০১:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ২৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষঃ
শুক্রবারের মধ্যে জুলাই সংবিধানের চূড়ান্ত রোডম্যাপ প্রকাশের আশা স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট নভেম্বরের মধ্যে চায় জামায়াত হাসিনার বিরুদ্ধে আজ সাক্ষ্য দেবেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এনবিআরের সিদ্ধান্ত: এমপি কোটার ৩০ বিলাসবহুল গাড়ি নিলামে বিক্রির পরিবর্তে হস্তান্তর তীব্র যানজটে আটকা পড়ে সড়ক উপদেষ্টা মোটরসাইকেলে গন্তব্যে পৌঁছেছেন ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনের পাশে আবর্জনার স্তূপ ঢেকে দেওয়া হলো বিশিষ্ট উপদেষ্টার আগমনের জন্য পাঁচ দিন ধরে সাগরে ভাসমান ২৬ জেলেকে উদ্ধার করলো নৌ বাহিনী মেনন-পলক-দস্তগীরসহ চারজনের বিরুদ্ধে নতুন মামলায় গ্রেফতার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তুরস্কের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ: দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও জোরদার করার প্রত্যয়

প্রবাসীদের ঐক্য ও উদ্যোগে গণঅভ্যুত্থানের স্বপ্ন বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেশের পুনর্গঠন ও উন্নয়নে সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলছেন, দেশের ‘অবিচ্ছেদ্য অংশ’ হিসেবে প্রবাসী বাংলাদেশিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন, বিশেষ করে সম্প্রতি جুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখা হচ্ছে, তা বাস্তবায়নে তাদের নিজ নিজ সক্ষমতা অনুযায়ী কাজ করতে হবে।

নিউইয়র্কে শনিবার অনুষ্ঠিত ‘এনআরবি কানেক্ট ডে: এমপাওয়ারিং গ্লোবাল বাংলাদেশি’ শীর্ষক অনুষ্ঠান에서 তিনি বলেন, ‘আগের মতো গ্যালারিতে বসে খেলা দেখার দিন শেষ। এখন আমাদের নিজেকে মাঠে নামতে হবে, খেলতে হবে।’ প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন যতই গুরুত্বপূর্ণ, তা সবার সচেতনতা ও অংশগ্রহণের মাধ্যমে সম্ভব। তিনি দৃঢ় যে, প্রবাসীরা এখন দেশের স্বপ্নের অংশীদার হয়ে উঠেছেন।

অধ্যাপক ইউনূস জাতিসংঘের সফরে বাংলাদেশি রাজনৈতিক নেতাদের উপস্থিতির প্রশংসা করে বলেন, তাদের এ সফরে যোগদান আমাদের অমূল্য আশ্বাস দিয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতিকে তীব্র সমর্থন করছে। তিনি উল্লেখ করেন, করোনাকালীন সময় অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে রেমিট্যান্সই দেশকে টেনে তুলেছে।

প্রবাসী বাংলাদেশিদের একাগ্রতায় তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, বাংলাদেশে তরুণ জনগোষ্ঠীর সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে। বিদেশি কোম্পানিগুলোর জন্য বাংলাদেশে কারখানা স্থানান্তরের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের মানবসম্পদকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশকে উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। পাশাপাশি ভবিষ্যতের জন্য তিনি আশ্বস্ত করেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রবাসীদের ভোটদানের সুযোগ নিশ্চিত করা হবে।

অধ্যাপক ইউনূস নেপাল, ভুটান ও ভারতের কিছু রাজ্য সমুদ্রবন্দরের অভাবে স্থলবেষ্টিত বলে উল্লেখ করে বলেন, যদি বাংলাদেশ সমুদ্রবন্দর খুলে দেয়, তাহলে সেখানে উন্নয়ন ও ব্যবসার বিকল্প সুযোগ সৃষ্টি হবে। ইতোমধ্যে কক্সবাজার-মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরের জন্য প্রস্তুতি চলছে, এ কথা তিনি জানান। বঙ্গোপসাগরের গ্যাস সম্পদ অনুসন্ধানের উপরেও জোর দেন তিনি।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও রেমিট্যান্সে প্রবাসীদের অবদান ব্যাখ্যা করেন। তিনি সরকারি বিভিন্ন উদ্যোগের কথাও তুলে ধরেন, যাতে বিনিয়োগের পরিবেশ আরও উৎসাহিত হয়।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল প্রবাসীদের অব্যাহত সহায়তা এবং আগামী সাধারণ নির্বাচনে ভোটদানের পদ্ধতি ব্যাখ্যা করেন। এছাড়া, ‘ব্রিজিং বর্ডারস: কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ডায়াস্পোরা এনগেজমেন্ট’ শীর্ষক আলোচনাসভায় বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা তাদের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন।

বিএনপি, জামায়াত ও অন্যান্য দল দাবী করেন, কর্তৃপক্ষের কঠোরতাসহ রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তিত হলে দেশের ভেতর শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে।

