ভোলার লালমোহন উপজেলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ আ্যরন ব্রিজের ভাঙচুরের কারণে অর্ধহাজারের বেশি মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন। দেড় বছর ধরে বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেও এই সংকটের কোন সমাধান মেলেনি। ফলে স্থানীয়রা ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন।
সত্যতা যাচাই অনুযায়ী, প্রায় ৩০ বছর আগে কালমা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের তরুল্লা কেন্দ্র ও বিশ্বাসের পাড় এলাকার মাঝখানে নাজিরপুর খালের ওপরে নির্মাণ হয় ৩০ মিটার দীর্ঘ এই ব্রিজটি। মূলত সেটির সামনের অংশ দেড় বছর আগে ভেঙে যায়। এর ফলে চর ছকিনা, তরুল্লা কেন্দ্র, বিশ্বাসের পাড় ও চর টিটিয়া গ্রামের প্রায় ১০ হাজার বাসিন্দা প্রতিদিন জীবনঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছেন।
কালমা ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. শাহ আলম জানান, এই ব্রিজ দিয়ে অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, ভ্যান, টেম্পু ও নসিমন চালানো হয়। কয়েক বছর আগে এর মধ্যবর্তী অংশ ভেঙে বড় গর্ত তৈরি হয়। স্থানীয়রা গর্তে কাঠ দিয়ে বেঁধে রেখেছেন। ব্রিজের রেলিংও ক্ষতিগ্রস্ত। এক বছর আগে সামনের অংশ ভেঙে গেলে এখন পায়ে হেঁটে পারাপার করতে হচ্ছে। অনেকের হাতে-পায়ে চোট লেগেছে তা গুলিই।
বিশ্বাসের পাড় গ্রামের মো. ইসমাইল বিশ্বাস বলেন, ভোলা থেকে আমাদের গ্রামের মধ্যে যাওয়ার একমাত্র পথ এই ব্রিজটি। এটি দিয়ে চলাচল করতে করতে এখন পায়ে হেঁটে যেতে হয়, যা সত্যিই অনেক কষ্টের। বাজারে চাউল বা সবজি বহন করতে অনেক কষ্ট হয়।
অন্য এক বাসিন্দা মো. আব্দুল হক জানান, এই ভাঙ্গা ব্রিজের জন্য রোগীদের হাসপাতালে নেওয়াও বেশ কঠিন। কেউ আর অ্যাম্বুলেন্স চালাতে পারে না। অনেক সময় রোগীদের হাঁটপথে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ভেঙে যাওয়া ব্রিজ পার হতে হয়, যা ভয়ঙ্কর ঝুঁকিপূর্ণ।
স্কুল ছাত্রী সুমাইয়া আক্তার বলেন, প্রতিদিন ভাঙা ব্রিজ পার হয়ে স্কুলে যেতে হয়। ভয় পাওয়ার মতো হলেও ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হয় আমাদের।
এত বছর ধরে ভাঙা ব্রিজটি সংস্কার বা নতুন নির্মাণের জন্য কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি, যা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে বেশ ক্ষোভ রয়েছে। তারা দ্রুত এই ভাঙা ব্রিজটি সরিয়ে নতুন করে নির্মাণের দাবি জানান।
এই বিষয়ে লালমোহন উপজেলার এলজিইডির প্রকৌশলী রাজীব সাহা জানান, এই ব্রিজসহ আরও কিছু ব্রিজ নির্মাণের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে দ্রুত নতুন ব্রিজ নির্মাণ করে জনগণের দুর্ভোগ কমানো হবে।