১১:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষঃ
নবীনগরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হামলা-গুলিবর্ষণে নিহত ১, আহত ৩ নোয়াখালীতে গ্রাম আদালত বিষয়ক দ্বিতীয় ব্যাচের প্রশিক্ষণ শুরু জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, জাতীয় নির্বাচনের পরে তাবলিগের বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে সরকার আশাবাদী সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে, ইসি আনোয়ারের দাবি সমাজ-রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে বিএনপির কোনো নেতাকর্মী জড়িত নয়: রুহুল কবির রিজভী সারাদেশে ডিম ও মুরগি উৎপাদন বন্ধের ঘোষণা ফিলিস্তিনি বন্দিকে নির্যাতনের ভিডিও ফাঁস, শীর্ষ ইসরাইলি জেনারেলের পদত্যাগ ভৈরবে মেঘনা নদী থেকে ভারতীয় ৬০ বস্তা ফুসকা ও ব্লেড সহ ৪ জন আটক কুলাউড়া সীমান্তে ১৩ ভারতীয় গরু আটক বিজিবির সীমান্তে আরাকান আর্মির পুতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে নিহত নায়েক আক্তার হোসেনের দাফন সম্পন্ন

চীনের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতিতে সরে গেল বিদ্রোহী মিয়ানমার শহর দুটি

মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলে কয়েক মাস ধরে চলমান তীব্র সংঘর্ষ পরিস্থিতি শান্ত করতে দেশটির জান্তা সরকার ও বিদ্রোহী গোষ্ঠী তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। এই চুক্তির আওতায় তারা দুটো গুরুত্বপূর্ণ শহর থেকে নিজেদের সদস্যরা প্রত্যাহার করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে।

গত মঙ্গলবার টিএনএলএ জানিয়েছে, চীনের মধ্যস্থতায় তারা কুনমিংয়ে কয়েক দিন ধরে চলা আলোচনা শেষে এই চুক্তিতে পৌঁছেছে। উল্লেখ্য, কুনমিং মিয়ানমারের সীমান্ত থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার (২৪৮ মাইল) দূরে অবস্থিত।

চুক্তির অংশ হিসেবে, তারা উত্তর মিয়ানমারের মান্দালয়ের মোগক শহর, যা রুবি খনির জন্য সুপরিচিত, এবং শান রাজ্যের উত্তরাঞ্চলীয় মোমেইক শহর থেকে সরে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে। তবে তারা এখনও সরে যাওয়ার নির্দিষ্ট সময়সীমা প্রকাশ করেনি।

চুক্তির শর্তে, আগামী বুধবার থেকে উভয় পক্ষকে অগ্রসর হওয়া ও অ্যাকশনে বাধা দেওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। টিএনএলএ জানিয়েছে, জান্তা বাহিনী বিমান হামলা বন্ধ করতে সম্মত হয়েছে, তবে এ বিষয়ে তাদের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

টিএনএলএ মূলত মিয়ানমারের থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের অংশ। এই জোটের অন্য সদস্যরা হলো মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মি ও আরাকান আর্মি। এই গোষ্ঠীগুলো দীর্ঘদিন ধরে আপোষহীনভাবে বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসন দাবি করে আসছে। উল্লেখ্য, ২০২১ সালে নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরানোর পর থেকে তারা গণতান্ত্রিক প্রতিরোধ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এই জোট উত্তর-উত্তরপূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা দখল করে রেখেছে। টিএনএলএ একাই ১২টি শহর দখল করে নিয়েছে। তবে, চীনের মধ্যস্থতায় চুক্তির কারণে তাদের অগ্রগতি ধীর হয়ে আসে, ফলে সেনাবাহিনী বড় শহরগুলো পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে।

চীন দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধের কেন্দ্রীয় মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করছে। তাদের এখানকার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থের কারণে তারা এই পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। চলতি বছর চীন সরকার আরও স্পষ্টভাবে মিয়ানমারের सैन্যশক্তিকে সমর্থন দিয়ে আসছে।

আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে মিয়ানমারে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু অনেক নির্বাচনী এলাকায় এখনও বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণ থাকায় ভোটগ্রহণের ওপর শঙ্কা দেখা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, এই নির্বাচন হয়তো শুধুমাত্র সামরিক সরকারের বৈধতা প্রতিষ্ঠার কৌশল।

ট্যাগ :
সর্বাধিক পঠিত

চীনের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতিতে সরে গেল বিদ্রোহী মিয়ানমার শহর দুটি

প্রকাশিতঃ ১১:৫৯:১৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১ নভেম্বর ২০২৫

মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলে কয়েক মাস ধরে চলমান তীব্র সংঘর্ষ পরিস্থিতি শান্ত করতে দেশটির জান্তা সরকার ও বিদ্রোহী গোষ্ঠী তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। এই চুক্তির আওতায় তারা দুটো গুরুত্বপূর্ণ শহর থেকে নিজেদের সদস্যরা প্রত্যাহার করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে।

গত মঙ্গলবার টিএনএলএ জানিয়েছে, চীনের মধ্যস্থতায় তারা কুনমিংয়ে কয়েক দিন ধরে চলা আলোচনা শেষে এই চুক্তিতে পৌঁছেছে। উল্লেখ্য, কুনমিং মিয়ানমারের সীমান্ত থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার (২৪৮ মাইল) দূরে অবস্থিত।

চুক্তির অংশ হিসেবে, তারা উত্তর মিয়ানমারের মান্দালয়ের মোগক শহর, যা রুবি খনির জন্য সুপরিচিত, এবং শান রাজ্যের উত্তরাঞ্চলীয় মোমেইক শহর থেকে সরে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে। তবে তারা এখনও সরে যাওয়ার নির্দিষ্ট সময়সীমা প্রকাশ করেনি।

চুক্তির শর্তে, আগামী বুধবার থেকে উভয় পক্ষকে অগ্রসর হওয়া ও অ্যাকশনে বাধা দেওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। টিএনএলএ জানিয়েছে, জান্তা বাহিনী বিমান হামলা বন্ধ করতে সম্মত হয়েছে, তবে এ বিষয়ে তাদের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

টিএনএলএ মূলত মিয়ানমারের থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের অংশ। এই জোটের অন্য সদস্যরা হলো মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মি ও আরাকান আর্মি। এই গোষ্ঠীগুলো দীর্ঘদিন ধরে আপোষহীনভাবে বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসন দাবি করে আসছে। উল্লেখ্য, ২০২১ সালে নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরানোর পর থেকে তারা গণতান্ত্রিক প্রতিরোধ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এই জোট উত্তর-উত্তরপূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা দখল করে রেখেছে। টিএনএলএ একাই ১২টি শহর দখল করে নিয়েছে। তবে, চীনের মধ্যস্থতায় চুক্তির কারণে তাদের অগ্রগতি ধীর হয়ে আসে, ফলে সেনাবাহিনী বড় শহরগুলো পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে।

চীন দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধের কেন্দ্রীয় মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করছে। তাদের এখানকার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থের কারণে তারা এই পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। চলতি বছর চীন সরকার আরও স্পষ্টভাবে মিয়ানমারের सैन্যশক্তিকে সমর্থন দিয়ে আসছে।

আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে মিয়ানমারে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু অনেক নির্বাচনী এলাকায় এখনও বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণ থাকায় ভোটগ্রহণের ওপর শঙ্কা দেখা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, এই নির্বাচন হয়তো শুধুমাত্র সামরিক সরকারের বৈধতা প্রতিষ্ঠার কৌশল।