চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে পণ্য রপ্তানিতে উল্লেখযোগ্য হ্রাস দেখা গেছে। গত মাসে অর্থাৎ সেপ্টেম্বর মাসেও রপ্তানি প্রায় ৪.৬১ শতাংশ কমতে দেখা গেছে, যা গত বছরের একই মাসের তুলনায় উল্লেখযোগ্য। এর ফলে রপ্তানি আয়ের অঙ্ক কমে যায়, মোট রপ্তানি হয় ৩৬৩ কোটি ডলার, যা আগের বছরের সেপ্টেম্বরের চেয়ে ১৭ কোটি ডলার কম। গত বছর একই সময়ে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩৮০ কোটি ডলার।
বাংলাদেশের রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এর প্রতিবেদনে জানানো হয়, প্রধানত পোশাকের রপ্তানি ৬ শতাংশের মতো কমে গেছে। পোশাকের রপ্তানি কমে যাওয়ায় 전체 রপ্তানি আয় নিচের দিকে অভিমুখী। গত মাসে পোশাকের রপ্তানি দাঁড়িয়েছে ২৮৪ কোটি ডলার, যা গত বছর একই মাসে ছিল ৩০১ কোটি ডলার।
তবে আর্থিক বছরের প্রথম প্রান্তিক অর্থাৎ জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে, সামগ্রিক রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ শতাংশ বেশি। শুরুতে অর্থবছর (জুলাই) রপ্তানি ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, কিন্তু দ্বিতীয় মাসে সেটি কমে ৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
অন্যদিকে, প্রকৌশল পণ্য, কার্পেট এবং হিমায়িত মাছের রপ্তানি উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে—ক্রমে ৩৬.৪৩ শতাংশ, ২১.৬৭ শতাংশ ও ১২.১ শতাংশ।
একজন ব্যবসায়ী নেতা জানান, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের ধাক্কা সাম্প্রতিক মাসে বাংলাদেশের রপ্তানি কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ। তিনি বলছেন, সেপ্টেম্বর মাসে তৈরি পোশাকের রপ্তানি ৫.৬৬ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে, এবং এটি দেশের সার্বিক রপ্তানিতে প্রভাব ফেলেছে। তিনি আরো বলছেন, পোশাক শিল্পে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির কারণ হলো, বেশির ভাগ ক্রেতাদের নতুন অর্ডার না দেওয়া এবং অতিরিক্ত ২০ শতাংশ রেসিপ্রোকাল শুল্ক চাপানোর চেষ্টা। এতে রপ্তানিকারকদের জন্য এ চাপ বহন করা খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে, কারণ তারা ইতিমধ্যে উচ্চ শুল্ক এবং উৎপাদন খরচের চাপের মধ্যে আছেন।
অতিরিক্ত, বাংলাদেশি রপ্তানিকারকরা ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অন্যান্য বাজারে কঠিন প্রতিযোগিতার শিকার। চীনা ও ভারতীয় প্রস্তুতকারকরা যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশের জন্য রপ্তানি বৃদ্ধি করছে। বঙ্গদেশের এই পরিস্থিতি নিয়ে বিডিরেক্টরেটের সভাপতি আশঙ্কা প্রকাশ করে জানান, এই ধীরগতি আগামী দুই- তিন মাস অব্যাহত থাকতে পারে। তবে, তিনি আশাবাদী যে, আন্তর্জাতিক ক্রেতারা নতুন শুল্ক কাঠামো মানিয়ে নিলে বাংলাদেশের রপ্তানি আবারও পুনরুদ্ধার হবে। তিনি বলেন, এ সময়ের মধ্যে রপ্তানিকারকদের ধৈর্য্য সহকারে ক্রেতাদের চাপ মোকাবিলা করতে হবে।