ইসরায়েলের চরম ডানপন্থি অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোত্রিচ বলেছেন, গাজা থেকে জিম্মি হওয়া ব্যক্তিরা দেশে ফিরলে হামাসকে পুরোপুরি ধ্বংস করতে হবে। বৃহস্পতিবার নিজের এক্স (পূর্বে টুইটার) অ্যাকাউন্টে এই মন্তব্য করেন তিনি।
স্মোত্রিচ লিখেছেন, যখন জিম্মিরা দেশে ফিরবেন, তারাও ইসরায়েলের জন্য হুমকি না হতে পারে তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের শক্তি নিয়ে হামাসের বিরুদ্ধে নিরস্ত্রীকরণ ও নির্মূলের চেষ্টা চালিয়ে যাবে ইসরায়েল। এর মাধ্যমে হামাসের ক্ষমতা চিরতরে নস্যাৎ করতে চান তিনি।
তিনি আরও বলেন, আমি গাজায় যুদ্ধ শেষ করতে চাই। হামাসের সঙ্গে কেউ কোনো যুদ্ধবিরতি চুক্তির পক্ষে ভোট দেবেন না। তবে তিনি নেতানিয়াহু সরকারের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের সরকার পতনের হুমকি দেননি।
স্মোত্রিচ সতর্ক করে বলেন, আমাদের যেন ৭ অক্টোবরের আগের ভুল ধারণায় ফিরে না যেতে হয়। যদি এমন কিছু করে ফেলি, যা আমাদের ভবিষ্যৎ ঝুঁকিতে ফেলে দেয়, তাহলে ভয়াবহ মূল্য পরিশোধ করতে হবে।
গত বুধবার সামাজিক মাধ্যমে ট্রুথ সোশ্যালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ নিয়ে জানান যে, গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য ইসরায়েল ও হামাস উভয়েই রাজি হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ট্রাম্পের সাথে টেলিফোনে কথা বলেন। আশা করা হচ্ছে, ইতিমধ্যে ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা এই পরিকল্পনায় অনুমোদন দিতে পারে। নেতানিয়াহু নেসেট (ইসরায়েলের পার্লামেন্ট) সাধারণত এই ধরনের পরিকল্পনা অনুমোদন করে থাকেন এবং তিনি ট্রাম্পকে এ বিষয়ে ভাষণ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
পরিকল্পনার প্রথম ধাপে গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা এবং হামাসের হাতে থাকা ৪৮ জন জিম্মি (জীবিত ও মৃত) মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত। ধারণা করা হচ্ছে, অনেকে এখনও জীবিত জিম্মি রয়েছে, যার সংখ্যা ২০ জনের কাছাকাছি। অন্যদিকে, অসংখ্য ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে হামলা চালায়, এতে এক হাজার ২১৯ জন নিহত ও ২৫১ জন জিম্মি করা হয়। এর মধ্যে ৪৭ জন এখনো জিম্মি বলে জানা গেছে। ইসরায়েলি বাহিনী দাবি করছে, এর মধ্যে ২৫ জন মারা গেছে। এদিন থেকেই গাজায় ইসরায়েল বর্বর গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে।
হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তথ্য দিয়েছে, গত দুই বছরে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় অন্তত ৬৭ হাজার ১৭৩ জন নিহত হয়েছেন, এর মধ্যে ২০ হাজার ১৭৯ জন শিশু।