বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ স্পষ্ট করেছেন, ‘রাষ্ট্র কোনোভাবে একটা ছেলেখেলার বিষয় নয়। ১৮ কোটি মানুষের ভাগ্যের প্রশ্নে আমরা কোনোভাবে ছিনিমিনি খেলতে পারি না। একজন সুবিশাল রাষ্ট্রকে সঠিক ও নিয়মতান্ত্রিক পথে পরিচালিত করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, এর পাশাপাশি কোনো রাজনৈতিক দলের ছদ্মবেশী চক্রান্তের কাছে বিএনপি কখনোই মাথা নত করবে না।
শনিবার রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের অন্তর্ভুক্ত ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এনডিপি) ৩৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা কখনোই কোন রাজনৈতিক ছদ্মবেশী ছত্রচক্রের দ্বারাই মাথা নত করব না। এ দেশের জনগণই হলো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তপ্রদানকারী মালিক।’ তিনি আরও জানান, বাংলাদেশের সংবিধান পরিবর্তনের জন্য বৈধ ও সাংবিধানিক প্রক্রিয়া ছাড়া কারোই কোন ক্ষমতা নেই। যদি কেউ এই প্রক্রিয়াকে তুচ্ছ করে আবারো সংবিধান পরিবর্তনের দাবি তোলে, তা ভবিষ্যতেও পুনরাবৃত্তি হবে।
তিনি জনগণের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রকাশিত অভিপ্রায়ের প্রশংসা করে বলেন, ‘আদৌ এই দেশের মানুষই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন। তারা গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে তাদের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। এই সরকারও এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবে সেই অভিপ্রায় বাস্তবায়নের জন্য আদালত ও আইনি প্রক্রিয়ার আশ্রয় নিতে হয়েছে, যেমন আমাদের সুপ্রিম কোর্টের মতামত ও আয়োজিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এসব প্রক্রিয়াকে আমরা গ্রহণযোগ্য বলে মনে করি।
সংখ্যানুপাতিক প্রক্রিয়া (পিআর) নিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ৫৬ শতাংশ মানুষ এই পদ্ধতি ভালোভাবেই বোঝে না। তাহলে কি আমরা এই পদ্ধতিকে আশা করতে পারি? সেই কারণে এসব অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা বলার মাধ্যমে জাতিকে বিভ্রান্ত করা উচিত নয়।’
সালাহউদ্দিন আহমদ হুঁশিয়ার করে বলেছেন, যারা হীন রাজনৈতিক স্বার্থে জাতীয় স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিচ্ছে, তারা দেশের স্বার্থ ও জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করছে। এ জন্য তিনি আহ্বান জানান, আসুন সকল রাজনৈতিক দল ও নেতৃবৃন্দ সঠিক পথে ফিরে আসুন।
অন্যদিকে, নির্বাচনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার জন্য যারা ষড়যন্ত্র করছে, তাদেরই একজন দ্বারা এই কাজ চলছে বলে তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন বিলম্বিত হলে, এই দেশে আবার ফ্যাসিবাদের আরও প্রকট রূপ দেখা যাবে।’ এছাড়াও, চলমান আলোচনা ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জোরপূর্বক কিছু সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হচ্ছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
তিনি উল্লেখ করেন যে, আগামী সংসদই সংবিধানের নির্ধারিত অংশের বাস্তবায়নের মূল দায়িত্ব নেবে। সংবিধান সংশোধন ও সংশ্লিষ্ট প্রক্রিয়াগুলোর জন্য নতুন সংসদ তৈরির বিকল্প নেই। পরবর্তী সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে এই প্রতিশ্রুতিগুলো পূরণ করা।
আলোচনাসভার সভাপতিত্ব করেন এনডিপির চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ্ আল হারুন। এতে বক্তব্য রাখেন মানবাধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, গণদলের সভাপতি এ টি এম গোলাম মাওলা চৌধুরী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, বাংলাদেশ সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নুরুল ইসলামসহ বিভিন্ন দলের নেতারা।