ্ধার খাদ্য মন্ত্রনালয়ের রেকর্ড পরিমাণ ধান ও চাল সংগ্রহ গাইবান্ধায় ১৪৯০ মিটার দীর্ঘ ‘মওলানা ভাসানী সেতু’ উদ্বোধন করবেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা

নওগাঁর আদিবাসী নেতা আলফ্রেড সরেন হত্যার ২৫ বছর পরেও ক্ষোভ ও প্রশ্নবিদ্ধ বিচার প্রক্রিয়া

আলফ্রেড সরেন হত্যাকাণ্ডের এক चौব্বিশ বছর পেরিয়ে গেছে, কিন্তু তার বিচারের শেষ এখনও হয়নি। ২০০০ সালের ১৮ আগস্ট নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার ভীমপুর আদিবাসী পল্লিতে ভূমিদস্যুদের হামলার শিকার হয়ে নিহত হন এই আদিবাসী নেতা। দীর্ঘ এই সময়ের মধ্যে হত্যার মূল বিচার এখনও সম্পন্ন হয়নি, যা নিয়ে এলাকায় এবং আদিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে গভীর অসন্তোষ বিরাজ করছে। অনেকেরই মনে প্রশ্ন, কবে হবে বাস্তব বিচার? পাশাপাশি চলমান ক্ষোভ ও হুমকি-ধমকির প্রভাবেও অনেকেই ভীমপুর ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন।

আলফ্রেড সরেনের মৃত্যুবার্ষিকীতে সোমবার দুপুরে ভীমপুরের এই পল্লিতে তাঁর স্মরণে শ্রদ্ধা নিবেদন, শোক র‌্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সেখানে নিরাপদ ও দ্রুত বিচারের দাবি জানানো হয়।

২০০০ সালের সেই দুঃখজনক ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ওই দিন দুপুর ১২টায়, যখন আদিবাসীরা শান্তিপূর্ণ ভাবে প্রতিবাদ সমাবেশের জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলেন, তখন ভীমপুর আদিবাসী পল্লিতে হামলা চালায় ভূমি-চোরাকারবারী হাতেম-গদাই গং। তারা বাড়িঘর ভেঙে ঢামাসিয়া, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে। হামলায় প্রায় ৩০ জন আহত হন, তাদের মধ্যে নারী ও শিশুরাও ছিল। সন্ত্রাসীরা কয়েকটি শিশুকে পার্শ্ববর্তী পুকুরে ছুড়ে ফেলে হত্যার চেষ্টাও চালায়।

অনেকেরই অভিযোগ, হামলার সময় পুলিশ একযোগে সবচেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। এই ব্যাপারটি কৃষক ও আদিবাসীদের মধ্যে সন্দেহ সৃষ্টি করে, পুলিশের সঙ্গে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ ওঠে। তখনই ধিকৃত হয় আতঙ্কের এক নাটকীয় মুহূর্ত, যেখানে আলফ্রেড চাপা থাকায় তিনি প্রাণে বেঁচে যান, তবে পরে তাকে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে হত্যা করা হয়। এই বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের পর দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের মধ্যে ক্ষোভ, প্রতিবাদ ও মানবাধিকার সংগঠনের শোরগোল শুরু হয়।

আলফ্রেডের মৃত্যুর আগের দিন, ১৭ আগস্ট, তিনি উল্লেখ করেছিলেন যে তার জীবন থেকে আতঙ্কে আছেন এবং মৃত্যুর আশঙ্কা করছেন। হত্যাকাণ্ডের প্রাথমিক লক্ষ্যে ছিল তার জীবন, পরিবারের নিরাপত্তা, এমনকি তার নামে জড়িত চিঠির কথাও জানা যায়, যেখানে সন্দেহভাজন কয়েকজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছিল।

মামলার বর্তমান অবস্থা নিয়ে জানা যায়, ওই হত্যাকাণ্ডের মামলায় অজ্ঞত কয়েকজনজনের নামে চার্জশিট түзি হলেও, দীর্ঘদিন তদন্তে অচলাবস্থা ও বাদীর পক্ষের মামলা সত্ত্বেও অভিযান অচল। পুলিশ অনেক আসামিকে গ্রেপ্তার করলেও, কোর্টে বিচারকার্য দীর্ঘপ্রতিক্ষীত। বর্তমানে মামলার বিচার প্রক্রিয়া স্থগিত রয়েছে। বাদী ও আহত পরিবারের সদস্যরা এখনো বিচারের প্রত্যাশায় রয়েছেন।

আলফ্রেডের ছোট বোন রেবেকা সরেন বলেন, তার ভাইকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। তার মৃত্যুর পর থেকে পরিবারটি চরম দুঃখে ভুগছে। তিনি জানান, ২২ বছর পার হলেও বিচার পাননি তারা। তাদের অভিযোগ, ব্যাপক হুমকি ও চাপের মধ্যেও তারা সত্যের জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।

আদিবাসী অধিকারকর্মী আজাদ হোসেন মুরাদ বলেন, আলফ্রেড সরেন আদিবাসীদের অধিকার ও ভূমি সংরক্ষণের জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতেন। এই হত্যাকাণ্ডের বিচার এখনও সম্পন্ন না হওয়া তাদের মধ্যে গভীর ক্ষোভ ও হতাশা তৈরি করেছে, দ্রুত দ্রুত যথাযথ বিচার দাবি করছেন সকলে। এই নিরীহ নেতা হত্যার প্রকৃত বিচার শীঘ্রই সম্পন্ন হবে, এর প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।

