০২:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ২৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষঃ
শুক্রবারের মধ্যে জুলাই সংবিধানের চূড়ান্ত রোডম্যাপ প্রকাশের আশা স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট নভেম্বরের মধ্যে চায় জামায়াত হাসিনার বিরুদ্ধে আজ সাক্ষ্য দেবেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এনবিআরের সিদ্ধান্ত: এমপি কোটার ৩০ বিলাসবহুল গাড়ি নিলামে বিক্রির পরিবর্তে হস্তান্তর পাঁচ দিন ধরে সাগরে ভাসমান ২৬ জেলেকে উদ্ধার করলো নৌ বাহিনী মেনন-পলক-দস্তগীরসহ চারজনের বিরুদ্ধে নতুন মামলায় গ্রেফতার তীব্র যানজটে আটকা পড়ে সড়ক উপদেষ্টা মোটরসাইকেলে গন্তব্যে পৌঁছেছেন ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনের পাশে আবর্জনার স্তূপ ঢেকে দেওয়া হলো বিশিষ্ট উপদেষ্টার আগমনের জন্য প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তুরস্কের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ: দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও জোরদার করার প্রত্যয়

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি: কারা দিচ্ছে ও না দিচ্ছে

গাজায় দীর্ঘ দুই বছর ধরে চলমান সংঘর্ষের পর এবার বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দৃষ্টি কেন্দ্রীভূত হলো ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি নিয়ে। আজ মঙ্গলবার, এক ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটে যখন ইউরোপের বেশ কিছু দেশ একযোগে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এর মধ্যে ফ্রান্স, বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ, মাল্টা, অ্যান্ডোরা ও মোনাকো উল্লেখযোগ্য। এই স্বীকৃতি যুক্তরাষ্ট্রের ছাড়া ইউরোপের অন্যান্য বৃহৎ ও ছোট দেশগুলোর মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ফ্রান্সের স্বীকৃতি ছিল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে সদস্য যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে থাকা চার স্থায়ী সদস্যের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। ১৯৮৮ সালে ফিলিস্তিন নেতৃবৃন্দের উদ্যোগে স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত জাতিসংঘের প্রায় ৮০ শতাংশ সদস্য দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে, ১৫১টি দেশের এই স্বীকৃতি রয়েছে, যা মোট ১৯৩ সদস্য দেশের মধ্যে বহুল সংখ্যক। আলজেরিয়ার প্রথম স্বীকৃতি দেওয়ার কিছু সময়ের মধ্যে, ডজনখানেক দেশ তাদের সমর্থন প্রকাশ করে। ২০১০ ও ২০১১ সালে আবারও স্বীকৃতির ঢেউ বয়ে যায়। সম্প্রতি, ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের ইসরায়েলি হামলার পর আরও বেশকিছু দেশ এই স্বীকৃতি দিয়েছে। তবে, এখনও অনেক দেশ রয়েছে যারা ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। বিশেষ করে ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্ররা এই তালিকায়। এশিয়ার মধ্যে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও সিঙ্গাপুর এই স্বীকৃতি থেকে এড়িয়ে গেছে, যেমন তালিকায় ক্যামেরুন, প্যানামা ও বেশিরভাগ ওশেনিয়ান দেশ রয়েছে। ইউরোপে শুরুতে বিভক্তি থাকা এই বিষয়ে, ২০১৪ সালে সুইডেন প্রথম স্বীকৃতি দেয়, এরপর নর্দে, স্পেন, আয়ারল্যান্ড ও স্লোভেনিয়া যোগ দিয়েছে। তবে ইতালি ও জার্মানি এই নিয়ে এখনো কোনো উদ্যোগ নেয়নি। আন্তর্জাতিক আইনের দৃষ্টিতে, ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি একটি জটিল ও সংবেদনশীল প্রশ্ন। একদিকে এটিকে এর রাজনৈতিক ও আইনি গুরুত্ব রয়েছে, অন্যদিকে অনেক দেশ এই স্বীকৃতি সম্পন্ন না করেও তাদের বিরুপ নয়। কিছু বিশ্লেষক মনে করেন, স্বীকৃতি মানে শুধু প্রতীকী নয়; এটি আন্তর্জাতিক আইনের ভিত্তিতে ফিলিস্তিনের মর্যাদা ও অবস্থানকে প্রভাবিত করে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ভাষ্যকাররা বলছেন, একজন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি কেবল একটি কার্যকলাপ নয়, এটি সত্যিকার অর্থে আন্তর্জাতিক পরিসরে এক নতুন মানদণ্ড প্রতিষ্ঠা করে। অবশেষে, একথা স্পষ্ট, স্বীকৃতি বা না-দেওয়া—প্রতিটি দেশের নিজস্ব সিদ্ধান্ত, যা আন্তর্জাতিক রাজনীতির এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

