জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের প্রধান নেত্রী সারজিস আলম বলেন, কিছু উপদেষ্টা এখন এক ধরনের দায়সারা মনোভাব নিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন। তারা শুধুই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে কোনোভাবেই যেন ‘সেফ এক্সিট’ লাভ করতে পারেন, এই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছেন। এই ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ দেশের জন্য ক্ষতিকর, কারণ এই উপদেষ্টা দলটি শহীদদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আছেন। যদি তারা এভাবেই কাজ চালিয়ে যান, তাহলে দেশের জনগণের সামনে নিজেদের মুখ দেখানোর উপায় থাকবেনা। যারা এমন চিন্তা করেন, তাদের জন্য স্পষ্ট করেই বলতে চান—মৃত্যু ছাড়া এই বিকল্পের অন্য কোন পথ নেই। বাংলাদেশে যেখানে যান, এখানকার মানুষ তাদের শনাক্ত করবে।
তিনি এই কথা বলেন গতকাল মঙ্গলবার নওগাঁ সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এনসিপির জেলা ও উপজেলা সমন্বয় সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপের সময়।
সারজিস আলম অভিযোগ করেন, নির্বাচন কমিশন একটি দলকে – যা স্থানীয়ভাবে বলা হয় জাতীয় লীগ – নিবন্ধন দেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। কিন্তু সেই দলের অস্তিত্ব বলতে টয়লেটের পাশে একটি ছোট ঘর ছাড়া আর কিছুই দেখানো যাচ্ছে না। তিনি বলেন, যেকোনো দলকে নিবন্ধিত করার জন্য যদি পুরনো মানদণ্ড অনুসরণ না করে অন্য কিছু চিন্তা করা হয়, তবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও যাচাই-বাছাই করে নিবন্ধন দিতে হবে। এর মাধ্যমে বোঝাতে চান, এটি হয়তো আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের একটি অপচেষ্টা, যা জনগণ ও এনসিপি কখনো মেনে নেবে না।
সারজিস আলম বলেন, ‘বাংলাদেশের ভালমানুষেরা একসাথে হয়ে নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠন করতে চাইলে অবশ্যই সেটাকে স্বাগত জানাব। তবে মনে রাখতে হবে, আওয়ামী লীগের যে কোন ভার্সন, বাংলাদেশের অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে আর তার প্রাসঙ্গিকতা নেই। এই ধরনের আচরণ আমাদের মানতে পারবে না।’
তিনি আরও জানান, আগামী জাতীয় নির্বাচনে এনসিপি শাপলা প্রতীক নিয়ে অংশ নেবে। ‘শাপলা প্রতীকেই আইনগত কোনো বাধা নেই,’ বলেন তিনি। তবে, নির্বাচন কমিশন স্বপ্রণোদিতভাবে বা চাপের মুখে এই আচরণ করছে— এমনটি মেনে নেওয়া হবে না বলে স্পষ্ট করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, নির্বাচন কমিশন স্ব Betrহাদেশের স্বাধীন সংবিধান প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে দায়িত্ববোধ দেখাবে।
পরে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারের প্রসঙ্গে সারজিস আলম বলেন, ‘তিনি বলেছেন, যে ভাইকে দেশেই রেখেছিলেন, সেটাকে আর দেখা যাবে না। তার স্মৃতি যেখানে, সেই ঘরটি মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই ধরনের ঘটনা আমাদের মনে আশংকা সৃষ্টি করে। আমরা আশা করি, ভবিষ্যতের বাংলাদেশে এমন ঘটনা আবার না ঘটুক। বিএনপির অনেক নেতা ও কর্মীর সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটানো হয়েছে, যা মূলত আওয়ামী লীগের কীর্তি। তাই, স্থানীয় পর্যায়ে আওয়ামী লীগের দোসরদের দ্বারা অর্থের বিনিময়ে বা সুবিধা পেয়ে যেন এ ধরনের অপপ্রচার বা সন্ত্রাসের আশ্রয়-প্রশ্রয় না দেওয়া হয়, সে বিষয়ে আমাদের নজরদারি থাকুক।’
সমন্বয় সভায় এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন, রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান ইমন এবং অন্যান্য উপজেলা নেতারা উপস্থিত ছিলেন।