ট্যাগ :
সর্বাধিক পঠিত

আজ উদ্বোধন হচ্ছে মাওলানা ভাসানী সেতু

নওগাঁর আদিবাসী নেতা আলফ্রেড সরেন হত্যার ২৫ বছর পরেও ক্ষোভ ও প্রশ্নবিদ্ধ বিচার প্রক্রিয়া

প্রকাশিতঃ ০৮:২২:২০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫

আলফ্রেড সরেন হত্যাকাণ্ডের এক चौব্বিশ বছর পেরিয়ে গেছে, কিন্তু তার বিচারের শেষ এখনও হয়নি। ২০০০ সালের ১৮ আগস্ট নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার ভীমপুর আদিবাসী পল্লিতে ভূমিদস্যুদের হামলার শিকার হয়ে নিহত হন এই আদিবাসী নেতা। দীর্ঘ এই সময়ের মধ্যে হত্যার মূল বিচার এখনও সম্পন্ন হয়নি, যা নিয়ে এলাকায় এবং আদিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে গভীর অসন্তোষ বিরাজ করছে। অনেকেরই মনে প্রশ্ন, কবে হবে বাস্তব বিচার? পাশাপাশি চলমান ক্ষোভ ও হুমকি-ধমকির প্রভাবেও অনেকেই ভীমপুর ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন।

আলফ্রেড সরেনের মৃত্যুবার্ষিকীতে সোমবার দুপুরে ভীমপুরের এই পল্লিতে তাঁর স্মরণে শ্রদ্ধা নিবেদন, শোক র‌্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সেখানে নিরাপদ ও দ্রুত বিচারের দাবি জানানো হয়।

২০০০ সালের সেই দুঃখজনক ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ওই দিন দুপুর ১২টায়, যখন আদিবাসীরা শান্তিপূর্ণ ভাবে প্রতিবাদ সমাবেশের জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলেন, তখন ভীমপুর আদিবাসী পল্লিতে হামলা চালায় ভূমি-চোরাকারবারী হাতেম-গদাই গং। তারা বাড়িঘর ভেঙে ঢামাসিয়া, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে। হামলায় প্রায় ৩০ জন আহত হন, তাদের মধ্যে নারী ও শিশুরাও ছিল। সন্ত্রাসীরা কয়েকটি শিশুকে পার্শ্ববর্তী পুকুরে ছুড়ে ফেলে হত্যার চেষ্টাও চালায়।

অনেকেরই অভিযোগ, হামলার সময় পুলিশ একযোগে সবচেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। এই ব্যাপারটি কৃষক ও আদিবাসীদের মধ্যে সন্দেহ সৃষ্টি করে, পুলিশের সঙ্গে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ ওঠে। তখনই ধিকৃত হয় আতঙ্কের এক নাটকীয় মুহূর্ত, যেখানে আলফ্রেড চাপা থাকায় তিনি প্রাণে বেঁচে যান, তবে পরে তাকে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে হত্যা করা হয়। এই বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের পর দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের মধ্যে ক্ষোভ, প্রতিবাদ ও মানবাধিকার সংগঠনের শোরগোল শুরু হয়।

আলফ্রেডের মৃত্যুর আগের দিন, ১৭ আগস্ট, তিনি উল্লেখ করেছিলেন যে তার জীবন থেকে আতঙ্কে আছেন এবং মৃত্যুর আশঙ্কা করছেন। হত্যাকাণ্ডের প্রাথমিক লক্ষ্যে ছিল তার জীবন, পরিবারের নিরাপত্তা, এমনকি তার নামে জড়িত চিঠির কথাও জানা যায়, যেখানে সন্দেহভাজন কয়েকজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছিল।

মামলার বর্তমান অবস্থা নিয়ে জানা যায়, ওই হত্যাকাণ্ডের মামলায় অজ্ঞত কয়েকজনজনের নামে চার্জশিট түзি হলেও, দীর্ঘদিন তদন্তে অচলাবস্থা ও বাদীর পক্ষের মামলা সত্ত্বেও অভিযান অচল। পুলিশ অনেক আসামিকে গ্রেপ্তার করলেও, কোর্টে বিচারকার্য দীর্ঘপ্রতিক্ষীত। বর্তমানে মামলার বিচার প্রক্রিয়া স্থগিত রয়েছে। বাদী ও আহত পরিবারের সদস্যরা এখনো বিচারের প্রত্যাশায় রয়েছেন।

আলফ্রেডের ছোট বোন রেবেকা সরেন বলেন, তার ভাইকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। তার মৃত্যুর পর থেকে পরিবারটি চরম দুঃখে ভুগছে। তিনি জানান, ২২ বছর পার হলেও বিচার পাননি তারা। তাদের অভিযোগ, ব্যাপক হুমকি ও চাপের মধ্যেও তারা সত্যের জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।

আদিবাসী অধিকারকর্মী আজাদ হোসেন মুরাদ বলেন, আলফ্রেড সরেন আদিবাসীদের অধিকার ও ভূমি সংরক্ষণের জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতেন। এই হত্যাকাণ্ডের বিচার এখনও সম্পন্ন না হওয়া তাদের মধ্যে গভীর ক্ষোভ ও হতাশা তৈরি করেছে, দ্রুত দ্রুত যথাযথ বিচার দাবি করছেন সকলে। এই নিরীহ নেতা হত্যার প্রকৃত বিচার শীঘ্রই সম্পন্ন হবে, এর প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।