১১:১০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫, ২৫ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষঃ
উপদেষ্টা পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জানাবে সরকারকে মতামত সমন্বয় করে: আলী রীয়াজ জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর ১৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে ১৫ অক্টোবর হবে জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান ঢাকা-চট্টগ্রাম রেল যোগাযোগের উন্নয়নে সরকারের নতুন উদ্যোগ শুক্রবারের মধ্যে জুলাই সংবিধানের চূড়ান্ত রোডম্যাপ প্রকাশের আশা স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট নভেম্বরের মধ্যে চায় জামায়াত হাসিনার বিরুদ্ধে আজ সাক্ষ্য দেবেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এনবিআরের সিদ্ধান্ত: এমপি কোটার ৩০ বিলাসবহুল গাড়ি নিলামে বিক্রির পরিবর্তে হস্তান্তর

মহেশখালী-মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর: মাছ রপ্তানি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে সম্ভাবনা

নির্মাণাধীন মহেশখালী-মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরের উন্নত অবকাঠামো ও লজিস্টিক সুবিধাগুলো দেশের মৎস্য ও সামুদ্রিক খাদ্য রপ্তানি খাতে বড় ধরনের প্রবৃদ্ধির দ্বারপ্রান্তে কাজ করছে। শিল্পবিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই উন্নয়ন দেশের অর্থনীতিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে এবং দেশের প্রাথমিক রপ্তানি আয় বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

মহেশখালী-মাতারবাড়ি ইন্টিগ্রেটেড ইনপ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের অংশ হিসেবে এই বন্দরের নির্মাণে সহায়তা দিচ্ছে জাপান। এটি চট্টগ্রাম বন্দরের জটিলতা কমাতে এবং বড় জাহাজ সরাসরি পরিবহন সুবিধা নিশ্চিত করে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। ফলে দেশের মাছের বাজারে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে এবং দ্রুত মাছ পরিবহন করা সম্ভব হবে।

মহেশখালীর মাছ ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম বলেন, নতুন এই বন্দরটি হিমায়িত মাছ ও সামুদ্রিক খাদ্যের মতো দ্রুত পচনশীল পণ্য পরিবহনে সময় অনেক কমিয়ে দেবে। এর ফলে পণ্য সতেজতা বজায় থাকবে, এবং বিশ্ববাজারে আমাদের পণ্য প্রতিযোগিতামূলক দামে পৌঁছানো সহজ হবে।

অপরদিকে, মাতারবাড়ির জেলে মোহাম্মদ আলী জানান, গভীর সমুদ্রবন্দর চালু হলে ধরা মাছ দ্রুত দেশের বিভিন্ন বাজারে পৌঁছাতে পারবে। এতে মাছের মূল্য প্রায় দ্বিগুণ হবে, যা আমাদের生活মান উন্নয়নে সহায়তা করবে।

বিশ্বের বাজারে সামুদ্রিক মাছের ব্যবসা এখনই অনেক বড়, তবে বাংলাদেশে ততটা বিকাশ লাভ করেনি। মিডা (মহেশখালী-মাতারবাড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) প্রতিষ্ঠার ফলে এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর সুযোগ বাড়ছে।

বিশ্বের মোট মাছের প্রায় ৭ শতাংশ বঙ্গোপসাগর থেকে আসে। এই অঞ্চলে প্রায় ৪৫ কোটি মানুষ ‘ব্লু ইকোনমি’ এর ওপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশ ‘ইন্ডিয়ান ওশান টুনা কমিশন’ (আইওটিসি) সদস্য, যার অর্থ একদিকে মাছ ধরা বিষয়ে কিছু কোটা পাওয়া যায়, অন্যদিকে কিছু প্রজাতির মাছ ধরায় স্বাধীনতা রয়েছে। তবুও প্রতি বছর কোটা পূরণে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়।

এ সমস্যা সমাধানে, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ২৮টি গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার জাহাজ বা লংলাইনার তৈরির অনুমতি দিয়েছে। এর মাধ্যমে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরা আরও সহজ হবে এবং কোটা সংক্রান্ত সমস্যা কমবে।

মাতারবাড়ি বন্দরের সুবিধা শুধু মাছের রপ্তানি সীমিত রাখবে না, এটি চিংড়ি শিল্পের মতো অন্যান্য খাতেও অগ্রগতি সাধনে ভূমিকা রাখবে। ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানে দ্রুত পণ্য পাঠানোর জন্য এটি সহায়ক হবে।

রপ্তানি প্রক্রিয়া সহজতর ও খরচ কমাতে এই বন্দর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ফিলেট, স্মোকড মাছ, রেডি-টু-ইট সামুদ্রিক খাদ্যসহ মানসম্পন্ন পণ্য রপ্তানির পথ প্রশস্ত হবে।

