বাংলাদেশে গত এক দিনে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এই বছরের মোট ডেঙ্গু মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ১৮৭ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বুধবার প্রকাশিত বুলেটিনে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৬৬৮ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ফলে এই বছরের মোট হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৩ হাজার ৮৪১ জনে।
আজকের দিনটিতে মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং অন্য দুজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল এবং ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এই পাঁচজনের মধ্যে দুজনের বয়স ৬০ বছর, বাকিদের বয়স যথাক্রমে ৫০, ৫৫ এবং ১২ বছর। মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজন নারী এবং দুজন পুরুষ।
গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তদের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সেপ্টেম্বর মাসে এই দিন পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা সর্বোচ্চ ১২,৩৬৫ জনে পৌঁছেছে, যা এ বছরের প্রথম থেকে সবচেয়ে বেশি। এর আগে জুলাইয়ে ১০,৬৮৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল।
এছাড়াও জানুয়ারি মাসে ১,১৬১ জন, ফেব্রুয়ারি ৩৭৪ জন, মার্চে ৩৩৬ জন, এপ্রিল ৭০১ জন, মে মাসে ১,৭৭৩ জন, জুনে ৫,৯৫১ জন, এবং আগস্টে ১০,৪৯৬ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতালে ভর্তির ঘটনা রেকর্ড হয়েছে।
এ বছর ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে — সেপ্টেম্বর মাসে, যেখানে মৃত্যু সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৫ জন। এর আগে জুলাইয়ে ৪১ জনের প্রাণ হারানোর ঘটনা ঘটেছিল। অন্যান্য মাসে মৃত্যু সংখ্যা ছিল জানুয়ারিতে ১০, ফেব্রুয়ারিতে ৩, এপ্রিল ৭, মে ৩, জুন ১৯ এবং আগস্ট ৩৯ জন। মার্চ মাসে কোন রোগীর মৃত্যু রেকর্ডে আসেনি।
বুলেটিনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ভর্তি রোগীদের মধ্যে ১৬৭ জনই ঢাকা মহানগরীর দুই সিটি করপোরেশন এলাকার। এছাড়াও অন্যান্য বিভাগের মধ্যে ভর্তির সংখ্যা হলো— ঢাকা বিভাগে ১২৬ জন, ময়মনসিংহে ৩০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১০৬ জন, খুলনা বিভাগে ৪১ জন, রাজশাহীতে ৩৫ জন, রংপুরে পাঁচজন এবং বরিশালে ১৫৮ জন।
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ২০১৬ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ৭৫৭ জন এবং বাইরের অন্যান্য হাসপাতালে ১২৫৯ জন ভর্তি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এই ডেঙ্গুজনিত ভর্তি ও মৃত্যুর তথ্য ২০০০ সাল থেকে সংগ্রহ করে আসছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গুর শিকার ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী ভর্তি হয়েছে, যেখানে মৃত্যু হয়েছে ১৭০৫ জনের।