০৬:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষঃ
অন্তর্বর্তী সরকার গঠনে লিভ টু আপিলের শুনানি আজ সরকার শিক্ষকদের বিপক্ষে কঠোর ব্যবস্থা নেবে সরকারের পক্ষ থেকে বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য সহনীয় করার জন্য প্রার্থনা আহ্বান ঢাকাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় ফের ভূমিকম্প, আতঙ্কে নগরবাসী খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় চীনা বিশেষজ্ঞদের এভারকেয়ারে আগমন খালেদা জিয়াকে ভিভিআইপি ঘোষণা সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত বাংলাদেশে কারো জন্য নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা গভীর সমুদ্রে অকুতোভয় কাণ্ডারী হয়ে উঠছে ক্যাডেটরা: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা গুমের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে নতুন আইন খালেদা জিয়াকে আনুষ্ঠানিক নিরাপত্তা দিল এসএসএফ

ফ্যাসিস্ট চক্রের অগ্নিসন্ত্রাস ও নাশকতার ছক টেলিগ্রামে

টেলিগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপে পরিকল্পনা করে ঢাকায় অগ্নিসন্ত্রাস ও ককটেল বিস্ফোরণের মাধ্যমে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে চাচ্ছিল কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বাসে অগ্নিসংযোগসহ একাধিক নাশকতার ঘটনার সাথে তাদের সংযুক্ততা শনাক্তের পর র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। গত মঙ্গলবার র‍্যাব-র রমনা বিভাগের টিম চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এই বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার ডিসি মো. মাসুদ আলম বুধবার গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।

গত ৩০ অক্টোবর বিকেলে ধানমন্ডির ২৮ নম্বর সড়কে, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইনস্টিটিউটের গলির মুখে নিষিদ্ধ সংগঠনের ব্যানারে একটি প্রতিবাদ মিছিলের প্রস্তুতি চলছিল। তখন ধানমন্ডি থানা পুলিশ ওই স্থানেই দুজনকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন— হাজারীবাগ-ধানমন্ডি এলাকার পরিচিত যুবলীগ নেতা শওকত ওসমান বাবু ও মিলন খান। বাবু ধানমন্ডি ২২ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং মিলন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি।

পুলিশ জানায়, শওকত ওসমান বাবু দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসীর ওপর দমন-পীড়ন চালানোর অভিযোগে কুখ্যাত। ২০২৪ সালের জুলাইতে ছাত্র আন্দোলনের নাশকতায় যুক্ত থাকার পাশাপাশি তিনি সরকারের পতনের পর পালিয়ে মালয়েশিয়ায় চলে যান। তবে সম্প্রতি দেশে ফিরে আসে এবং নতুন করে নাশকতার পরিকল্পনা শুরু করে। তার মোবাইল থেকে বিভিন্ন ভিডিও, ককটেল বিস্ফোরণের ছবি, বাসে অগ্নিসংযোগের লাইভ ফুটেজসহ নাশকতার নির্দেশনা জব্দ করা হয়েছে।

এছাড়াও, ১৬ নভেম্বর বাবুর নির্দেশনায় আজারীবাগের বেড়িবাঁধ এলাকার বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।

গ্রেপ্তার অন্য আসামি মিলন খান নড়াইলের জয়নগর ইউনিয়নের বাসিন্দা এবং ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় নাশকতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছিলেন। তিনি ঢাকার দক্ষিণ যুবলীগের স্বপ্নপন কবির স্বপন ও যুগ্ম আহ্বায়ক সাব্বির শেখের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। মিলন বিভিন্ন জেলা থেকে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের আনিয়ে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় নাশকতা চালিয়ে যাচ্ছিলেন।

সাব্বির শেখ, যিনি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক, তিনি দলের কিছু গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও সংগঠনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীদের ডেকে এনে নাশকতায় সম্পৃক্ত করতেন। বিভিন্ন টেলিগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সক্রিয় ছিলেন, যেখানে বাসে অগ্নিসংযোগ, ককটেল বিস্ফোরণ, নাশকতার নির্দেশনা দিতেন ও পাঠাতেন। ২৮ নভেম্বর ধানমন্ডিতে একই সংগঠনের ব্যানারে মিছিলের প্রস্তুতি নেয়ার সময় তিনি পালিয়ে যান। পরে র‌্যাব ও পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে তাকে কামরাঙ্গীরচর এলাকার একটি টিনশেড বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে।

