অভিনেত্রী রুনা খান তার অভিনয়ের জন্য প্রশংসিত। তিনি পর্দায় চরিত্রটিকে জীবন্ত করে তুলতে কখনোই পিছপা হন না। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিভিন্ন ওয়েব প্ল্যাটফর্ম, ফ্যাশন শো ও অন্যান্য অনুষ্ঠানে তিনি সক্রিয় থাকছেন। তাঁর দক্ষ অভিনয় এবং স্পষ্ট ভাষায় কথা বলার কারণে দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন রুনা।
তবে, এটা লক্ষ্য করা যায় যে তিনি সম্প্রতি কিছু সমালোচনার মুখোমুখি হচ্ছেন। এক সাক্ষাৎকারে রুনা জানান, তিনি তাঁর নৈতিক মূল্যবোধের কোন আপোষ করেননি। নিজের পেশাগত জীবনে তিনি বললেন, ‘২০০৫ সাল থেকে ২০২৫, অর্থাৎ বিশ বছর ধরে আমি একজন পেশাদার মডেল ও অভিনেত্রী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছি। এ সময়ে আমি শুধুমাত্র ভালো লাগা প্রস্তাবিত কাজগুলোই করেছি। অন্যদিকে, বিগত বিশ বছরে আমার অধিকাংশ নারী সহকর্মীর ক্যারিয়ার গড়ে উঠেছে ব্যক্তিগত বিনিময়ের মাধ্যমে—যা পরিচালকদের সঙ্গে প্রেম, বিয়ে বা পরকীয়ার সম্পর্কের মাধ্যমে। উত্তমভাবে যদি সম্পর্ক বজায় থাকে, তাহলে তাদের কাজটিও টিকে থাকে। তবে সম্পর্ক শেষ হলে, সেই সম্পর্কের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অভিনেত্রী বা অভিনেতার আর অঙ্গীকার থাকে না।
রুনা বলেন, এইসব অসততার চর্চা করে কিছু কিছু শিল্পী বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, লম্বা হাতোর ব্লাউজ বা গাড়ো পোশাক পরা মানে শালীনতা। কিন্তু তাদের স্বপ্রতিষ্ঠ জীবনে তো শালীনতার দেখা পাওয়া যায় না। জীবন-যৌবন দিয়ে তারা পরিচালকের প্রেমিকা হয়েও সফলতার শীর্ষে উঠতে পারেননি। আর আমি যেকোনো ধরনের সম্পর্ক বা পরিশ্রমের মাধ্যমে সফল হয়েছি। এর জন্য আমাকে অনেক খুইয়েও যেতে হয়েছে। তবুও কিছু মানুষ আমার পোশাক নিয়ে অশালীনতার অভিযোগ তোলে।
পোশাকের ব্যাপারে রুনার স্পষ্ট ভাবনা, ‘পোশাকের অশালীনতা কি আসলেই পোশাকের মধ্যে নিহিত? কাজের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য। বিশেষ করে আমাদের নাটকের শিল্পীরা কীভাবে জীবনে অশালীন কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হন, অথচ শালীনতা প্রতিষ্ঠার জন্য পর্দায় শরীরঢাকা পোশাক পরে থাকেন, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। পোশাকের শালীনতা বা অশালীনতা তার প্রকারভেদ নয়। বোরকা যেমন একটি ধর্মীয় ও সামাজিক পোশাক, তেমনি সুইমস্যুটও একটি পোশাক। যার যা পছন্দ, তা পরলে কি ভুল? সমাজে এর অনুমোদন নেই বললেই চলে, কিন্তু ব্যক্তিগত জীবন এবং কাজের ক্ষেত্রে যৌক্তিকতা বিবেচনা করাটা জরুরি।’
তিনি আরও জানান, ‘স্কিন দেখানোর বিষয়টা নতুন নয়। শাবানা আপাকে দেখুন, তাঁকে ক্লিভেজ দেখিয়ে নাচ করতে দেখা গেছে। মৌসুমী, শাবনূর—তারা সকলেই পর্দায় শরীর দেখাতে কম যায় না। তাহলে, ২০-২৫ বছর বয়সে যা শোভন, আমি ৪০ বছর বয়সেও কি সেটাই দেখাতে পারব না? তাহলে কি শুধু আমার বয়সের জন্যই এই নিয়মের পরিবর্তন? এইসব দর্শন তৈরি করছে তারাই, যারা ব্যক্তিগত জীবনে অশালীনতা চর্চা করেন, কিন্তু পর্দায় শালীনতার বুলি আওড়ান।’