০৭:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ২৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষঃ
শুক্রবারের মধ্যে জুলাই সংবিধানের চূড়ান্ত রোডম্যাপ প্রকাশের আশা স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট নভেম্বরের মধ্যে চায় জামায়াত হাসিনার বিরুদ্ধে আজ সাক্ষ্য দেবেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এনবিআরের সিদ্ধান্ত: এমপি কোটার ৩০ বিলাসবহুল গাড়ি নিলামে বিক্রির পরিবর্তে হস্তান্তর তীব্র যানজটে আটকা পড়ে সড়ক উপদেষ্টা মোটরসাইকেলে গন্তব্যে পৌঁছেছেন ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনের পাশে আবর্জনার স্তূপ ঢেকে দেওয়া হলো বিশিষ্ট উপদেষ্টার আগমনের জন্য পাঁচ দিন ধরে সাগরে ভাসমান ২৬ জেলেকে উদ্ধার করলো নৌ বাহিনী মেনন-পলক-দস্তগীরসহ চারজনের বিরুদ্ধে নতুন মামলায় গ্রেফতার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তুরস্কের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ: দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও জোরদার করার প্রত্যয়

শিক্ষাঙ্গনকে কলুষিত করা মোটেও ঠিক নয়

বাংলাদেশের শিক্ষার বর্তমান পরিস্থিতি উদ্বেগজনক দিক দিয়ে বিব্রতকর। শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষাবিদরা কেউই এই পরিস্থিতিতে অসন্তুষ্ট নয়, বরং হতাশ। ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর থেকে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে উচ্ছৃঙ্খলা, অব্যবস্থা, অনিয়ম, মারামারি, বিচার-বিবাদের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। শিক্ষার্থীরা লেখাপড়াই থেকে অসতর্ক ও অপ্রত্যাশিতভাবে দূরে চলে যাচ্ছে। যদিও কিছু প্রতিষ্ঠান ধীরে ধীরে নিয়মের পথে ফিরতে চাচ্ছে, তবে শিক্ষার মান এখনও অনেক দৃষ্টিকটু। শিক্ষা বলতে বোঝায় এমন পদ্ধতিগত প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে জ্ঞান, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জিত হয়। এক শিশুর জীবন শুরু থেকে শেখার মাধ্যমেই তার সার্বিক বিকাশ ঘটে, পাশপাশি সমাজে একজন সৃষ্টিশীল ও সৎ মানুষ হিসেবে গড়ে উঠার জন্য শিক্ষাই মুখ্য ভূমিকা পালন করে। এ কারণেই সমাজবিজ্ঞানীরা অনেকে বলেছেন, শিক্ষাই জাতির রূপকার, এবং শিক্ষাজাতি গঠন করে দেশের চরিত্র। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই আমাদের সন্তানরা জ্ঞান অর্জন করে, নিজের ভবিষ্যৎ গড়ে তোলে, চরিত্র গঠন করে এবং আদর্শবান মানুষ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে। তাই, শিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গন একে অপরের পরিপূরক। একটি মূল্যবান শিক্ষা সম্পন্ন পরিবেশ ছাড়া এটি অসম্ভব। কিন্তু দুঃখের বিষয়, রাজধানীর ঢাকা কলেজ, সিটি কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে অহরহ বিবাদ, সংঘর্ষ ও অশোভন আচরণের খবর নজরে আসছে, যা মোটেও কাম্য নয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অপ্রয়োজনীয় হিংসা, বিদ্বেষ, অহংকার, মারামারি, অপমান এবং অপদস্তের প্রবণতা বেড়েই চলছে। এর ফলে দেশের শিক্ষার পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, যা জাতির জন্য এক গভীর উদ্বেগের বিষয়। দেশের যুব সমাজের একাংশ দেশ ছেড়ে যাওয়ার চিন্তাভাবনা করছেন, কারণ তারা মনে করছেন যে এখানে উচ্চশিক্ষার মান ও পরিবেশ সন্তোষজনক নয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নানা ধরনের অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থ আদায়, হিংসাত্মক কর্মকাণ্ড ও শাসনের অভাব দেখা দিয়েছে। কখনো তারা পুলিশকে অপপ্রয়োগ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে, আবার কখনো শিক্ষার্থীদের অযৌক্তিক দাবিতে দমন-পীড়া চালাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বেশ কিছু শিক্ষক-শিক্ষার্থী নিজেদের দায়িত্ব এড়িয়ে বেড়াচ্ছে, যা অভিভাবক সমাজকে ক্ষুব্ধ করে তুলছে। দেশের সকল স্তরের শিক্ষাব্যবস্থা পুনরায় সতেজ ও সুন্দর করতে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সকলের—শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সমাজের প্রতিনিধিদের একযোগে কাজ করতে হবে। আমাদের উদ্দেশ্য হলো একদিকে শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন ও অন্যদিকে শিক্ষাঙ্গনের মানুষকে নিরাপদ ও সুন্দর পরিবেশ উপহার দেওয়া। এজন্য সবাইকে একসঙ্গে এগিয়ে আসতে হবে, কারণ শুধুমাত্র একার পক্ষে এটি সম্ভব নয়। বর্তমান পরিস্থিতি আমাদের সকলের জন্য একটি সতর্কবার্তা। চোরা ছাপের মতো এই অসাধু কার্যকলাপ বন্ধ করে শিক্ষাঙ্গনকে আবারও উত্তম পরিবেশে রূপান্তর করতে হবে। এটাই দেশের ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য হলো অঙ্গীকার ও দায়িত্ব।

