জুলাই ও আগস্ট মাসে ছাত্র জনতার মহান গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ৪৭তম সাক্ষী হিসেবে আজ জবানবন্দি প্রদান করেছেন নাহিদ ইসলাম, যারা জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক ও ওই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী। তিনি অভিযোগ করেছেন, এই আন্দোলনের সময় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীরা মানবতা বিরোধী গুরুতর অপরাধে যুক্ত ছিলেন।
তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১, বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদার নেতৃত্বে, আজ নাহিদ ইসলামের জবানবন্দি গ্রহণ সম্পন্ন করেন। তিনি উল্লেখ করেন, গতকাল থেকে তিনি তাঁর জবানবন্দি শুরু করেছিলেন।
আসন্ন পরিস্থিতিতে আজ বিকেলে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে পলাতক রয়েছেন বলে অভিযোগ থাকা তাদের আইনজীবী আমির হোসেনের জেরার মুখে পড়বেন বলে জানানো হয়েছে।
অপরদিকে, প্রক্রিয়াক্রমে, প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি চালাচ্ছেন প্রধান প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, সঙ্গে রয়েছেন অন্যান্য প্রসিকিউটরগণ। এই মামলায় পলাতক থাকা শেখ হাসিনা ও কামালসহ অন্য আসামিদের পক্ষেও সরকার ন্য নিয়োজিত আইনজীবী রয়েছেন।
অভিযুক্ত এই মামলায় গ্রেফতার হয়ে রাজসাক্ষী হিসেবে স্বীকার করেছিলেন সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। তিনি মামলায় স্বীকারোক্তি দেন এবং ৩৬তম সাক্ষী হিসেবে তার সাক্ষ্য দেওয়া হয়। এরপর, মামলার অপর একদল সাক্ষী হিসেবে, জানা যায়, তার স্বাক্ষ্য দেওয়ার দিনই তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে নিজেকে উল্লেখ করেন।
এটি উল্লেখ্য, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে আরও দুটি মামলার বিচার চলমান রয়েছে। একটি মামলায় তাকে গুম-খুনের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে, যা তার আমলকালের ১৫ বছর ধরে ক্ষমতা থাকার সময়ের ঘটনা। অন্য মামলাটি ছিল রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরের হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হামলা ও হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে।
২০২২ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে, ছাত্র-জনতার বৃহৎ অভ্যুত্থান দমন করতে আওয়ামী লীগ সরকার, দলের নেতাকর্মী, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মাধ্যমে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে বলে বিভিন্ন বিবরণে অভিযোগ ওঠে। এই অপরাধের বিচার কার্যক্রম এখন দুইটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান রয়েছে।