তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষার্থীদের কাছে ‘রাজাকারের বাচ্চা’ এবং ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ বলে আখ্যায়িত করার কারণে সারাদেশের ছাত্রছাত্রীরা অপমানবোধ করেছিলেন বলে জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি গতকাল বুধবার, জুলাই গণআবেগের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় শেখ হাসিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলায় ৪৭তম সাক্ষী হিসেবে এই কথাগুলো বলেন। মামলার অন্য দুজন আসামির মধ্যে রয়েছেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এই মামলায় দোষ স্বীকার করে ‘অ্যাপ্রুভার’ হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছন। গতকাল বুধবার তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। এই মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ গতকাল তিনি আংশিক জবানবন্দি দেন। আজ বৃহস্পতিবার তার পুরো জবানবন্দি দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। জবানবন্দিতে নাহিদ ইসলাম বলেন, গত বছরের ১৪ জুলাই শেখ হাসিনা একটি সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলানকারী ছাত্রদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ এবং ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ বলে আখ্যায়িত করেন এবং কোটাপ্রথার পক্ষে অবস্থান নেন। এর মাধ্যমে মূলত এই বক্তব্যের স্বপক্ষে আন্দোলনকারীদের ওপর সংঘটিত হামলার বৈধতা প্রতিষ্ঠা করা হয়। কারণ, তারা দেখেছেন যে, সরকারের বিরুদ্ধে কোনো ন্যায্য আন্দোলন হলে তাদেরকে এইভাবে ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে আখ্যায়িত করে আন্দোলনের জো twნას নস্যাৎ করা হত। ছাত্রদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ এবং ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ আখ্যায়িত করার ফলে সারাদেশের ছাত্রছাত্রীরা অপমানবোধ করে। সেই রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসেন। নাহিদ ইসলাম আরও উল্লেখ করেন, গত বছরের ১৭ জুলাই জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ডিএফআই জানায় তারা তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করবে এবং সরকারের সঙ্গে সংলাপে বসবে। তিনি বলেন, এ জন্য শাহবাগ থানায় মামলা করা হয় এবং সারাদেশে এ ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়। তবুও, সব বাধা অতিক্রম করে আন্দোলন চালিয়ে যান তারা। তিনি জানান, একই রাতে ১৭ জুলাই তারা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ নামে এক ব্যাপক কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এর পরদিন, ১৮ জুলাই, সারা দেশের ছাত্র-জনতা রাস্তায় নেমে আসে। বিশেষত প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীরা ব্যাপক প্রতিরোধ গড়ে তোলে। আন্দোলনের নেতা এবং কর্মীরা জীবনহুমকির মুখে পড়েন এবং গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপন করেন। সে দিন সারাদেশে অনেক ছাত্র-জনতা আহত বা নিহত হন। রাতে দেশের সব ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। ১৯ জুলাই পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচার গুলি চালায়। এতে আরো অনেক ছাত্র-জনতা আহত বা নিহত হন। নাহিদ ইসলাম বলেন, তারা বুঝতে পারেন যে, সরকার ইলেকট্রনিক মিডিয়াকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছে। ফলে, তাদের আন্দোলন এবং হতাহতদের খবর মিডিয়ায় প্রচার হওয়ার সুযোগ থাকে না।
সর্বশেষঃ
শিক্ষার্থীরা ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ বলায় অপমানবোধ করেছিলেন
-
শ্রীমঙ্গল২৪ ডেস্ক
- প্রকাশিতঃ ১০:৪৭:১৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- 6
ট্যাগ :
সর্বাধিক পঠিত