ট্যাগ :
সর্বাধিক পঠিত

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি: কারা দিচ্ছে ও না দিচ্ছে

প্রকাশিতঃ ০৬:১৭:২০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

গাজায় দীর্ঘ দুই বছর ধরে চলমান সংঘর্ষের পর এবার বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দৃষ্টি কেন্দ্রীভূত হলো ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি নিয়ে। আজ মঙ্গলবার, এক ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটে যখন ইউরোপের বেশ কিছু দেশ একযোগে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এর মধ্যে ফ্রান্স, বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ, মাল্টা, অ্যান্ডোরা ও মোনাকো উল্লেখযোগ্য। এই স্বীকৃতি যুক্তরাষ্ট্রের ছাড়া ইউরোপের অন্যান্য বৃহৎ ও ছোট দেশগুলোর মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ফ্রান্সের স্বীকৃতি ছিল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে সদস্য যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে থাকা চার স্থায়ী সদস্যের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। ১৯৮৮ সালে ফিলিস্তিন নেতৃবৃন্দের উদ্যোগে স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত জাতিসংঘের প্রায় ৮০ শতাংশ সদস্য দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে, ১৫১টি দেশের এই স্বীকৃতি রয়েছে, যা মোট ১৯৩ সদস্য দেশের মধ্যে বহুল সংখ্যক। আলজেরিয়ার প্রথম স্বীকৃতি দেওয়ার কিছু সময়ের মধ্যে, ডজনখানেক দেশ তাদের সমর্থন প্রকাশ করে। ২০১০ ও ২০১১ সালে আবারও স্বীকৃতির ঢেউ বয়ে যায়। সম্প্রতি, ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের ইসরায়েলি হামলার পর আরও বেশকিছু দেশ এই স্বীকৃতি দিয়েছে। তবে, এখনও অনেক দেশ রয়েছে যারা ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। বিশেষ করে ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্ররা এই তালিকায়। এশিয়ার মধ্যে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও সিঙ্গাপুর এই স্বীকৃতি থেকে এড়িয়ে গেছে, যেমন তালিকায় ক্যামেরুন, প্যানামা ও বেশিরভাগ ওশেনিয়ান দেশ রয়েছে। ইউরোপে শুরুতে বিভক্তি থাকা এই বিষয়ে, ২০১৪ সালে সুইডেন প্রথম স্বীকৃতি দেয়, এরপর নর্দে, স্পেন, আয়ারল্যান্ড ও স্লোভেনিয়া যোগ দিয়েছে। তবে ইতালি ও জার্মানি এই নিয়ে এখনো কোনো উদ্যোগ নেয়নি। আন্তর্জাতিক আইনের দৃষ্টিতে, ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি একটি জটিল ও সংবেদনশীল প্রশ্ন। একদিকে এটিকে এর রাজনৈতিক ও আইনি গুরুত্ব রয়েছে, অন্যদিকে অনেক দেশ এই স্বীকৃতি সম্পন্ন না করেও তাদের বিরুপ নয়। কিছু বিশ্লেষক মনে করেন, স্বীকৃতি মানে শুধু প্রতীকী নয়; এটি আন্তর্জাতিক আইনের ভিত্তিতে ফিলিস্তিনের মর্যাদা ও অবস্থানকে প্রভাবিত করে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ভাষ্যকাররা বলছেন, একজন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি কেবল একটি কার্যকলাপ নয়, এটি সত্যিকার অর্থে আন্তর্জাতিক পরিসরে এক নতুন মানদণ্ড প্রতিষ্ঠা করে। অবশেষে, একথা স্পষ্ট, স্বীকৃতি বা না-দেওয়া—প্রতিটি দেশের নিজস্ব সিদ্ধান্ত, যা আন্তর্জাতিক রাজনীতির এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ।