পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের সঙ্গে ভারতের খেলোয়াড়দের প্রতীকী হাত না মেলানোর ঘটনায় এবার এক নতুন মোড় নেয়া হয়েছে। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)-র বিরুদ্ধে নতুন করে অভিযোগ তোলেন আইসিসি। ক্রিকেটের আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি অভিযোগ করেছে, পিসিবি অশোভন আচরণ করেছে এবং ম্যাচের নিয়ম অমান্য করেছে, বিশেষ করে ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফটের নেতৃত্বে ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে।
উল্লেখ্য, এশিয়া কাপের কিছু নিয়ম লঙ্ঘনের জন্য পিসিবিকে আইসিসির পক্ষ থেকে ই-মেইল পাঠানো হয়। পিটিআই সূত্রে জানা গেছে, আইসিসির সিইও সঞ্জোগ গুপ্তা পিসিবিকে চিঠি দিয়ে বলেছিলেন, ম্যাচের দিন বারবার তাদের নিয়ম ভঙ্গ করা হয়েছে। পিসিবি এই ই-মেইলও পেয়েছে।
ঘটনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল ১৪ সেপ্টেম্বর দুবাইয়ে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের সময়, যখন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যান সূর্যকুমার যাদবের দল সালমান আগাদের সঙ্গে হাত না মেলানোর ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় পিসিবি ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফটকে দোষারোপ করে তার অপসারণের দাবি তোলে, কিন্তু আইসিসি সেই আবেদন গুরুত্ব দেয়নি। এর ফলে পিসিবি ১৭ সেপ্টেম্বর আরব আমিরাতের বিপক্ষে ম্যাচ বয়কটের হুমকি দেয়। এমনকি, ওই ম্যাচের শুরুর এক ঘণ্টা আগে ম্যাচের সূচি পেছানো হয়।
পিটিআই সূত্রে জানা যায়, আইসিসির সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, ভারতীয় ম্যাচের আগে টসের সময় বিরোধ বা ভুল বোঝাবুঝি এড়ানোর জন্য অধিনায়ক ও ম্যানেজাররা একসঙ্গে বৈঠক করবে। এই বৈঠকে পিসিবির মিডিয়া ম্যানেজার নাঈম গিলানিকেও সঙ্গে আনা হয়, যদিও এর জন্য জোরাজুরি করা হয়।
অপরদিকে, আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী কর্মকর্তারা পিসিবির মিডিয়া ম্যানেজারকে মূলত প্রবেশের অনুমতি দেননি, কারণ তিনি মোবাইলসহ পিএমওএ এলাকা প্রবেশের চেষ্টা করেছিলেন। এ সময় পিসিবি হুমকি দেয়, যদি মিডিয়া ম্যানেজারকে প্রবেশ করতে না দেওয়া হয়, তবে তারা ম্যাচ থেকে সরে দাঁড়াবে। শেষ পর্যন্ত, তারা জোরপূর্বক বৈঠকের ভিডিও ধারণ করে, যা পিএমওএর নিয়মের লঙ্ঘন।
বিশেষ করে, ভারতের সঙ্গে ম্যাচের টসের সময় অধিনায়ককে হাত না মেলা নির্দেশ দেন ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফট। তবে, ক্যামেরায় ধারণ করা ফুটেজটি কীভাবে ব্যবহার করা হবে, তা আইসিসি স্পষ্ট করে জানায়নি। পরে দেখা যায়, সেটি পিসিবির একটি এক্স-হ্যান্ডলে পোস্ট করা হয়েছে, যেখানে ক্যাপশনে লেখা ছিল, ‘পাইক্রফট পাকিস্তানের অধিনায়ক ও ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।’
আইসিসি এই ‘ক্ষমা চাওয়াকে’ গ্রহন করেনি। সংস্থার বক্তব্য, পাইক্রফট শুধু ভুলের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন, কিন্তু পুরো বিষয়টির পেছনের সত্যতা জানানো হয়নি। এই ঘটনাজুড়ে বোঝা যায়, ক্রমাগত অপ্রত্যাশিত ঘটনার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান-ভারত সম্পর্ক আরও জটিল হতে চলেছে ক্রিকেট মহলে।