উদাহরণস্বরূপ, স্ক্যালপ (এক ধরনের শামুক) প্রক্রিয়াজাতকরণ ও রপ্তানি থেকে ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি, মিডার শক্তিশালী লজিস্টিক সুবিধা দেশের বিনিয়োগের অঙ্গনেও নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ট্যাগ :
সর্বাধিক পঠিত

বিজয় থালাপতির বাড়ি ঘিরে রেখেছে পুলিশ

মহেশখালী-মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর: মাছ রপ্তানি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে সম্ভাবনা

প্রকাশিতঃ ১০:৫০:৪২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নির্মাণাধীন মহেশখালী-মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরের উন্নত অবকাঠামো ও লজিস্টিক সুবিধাগুলো দেশের মৎস্য ও সামুদ্রিক খাদ্য রপ্তানি খাতে বড় ধরনের প্রবৃদ্ধির দ্বারপ্রান্তে কাজ করছে। শিল্পবিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই উন্নয়ন দেশের অর্থনীতিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে এবং দেশের প্রাথমিক রপ্তানি আয় বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

মহেশখালী-মাতারবাড়ি ইন্টিগ্রেটেড ইনপ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের অংশ হিসেবে এই বন্দরের নির্মাণে সহায়তা দিচ্ছে জাপান। এটি চট্টগ্রাম বন্দরের জটিলতা কমাতে এবং বড় জাহাজ সরাসরি পরিবহন সুবিধা নিশ্চিত করে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। ফলে দেশের মাছের বাজারে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে এবং দ্রুত মাছ পরিবহন করা সম্ভব হবে।

মহেশখালীর মাছ ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম বলেন, নতুন এই বন্দরটি হিমায়িত মাছ ও সামুদ্রিক খাদ্যের মতো দ্রুত পচনশীল পণ্য পরিবহনে সময় অনেক কমিয়ে দেবে। এর ফলে পণ্য সতেজতা বজায় থাকবে, এবং বিশ্ববাজারে আমাদের পণ্য প্রতিযোগিতামূলক দামে পৌঁছানো সহজ হবে।

অপরদিকে, মাতারবাড়ির জেলে মোহাম্মদ আলী জানান, গভীর সমুদ্রবন্দর চালু হলে ধরা মাছ দ্রুত দেশের বিভিন্ন বাজারে পৌঁছাতে পারবে। এতে মাছের মূল্য প্রায় দ্বিগুণ হবে, যা আমাদের生活মান উন্নয়নে সহায়তা করবে।

বিশ্বের বাজারে সামুদ্রিক মাছের ব্যবসা এখনই অনেক বড়, তবে বাংলাদেশে ততটা বিকাশ লাভ করেনি। মিডা (মহেশখালী-মাতারবাড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) প্রতিষ্ঠার ফলে এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর সুযোগ বাড়ছে।

বিশ্বের মোট মাছের প্রায় ৭ শতাংশ বঙ্গোপসাগর থেকে আসে। এই অঞ্চলে প্রায় ৪৫ কোটি মানুষ ‘ব্লু ইকোনমি’ এর ওপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশ ‘ইন্ডিয়ান ওশান টুনা কমিশন’ (আইওটিসি) সদস্য, যার অর্থ একদিকে মাছ ধরা বিষয়ে কিছু কোটা পাওয়া যায়, অন্যদিকে কিছু প্রজাতির মাছ ধরায় স্বাধীনতা রয়েছে। তবুও প্রতি বছর কোটা পূরণে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়।

এ সমস্যা সমাধানে, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ২৮টি গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার জাহাজ বা লংলাইনার তৈরির অনুমতি দিয়েছে। এর মাধ্যমে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরা আরও সহজ হবে এবং কোটা সংক্রান্ত সমস্যা কমবে।

মাতারবাড়ি বন্দরের সুবিধা শুধু মাছের রপ্তানি সীমিত রাখবে না, এটি চিংড়ি শিল্পের মতো অন্যান্য খাতেও অগ্রগতি সাধনে ভূমিকা রাখবে। ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানে দ্রুত পণ্য পাঠানোর জন্য এটি সহায়ক হবে।

রপ্তানি প্রক্রিয়া সহজতর ও খরচ কমাতে এই বন্দর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ফিলেট, স্মোকড মাছ, রেডি-টু-ইট সামুদ্রিক খাদ্যসহ মানসম্পন্ন পণ্য রপ্তানির পথ প্রশস্ত হবে।

উদাহরণস্বরূপ, স্ক্যালপ (এক ধরনের শামুক) প্রক্রিয়াজাতকরণ ও রপ্তানি থেকে ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি, মিডার শক্তিশালী লজিস্টিক সুবিধা দেশের বিনিয়োগের অঙ্গনেও নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।