যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীতে নতুন নিয়মে দাড়ি ও লম্বা চুল নিষিদ্ধ ঘোষণা করায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। বিশেষ করে মুসলিম, শিখ এবং ইহুদি ধর্মের অনুসারীরা যারা ধর্মীয় কারণে দাড়ি বা লম্বা চুল রাখতে অভ্যস্ত, তারা এই নির্দেশনায় অসুবিধার মুখে পড়েছেন। ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে।
প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ সাম্প্রতিক এক মন্তব্যে বলেন, ‘আর কোনও দাড়ি বা লম্বা চুল থাকবে না। ব্যক্তিগত প্রকাশের উপায় হিসেবে এই দিকগুলো অনুমোদিত নয়। যদি দাড়ি রাখতেই চান, তাহলে স্পেশাল ফোর্সে যোগ দিন, নতুবা শেভ করে নিন।’ মন্ত্রীর এই বক্তব্যের পর সেনাদের মধ্যে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
হেগসেথের বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পেন্টাগন একটি মেমো প্রকাশ করে, যেখানে উল্লেখ করা হয় ২০১০ সালের আগে যেসব নিয়ম ছিল, তার ফিরতি প্রক্রিয়া শুরু হবে। এখন থেকে প্রত্যেক সেনা আধিকারিককে ক্লিন শেভ রাখতে হবে, এবং ফেসিয়াল হেয়ার বা লোমের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। গোঁফ রাখতে অনুমতি থাকলেও তা শৃঙ্খলাপূর্ণভাবে ছাঁটা থাকতে হবে। দাড়ি, গোঁফ বা অন্য কোনো মুখের লোম অবৈধ বলে গণ্য হবে, যদি না বিশেষ অনুমোদন দেওয়া হয়।
এই নতুন নিয়ম দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য সামরিক বাহিনীকে ৬০ দিনের মধ্যে পরিকল্পনা জমা দিতে বলা হয়েছে, এবং ৯০ দিনের মধ্যে পুরোপুরি কার্যকর করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যারা এই নিয়ম মানতে অস্বীকার করবেন, তাঁদের নিয়োগ স্থগিত থাকবে বলে জানিয়েছে পেন্টাগন।
শিখ মোট দোকান কোয়ালিশন এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা জানিয়েছে। সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এর ফলে সেনা সদস্যদের ধর্মীয় অনুশীলন ও জাতীয় সেবার মধ্যে একটি বাধা সৃজনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে, কারণ ধর্মবিশ্বাসের জন্য দাড়ি বা লম্বা চুল রাখা ধর্মীয় অধিকারের অংশ।
উদারবাদী সংগঠন মিলিটারি রিলিজিয়াস ফ্রিডম ফাউন্ডেশনের (এমআরএফএফ) প্রতিষ্ঠাতা মিকি ওয়েইনস্টাইন বলেছেন, এই সিদ্ধান্ত শুধু দাড়ি বা চুলের ব্যাপার নয়; এটি একটি সার্বজনীন আক্রমণ, যা মূলত অ-শ্বেতাঙ্গ, অ-খ্রিস্টান ও সংখ্যালঘু ধর্মীয় সদস্যদের ওপর লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে। তার মতে, এটি মূলত ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক অধিকার লঙ্ঘন।