অতিতের শিক্ষণীয় বিষয়ের ওপর আলোকপাত করে, নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভবিষ্যৎ বাংলাদেশকে নিরাপদ ও শক্তিশালী করতে উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিকল্প নেই।

প্রধান উপদেষ্টা শেষ পর্যায়ে একটি মোবাইল অ্যাপ ‘শুভেচ্ছা’ উদ্বোধন করেন, যা প্রবাসীদের জন্য প্রয়োজনীয় প্রাথমিক পরিষেবা, নির্দেশনা ও বিনিয়োগের সুযোগ সহজ করে তুলবে।

ট্যাগ :
সর্বাধিক পঠিত

প্রবাসীদের ঐক্য ও উদ্যোগে গণঅভ্যুত্থানের স্বপ্ন বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি

প্রকাশিতঃ ১০:৪৭:২০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেশের পুনর্গঠন ও উন্নয়নে সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলছেন, দেশের ‘অবিচ্ছেদ্য অংশ’ হিসেবে প্রবাসী বাংলাদেশিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন, বিশেষ করে সম্প্রতি جুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখা হচ্ছে, তা বাস্তবায়নে তাদের নিজ নিজ সক্ষমতা অনুযায়ী কাজ করতে হবে।

নিউইয়র্কে শনিবার অনুষ্ঠিত ‘এনআরবি কানেক্ট ডে: এমপাওয়ারিং গ্লোবাল বাংলাদেশি’ শীর্ষক অনুষ্ঠান에서 তিনি বলেন, ‘আগের মতো গ্যালারিতে বসে খেলা দেখার দিন শেষ। এখন আমাদের নিজেকে মাঠে নামতে হবে, খেলতে হবে।’ প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন যতই গুরুত্বপূর্ণ, তা সবার সচেতনতা ও অংশগ্রহণের মাধ্যমে সম্ভব। তিনি দৃঢ় যে, প্রবাসীরা এখন দেশের স্বপ্নের অংশীদার হয়ে উঠেছেন।

অধ্যাপক ইউনূস জাতিসংঘের সফরে বাংলাদেশি রাজনৈতিক নেতাদের উপস্থিতির প্রশংসা করে বলেন, তাদের এ সফরে যোগদান আমাদের অমূল্য আশ্বাস দিয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতিকে তীব্র সমর্থন করছে। তিনি উল্লেখ করেন, করোনাকালীন সময় অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে রেমিট্যান্সই দেশকে টেনে তুলেছে।

প্রবাসী বাংলাদেশিদের একাগ্রতায় তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, বাংলাদেশে তরুণ জনগোষ্ঠীর সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে। বিদেশি কোম্পানিগুলোর জন্য বাংলাদেশে কারখানা স্থানান্তরের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের মানবসম্পদকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশকে উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। পাশাপাশি ভবিষ্যতের জন্য তিনি আশ্বস্ত করেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রবাসীদের ভোটদানের সুযোগ নিশ্চিত করা হবে।

অধ্যাপক ইউনূস নেপাল, ভুটান ও ভারতের কিছু রাজ্য সমুদ্রবন্দরের অভাবে স্থলবেষ্টিত বলে উল্লেখ করে বলেন, যদি বাংলাদেশ সমুদ্রবন্দর খুলে দেয়, তাহলে সেখানে উন্নয়ন ও ব্যবসার বিকল্প সুযোগ সৃষ্টি হবে। ইতোমধ্যে কক্সবাজার-মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরের জন্য প্রস্তুতি চলছে, এ কথা তিনি জানান। বঙ্গোপসাগরের গ্যাস সম্পদ অনুসন্ধানের উপরেও জোর দেন তিনি।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও রেমিট্যান্সে প্রবাসীদের অবদান ব্যাখ্যা করেন। তিনি সরকারি বিভিন্ন উদ্যোগের কথাও তুলে ধরেন, যাতে বিনিয়োগের পরিবেশ আরও উৎসাহিত হয়।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল প্রবাসীদের অব্যাহত সহায়তা এবং আগামী সাধারণ নির্বাচনে ভোটদানের পদ্ধতি ব্যাখ্যা করেন। এছাড়া, ‘ব্রিজিং বর্ডারস: কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ডায়াস্পোরা এনগেজমেন্ট’ শীর্ষক আলোচনাসভায় বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা তাদের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন।

বিএনপি, জামায়াত ও অন্যান্য দল দাবী করেন, কর্তৃপক্ষের কঠোরতাসহ রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তিত হলে দেশের ভেতর শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে।

অতিতের শিক্ষণীয় বিষয়ের ওপর আলোকপাত করে, নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভবিষ্যৎ বাংলাদেশকে নিরাপদ ও শক্তিশালী করতে উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিকল্প নেই।

প্রধান উপদেষ্টা শেষ পর্যায়ে একটি মোবাইল অ্যাপ ‘শুভেচ্ছা’ উদ্বোধন করেন, যা প্রবাসীদের জন্য প্রয়োজনীয় প্রাথমিক পরিষেবা, নির্দেশনা ও বিনিয়োগের সুযোগ সহজ করে তুলবে।