ট্যাগ :
সর্বাধিক পঠিত

শিক্ষাঙ্গনকে কলুষিত করা মোটেও ঠিক নয়

প্রকাশিতঃ ১০:৫০:০৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ অগাস্ট ২০২৫

বাংলাদেশের শিক্ষার বর্তমান পরিস্থিতি উদ্বেগজনক দিক দিয়ে বিব্রতকর। শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষাবিদরা কেউই এই পরিস্থিতিতে অসন্তুষ্ট নয়, বরং হতাশ। ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর থেকে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে উচ্ছৃঙ্খলা, অব্যবস্থা, অনিয়ম, মারামারি, বিচার-বিবাদের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। শিক্ষার্থীরা লেখাপড়াই থেকে অসতর্ক ও অপ্রত্যাশিতভাবে দূরে চলে যাচ্ছে। যদিও কিছু প্রতিষ্ঠান ধীরে ধীরে নিয়মের পথে ফিরতে চাচ্ছে, তবে শিক্ষার মান এখনও অনেক দৃষ্টিকটু। শিক্ষা বলতে বোঝায় এমন পদ্ধতিগত প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে জ্ঞান, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জিত হয়। এক শিশুর জীবন শুরু থেকে শেখার মাধ্যমেই তার সার্বিক বিকাশ ঘটে, পাশপাশি সমাজে একজন সৃষ্টিশীল ও সৎ মানুষ হিসেবে গড়ে উঠার জন্য শিক্ষাই মুখ্য ভূমিকা পালন করে। এ কারণেই সমাজবিজ্ঞানীরা অনেকে বলেছেন, শিক্ষাই জাতির রূপকার, এবং শিক্ষাজাতি গঠন করে দেশের চরিত্র। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই আমাদের সন্তানরা জ্ঞান অর্জন করে, নিজের ভবিষ্যৎ গড়ে তোলে, চরিত্র গঠন করে এবং আদর্শবান মানুষ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে। তাই, শিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গন একে অপরের পরিপূরক। একটি মূল্যবান শিক্ষা সম্পন্ন পরিবেশ ছাড়া এটি অসম্ভব। কিন্তু দুঃখের বিষয়, রাজধানীর ঢাকা কলেজ, সিটি কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে অহরহ বিবাদ, সংঘর্ষ ও অশোভন আচরণের খবর নজরে আসছে, যা মোটেও কাম্য নয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অপ্রয়োজনীয় হিংসা, বিদ্বেষ, অহংকার, মারামারি, অপমান এবং অপদস্তের প্রবণতা বেড়েই চলছে। এর ফলে দেশের শিক্ষার পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, যা জাতির জন্য এক গভীর উদ্বেগের বিষয়। দেশের যুব সমাজের একাংশ দেশ ছেড়ে যাওয়ার চিন্তাভাবনা করছেন, কারণ তারা মনে করছেন যে এখানে উচ্চশিক্ষার মান ও পরিবেশ সন্তোষজনক নয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নানা ধরনের অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থ আদায়, হিংসাত্মক কর্মকাণ্ড ও শাসনের অভাব দেখা দিয়েছে। কখনো তারা পুলিশকে অপপ্রয়োগ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে, আবার কখনো শিক্ষার্থীদের অযৌক্তিক দাবিতে দমন-পীড়া চালাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বেশ কিছু শিক্ষক-শিক্ষার্থী নিজেদের দায়িত্ব এড়িয়ে বেড়াচ্ছে, যা অভিভাবক সমাজকে ক্ষুব্ধ করে তুলছে। দেশের সকল স্তরের শিক্ষাব্যবস্থা পুনরায় সতেজ ও সুন্দর করতে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সকলের—শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সমাজের প্রতিনিধিদের একযোগে কাজ করতে হবে। আমাদের উদ্দেশ্য হলো একদিকে শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন ও অন্যদিকে শিক্ষাঙ্গনের মানুষকে নিরাপদ ও সুন্দর পরিবেশ উপহার দেওয়া। এজন্য সবাইকে একসঙ্গে এগিয়ে আসতে হবে, কারণ শুধুমাত্র একার পক্ষে এটি সম্ভব নয়। বর্তমান পরিস্থিতি আমাদের সকলের জন্য একটি সতর্কবার্তা। চোরা ছাপের মতো এই অসাধু কার্যকলাপ বন্ধ করে শিক্ষাঙ্গনকে আবারও উত্তম পরিবেশে রূপান্তর করতে হবে। এটাই দেশের ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য হলো অঙ্গীকার ও দায়িত্ব।