প্রাথমিক আর্জির মাধ্যমে পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মোবাইল ফোন বিশ্লেষণ করে বিভিন্ন সংযোগের তথ্য, নাশকতার পরিকল্পনা, ককটেলের ছবি, বিস্ফোরকের তথ্য, অর্থ লেনদেনের প্রমাণ এবং ঢাকার বিভিন্ন স্থানে বাসে অগ্নিসংযোগের ভিডিও উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে রাজধানীর রুপনগর, হাজারীবাগ, ধানমন্ডি এলাকায় অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় সরাসরি সম্পৃক্ততার তথ্য।

ট্যাগ :
সর্বাধিক পঠিত

ফ্যাসিস্ট চক্রের অগ্নিসন্ত্রাস ও নাশকতার ছক টেলিগ্রামে

প্রকাশিতঃ ১১:৫৩:১৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫

টেলিগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপে পরিকল্পনা করে ঢাকায় অগ্নিসন্ত্রাস ও ককটেল বিস্ফোরণের মাধ্যমে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে চাচ্ছিল কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বাসে অগ্নিসংযোগসহ একাধিক নাশকতার ঘটনার সাথে তাদের সংযুক্ততা শনাক্তের পর র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। গত মঙ্গলবার র‍্যাব-র রমনা বিভাগের টিম চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এই বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার ডিসি মো. মাসুদ আলম বুধবার গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।

গত ৩০ অক্টোবর বিকেলে ধানমন্ডির ২৮ নম্বর সড়কে, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইনস্টিটিউটের গলির মুখে নিষিদ্ধ সংগঠনের ব্যানারে একটি প্রতিবাদ মিছিলের প্রস্তুতি চলছিল। তখন ধানমন্ডি থানা পুলিশ ওই স্থানেই দুজনকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন— হাজারীবাগ-ধানমন্ডি এলাকার পরিচিত যুবলীগ নেতা শওকত ওসমান বাবু ও মিলন খান। বাবু ধানমন্ডি ২২ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং মিলন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি।

পুলিশ জানায়, শওকত ওসমান বাবু দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসীর ওপর দমন-পীড়ন চালানোর অভিযোগে কুখ্যাত। ২০২৪ সালের জুলাইতে ছাত্র আন্দোলনের নাশকতায় যুক্ত থাকার পাশাপাশি তিনি সরকারের পতনের পর পালিয়ে মালয়েশিয়ায় চলে যান। তবে সম্প্রতি দেশে ফিরে আসে এবং নতুন করে নাশকতার পরিকল্পনা শুরু করে। তার মোবাইল থেকে বিভিন্ন ভিডিও, ককটেল বিস্ফোরণের ছবি, বাসে অগ্নিসংযোগের লাইভ ফুটেজসহ নাশকতার নির্দেশনা জব্দ করা হয়েছে।

এছাড়াও, ১৬ নভেম্বর বাবুর নির্দেশনায় আজারীবাগের বেড়িবাঁধ এলাকার বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।

গ্রেপ্তার অন্য আসামি মিলন খান নড়াইলের জয়নগর ইউনিয়নের বাসিন্দা এবং ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় নাশকতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছিলেন। তিনি ঢাকার দক্ষিণ যুবলীগের স্বপ্নপন কবির স্বপন ও যুগ্ম আহ্বায়ক সাব্বির শেখের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। মিলন বিভিন্ন জেলা থেকে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের আনিয়ে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় নাশকতা চালিয়ে যাচ্ছিলেন।

সাব্বির শেখ, যিনি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক, তিনি দলের কিছু গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও সংগঠনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীদের ডেকে এনে নাশকতায় সম্পৃক্ত করতেন। বিভিন্ন টেলিগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সক্রিয় ছিলেন, যেখানে বাসে অগ্নিসংযোগ, ককটেল বিস্ফোরণ, নাশকতার নির্দেশনা দিতেন ও পাঠাতেন। ২৮ নভেম্বর ধানমন্ডিতে একই সংগঠনের ব্যানারে মিছিলের প্রস্তুতি নেয়ার সময় তিনি পালিয়ে যান। পরে র‌্যাব ও পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে তাকে কামরাঙ্গীরচর এলাকার একটি টিনশেড বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে।

প্রাথমিক আর্জির মাধ্যমে পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মোবাইল ফোন বিশ্লেষণ করে বিভিন্ন সংযোগের তথ্য, নাশকতার পরিকল্পনা, ককটেলের ছবি, বিস্ফোরকের তথ্য, অর্থ লেনদেনের প্রমাণ এবং ঢাকার বিভিন্ন স্থানে বাসে অগ্নিসংযোগের ভিডিও উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে রাজধানীর রুপনগর, হাজারীবাগ, ধানমন্ডি এলাকায় অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় সরাসরি সম্পৃক্ততার তথ্য।