রাজধানীর গুলশানে ইস্টার্ন হাউজিংয়ে অবস্থিত একটি ফ্ল্যাটের মালিক হিসেবে পরিচিত শেখ হাসিনার ভাগনি ও যুক্তরাজ্যের সাবেক সংসদ সদস্য টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলার তদন্ত চলমান। গত রবিবার রাজউকের প্লট দুর্নীতির চার দিনের শুনানিতে জব্দতালিকার সাক্ষীদের সাক্ষ্য নথিপত্র দাখিল করা হয়।
একই দিন ঢাকার চতুর্থ বিশেষ জজ আদালতে উপস্থিত ছিলেন ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের তিন কর্মকর্ত—নির্বাহী মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ ফরহাদুজ্জামান, অপারেটর শেখ শমশের আলী, এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট এক্সিকিউটিভ সদস্য হিমেল চন্দ্র দাস। এ ছাড়াও গণপূর্ত ও গৃহায়ন মন্ত্রণালয়ের একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা আক্তার জাহান তাদের সাক্ষ্য দেন।
জবানবন্দিতে তারা জানান, টিউলিপ সিদ্দিক তার ফ্ল্যাটটি পরবর্তীতে তার বোন আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীকে দাখিলের জন্য নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশনবিহীন দলিল সাব্যস্ত করেছিলেন। আইন অনুযায়ী, এ ধরনের দলিলের মাধ্যমে ফ্ল্যাটের স্বত্ব হস্তান্তর আইনত কার্যকর নয়, যার জন্য এখনো তিনি এই ফ্ল্যাটের মালিক হিসেবে থাকছেন। উল্লেখ্য, আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের জেরা সম্ভব হয়নি।
এছাড়াও, প্লট জালিয়াতির এই বিষয়ে আলাদা তিনটি মামলায় মোট ১৫ জনের সাক্ষ্য দেওয়া হয়েছে। এসব মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, বোনের মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক ও আরও অনেকে আসামি হিসেবে যুক্ত আছেন।
আদালত জানিয়েছে, আগামী ৬ অক্টোবর পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ নির্ধারিত হয়েছে। এর আগে, সাক্ষীরা আদালতকে জানিয়েছেন যে, ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের প্রভাবের মাধ্যমে নির্ধারিত নিয়মের বাইরে পূর্বাচলে ৩০ কাঠা প্লট বরাদ্দের জন্য নির্দেশ দেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর পরে দুদক এসব মামলায় ২৩ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গুলশানের ইস্টার্ন হাউজিংয়ে প্লটের মালিক থাকা সত্ত্বেও টিউলিপ সিদ্দিক পূর্বাচলে ১০ কাঠা প্লট নেন, যেখানে তিনি ঢাকা বা তার আশপাশে আর কোনো ফ্ল্যাট বা প্লট দেখাননি।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে থাকার সময় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবার ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। অযোগ্য হলেও তারা পূর্বাচলের আবাসন প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরে ১০ কাঠা করে প্লট বরাদ্দ নেন। গত ৩১ জুলাই এসব মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।