বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্পষ্ট প্রকাশ করেছেন যে, জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫-এর বাস্তবায়নের জন্য আদেশ জারির এখতিয়ার এই সরকারের বা সংবিধান অনুযায়ী অন্তর্বর্তী সরকারের নয়। তিনি বলেন, সংবিধানের ১৫২ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুসারে, এই ধরনের আদেশের ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির। এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও জানান, বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে তিনি এই বক্তব্য দিলেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, সরকার ফেব্রুয়ারি মাসে প্রণীত এই জাতীয় সনদ সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব, সংযুক্তি-২ ও সংযুক্তি-৩-এর খসড়া সংযুক্ত করার প্রস্তাব দেয়া হলেও, এই আদেশের এখতিয়ার সরকারের নয়। বরং, এটি মূলত রাষ্ট্রপতির এখতিয়ার। বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, এই প্রস্তাবের মূল ইস্যুগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত ও ভিন্নমত অন্তর্ভুক্ত হয়নি, যা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার পরিপন্থী। এতে বোঝা যায়, এই প্রস্তাব একপেশে এবং জবরদস্তিমূলকভাবে জাতির ওপর চাপানো হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে চলা আলোচনা ও কমিশন গঠন প্রক্রিয়া মূলত অর্থহীন ছিল এবং এতে সময় ও অর্থের অপচয় হয়েছে। গণতন্ত্রে ভিন্নমত থাকা স্বাভাবিক হলেও, ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর গণতান্ত্রিক অধিকারউল্লেখ্য উপেক্ষা করেছে। তিনি বলেন, এই বাস্তবায়ন আদেশে বলা হয়েছে, জাতীয় সংসদের সংসদ সদস্যরা শপথ নেওয়ার পাশাপাশি একটি সংবিধান সংস্কার পরিষদও গঠন হবে, যা একই সময়ে সংসদ হিসেবে কাজ করবে। এ বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে, কারণ সংবিধান সংশোধনের জন্য নির্বাচন ও গণভোটের জন্য প্রশাসনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোর এখতিয়ার আলাদা।
গণভোটের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা এসেছে, তাই নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজন অবাস্তব ও অপ্রয়োজনীয়। একই সঙ্গে, বলছেন যে, একই ব্যয়ে নির্বাচন ও গণভোট একসঙ্গে অনুষ্ঠানে কোনো সমর্থন নেই।
মির্জা ফখরুল বলেন, তবে আইনসম্মতভাবেই সরকার এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে পারে, যেমন আইন, বিধি বা অধ্যাদেশ জারি করে। কিন্তু, তিনি মনে করেন, চলমান আলোচনা ও প্রস্তাবগুলো জাতীয় ঐক্যকে বিভক্ত করবে এবং দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি ডেকে আনবে।
তিনি উল্লেখ করেন, দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও ২০২৪ সালের ছাত্র গণঅভ্যুত্থানের পটভূমিতে জাতির প্রত্যাশা অনুসারে পুর্নঐক্য এবং একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া জরুরি। তিনি আশা প্রকাশ করেন, অন্তর্বর্তী সরকার একটি নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্পন্ন করবে, যাতে সরকার ও সংসদ আরও কার্যকরভাবে দেশের উন্নয়নের কেন্দ্রে পরিণত হতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির অন্য নেতারা, যেমন নজরুল ইসলাম খান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, সেলিম রহমান ও সালাউদ্দিন আহমদ উপস্থিত ছিলেন।
 
																			 
										 শ্রীমঙ্গল২৪ ডেস্ক
																শ্রীমঙ্গল২৪ ডেস্ক								 

























